১৮ কোটি বই ছাপা বাকি, এবারও উৎসব ফিকে হওয়ার ‘শঙ্কা’
বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা বাস্তবায়নে কয়েক বছর ধরেই ব্যর্থ হচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষেও মাধ্যমিকের চার শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে জানুয়ারিতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। ফলে বছরের প্রথমদিন ১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া ‘বই উৎসব’ ফিকে হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এবং বই ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে ফিরে যেতে হতে পারে।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সূত্র বলছে, এবার প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় ৩০ কোটি বই ছাপাতে হবে। সরকার ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বই ছাপা শেষ করার রূপরেখা ও সেগুলো দেশের উপজেলা শিক্ষা অফিসে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। অথচ ২০ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র সাড়ে ১১ কোটির মতো বই ছাপা হয়েছে, যার অধিকাংশই প্রাথমিকের। বাকি ১৮ কোটিরও বেশি বই ছাপানো এখনো বাকি। এরমধ্যে রয়েছে ষষ্ঠ থেকে নবম— এ চার শ্রেণির বই।
বই ছাপানোয় পিছিয়ে থাকা পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা যে রোডম্যাপ করেছিলেন, তা মেনে কাজ করেছেন। কিন্তু ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের দরপত্র এক দফা বাতিল করায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে ছাপাখানা মালিকদের সঙ্গে চুক্তিসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে। এতে বই ছাপায় অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে এনসিটিবি।
পাঠ্যবই ছাপা ও বিতরণে প্রতিবছর এনসিটিবির এমন ‘দীর্ঘসূত্রতা’ ও ‘অনিশ্চয়তায়’ ক্ষোভ জানিয়েছেন অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, দেরিতে বই হাতে পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসও শুরু হচ্ছে দেরিতে। অথচ পরীক্ষাগুলো যথাসময়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে শিখন ঘাটতি নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে উঠে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বই ছাপা-বিতরণ এবং শিক্ষাপঞ্জি তৈরির ক্ষেত্রে সমন্বয় করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- বিনামূল্যের পাঠ্যবই