ড. মো. হাদিউজ্জামান, যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক। দায়িত্ব পালন করেছেন বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবেও। ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে পড়িয়েছেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টাতে। সম্প্রতি মেট্রোরেল দুর্ঘটনা, ফ্লাইওভার ও এক্সপ্রেসওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ, সড়ক নেটওয়ার্ক, সড়ক নির্মাণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পে প্রকৌশলগত ভুল ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, সড়ক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তায়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দিদারুল হক
সম্প্রতি মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড দুর্ঘটনায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন। এর আগেও একই জায়গায় আরো একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল, যদিও তখন কেউ হতাহত হননি। এ পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রোরেল পরিচলনায় ও পথচারীর দৈনন্দিন জীবনে কতটুকু নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে?
মেট্রোরেল নির্মাণের ক্ষেত্রে আমরা অনেক ব্যয় করেছি। যারা বড় বড় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ছিলেন তাদের পেছনেও বড় ব্যয় হয়েছে। প্রথমত, নকশাগত জটিলতার বিষয়টি এখন অনেকটাই প্রমাণিত। মেট্রোরেলের বাঁকের মধ্যেই বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের একটু নড়েচড়ে বসা উচিত। শুধু ফার্মগেটের বাঁক নয়, মূলত মেট্রোরেলে ‘এস শেপ’র দুই-তিনটা কার্ভ আছে। এখন সবগুলোতেই ঝুঁকি তৈরি করছে। ইন্টারন্যাশনাল বা গ্লোবাল কমপ্লায়েন্সে মেট্রোর একটি সেফটি অডিট হওয়ার কথা ছিল, সেটি হয়নি। এ সেফটি অডিটটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু মেট্রো পরিচালনা নয়, যেহেতু মেট্রোর করিডোরটি সড়কের অ্যালাইনমেন্ট অনুসরণ করে বানানো হয়েছে, সেক্ষেত্রে ওপরে ও নিচে দুই ক্ষেত্রেই ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। আমার জানা মতে, বিশ্বে তিন-চারটি প্রতিষ্ঠানের সেফটি অডিট করার সক্ষমতা আছে। সেফটি অডিটের বিষয়ে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের দ্রুত উদ্যোগ নেয়া উচিত। মেট্রোরেলের পুরো করিডোরের সেফটি অডিট করতে হবে। যেহেতু কার্ভে বিয়ারিং প্যাড বারবার পড়ে যাচ্ছে, সেহেতু নকশা অনুযায়ী যেখানে বিয়ারিং প্যাড থাকার কথা, সেখানে ধরে রাখার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যান্য জায়গার বিয়ারিং প্যাডগুলো যেখানে থাকার কথা সেখানে আছে কিনা এবং গুণগতমান ঠিক আছে কিনা সেটিও একটি নিরীক্ষা (ইন্সপেকশন) হওয়া উচিত। কারণ বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিচের সড়কে ঝুঁকি তো আছেই, একই সঙ্গে যদি দুইটা-তিনটা বিয়ারিং প্যাড পড়ে যায় তাহলে মেট্রোরেল পরিচালনাও একটি বিশাল ঝুঁকিতে পড়বে।