ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গঠনে ইসলামের নির্দেশনা

যুগান্তর ডা. মো. মাহতাব হোসাইন মাজেদ প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৭

প্রতিবছর ১৬ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব খাদ্য দিবস। এর উদ্দেশ্য বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অপুষ্টি ও খাদ্য বৈষম্য দূর করা, যাতে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাদ্য পেতে পারে। কিন্তু আজও পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত। কেউ খাবার অপচয় করছে, আবার কেউ না খেয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। অথচ ইসলাম দেড় হাজার বছর আগে মানবজাতিকে শিখিয়েছিল খাদ্যের ন্যায় বণ্টন, সংযম, কৃতজ্ঞতা ও মানবসেবার চূড়ান্ত শিক্ষা।


ইসলাম খাদ্যকে শুধু দেহের পুষ্টির উপাদান হিসাবে নয়, বরং আল্লাহর এক অমূল্য নিয়ামত হিসাবে দেখেছে। আল্লাহতায়ালা বলেন হে মানবজাতি! তোমরা যা হালাল ও পবিত্র, তা খাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না; নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৬৮)। এ আয়াত আমাদের শেখায়, খাদ্যগ্রহণ শুধু শরীরের চাহিদা পূরণের বিষয় নয়; বরং এটি ইমান ও আত্মিক শুদ্ধতার সঙ্গেও সম্পর্কিত। হালাল ও তয়্যিব খাদ্যই একজন মুমিনের দেহ ও আত্মাকে পবিত্র রাখে।


বর্তমান বিশ্বে খাদ্য সংকটের অন্যতম কারণ হলো অপচয়। অনেকেই খাবার ফেলে দেয়, অথচ আশপাশে কেউ ক্ষুধার্ত। ইসলাম এ অপচয় কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা খাও ও পান করো, কিন্তু অপচয় করো না; নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না। (সূরা আ’রাফ, আয়াত ৩১)। খাদ্য নষ্ট করা মানে আল্লাহর নিয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন তোমাদের কারও হাত থেকে কোনো খাদ্য পড়লে তা তুলে পরিষ্কার করে খাবে, শয়তানের জন্য তা ছেড়ে দেবে না। (সহিহ মুসলিম : ২০৩৪)। অতএব, ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে খাবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও দায়িত্ববোধই প্রকৃত ইমানের প্রতিফলন।


ইসলাম চায় সমাজে কেউ ক্ষুধার্ত না থাকুক। তাই কুরআন দরিদ্রের প্রতি সহানুভূতি ও সাহায্যের নির্দেশ দিয়েছে। তাদের সম্পদে রয়েছে নির্ধারিত হক প্রার্থনাকারী ও বঞ্চিতের জন্য। (সূরা মাআরিজ : ২৪-২৫)। এ নীতির ওপর ভিত্তি করেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছে জাকাত, সদকা, ফিতরা, কুরবানি ও ওয়াকফ ব্যবস্থা। এগুলোর উদ্দেশ্য হলো সমাজের ধনসম্পদ ও খাদ্যের সুষম বণ্টন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সে মুমিন নয়, যে নিজে পেট ভরে খায় অথচ তার পাশের প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে। (সহিহ বুখারি : ১১২৭- (সহিহ মুসলিম : ৪৬)। এ হাদিসের শিক্ষা হলো মানবতা ও ইমান একে অপরের পরিপূরক। প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থেকে গেলে আমাদের ইমান পূর্ণ হয় না।


ইসলাম মানুষকে কৃষিকাজ, চাষাবাদ ও উৎপাদনে উৎসাহিত করেছে। খাদ্য উৎপাদনকে ইসলাম ইবাদতের মর্যাদায় উন্নীত করেছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো গাছ রোপণ করে বা ফসল ফলায়, এরপর মানুষ, পশু বা পাখি তা থেকে উপকৃত হয়-তাহলে তা তার জন্য সদকা হিসাবে গণ্য হয়- (সহিহ মুসলিম : ১৫৫২)। এ হাদিস আমাদের জানায়-খাদ্য উৎপাদন, গাছ লাগানো বা কৃষিকাজ শুধু জীবিকা নয়, বরং মানবসেবার এক মহান ইবাদত।


ইসলাম খাদ্যের হালাল উপার্জনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না-(সূরা বাকারা : ১৮৮)।


রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা পুষ্ট হয়েছে, তার জান্নাতে প্রবেশ হারাম-(মুসনাদে আহমাদ : ২৩৮৪)। অতএব, খাদ্য হতে হবে হালাল, উপার্জন হতে হবে সৎ ও পরিশ্রমের। হারাম উপার্জনের খাদ্য আত্মাকে কলুষিত করে এবং সমাজে অশান্তি ছড়ায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও