শিয়ালবাড়ির অগ্নিকাণ্ড : কাঠামোগত হত্যার আরেকটি বড় দৃষ্টান্ত

প্রথম আলো সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৩

ঢাকার মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনা রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর গাফিলতি, মালিকদের দায়হীনতা মিলিয়ে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের আরেকটি দৃষ্টান্ত হলো।


সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। লাশগুলো এতটাই পুড়ে গেছে যে সেগুলো দেখে বোঝার উপায় নেই, কোনটা কার লাশ। আহত তিনজন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক ধারণা, রাসায়নিকের গুদামের আগুনের কারণে যে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয়, তাতে অনেকে অচেতন হয়ে পড়েন। এ ছাড়া পোশাক কারখানাটির ছাদের দরজা তালাবদ্ধ থাকায় শ্রমিকেরা ভেতরে আটকা পড়েন। এত প্রাণহানির মূল কারণ এ দুটিই। এটা বললে অত্যুক্তি হবে না যে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সব ধরনের বন্দোবস্তই সেখানে আগে থেকেই  ছিল। শ্রমিকের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশের প্রশ্নটি আমাদের নীতিনির্ধারকদের কাছে যে কতটা গৌণ ও গুরুত্বহীন, সেই বিষয়টিই শিয়ালবাড়ির অগ্নিকাণ্ড চোখে আঙুল দিয়ে আবারও দেখিয়ে দিল।


বরাবরের মতো এবারও অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির পরই জানা গেল রাসায়নিক গুদাম ও পোশাক কারখানা কোনোটারই অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না। কারখানা ভবনটির কোনো জরুরি বহির্গমন পথ ছিল না। অনেককে ভবনটি থেকে জানালা ভেঙে বের হতে হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, অগ্নিনিরাপত্তা সনদ কিংবা বহির্গমন সিঁড়ি ছাড়া সেখানে কারখানা করার অনুমোদন কীভাবে মিলল? এর থেকেও বড় প্রশ্নটি হলো, একটি আবাসিক এলাকায় পোশাক কারখানার পাশে একটি রাসায়নিক গুদাম কীভাবে থাকতে পারে? ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, রাসায়নিক গুদামটি অবৈধ, তিনবার নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। নোটিশ দেওয়া মানেই কি ব্যবস্থা নেওয়া?


আমরা মনে করি, কারখানা ও গুদামের মালিক, কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশনসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ ও সংস্থার কোনোটাই মিরপুরের অগ্নিকাণ্ডের দায় এড়াতে পারে না। ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলী ও ২০১৯ সালে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে আবাসিক এলাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরানোর সুস্পষ্ট সুপারিশ ছিল। কিন্তু রাসায়নিক দ্রব্য পরিবহন ও গুদামজাতকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যুগোপযোগী আইন এবং সমন্বিত কোনো বিধিমালা নেই। বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ একাধিক সংস্থা দেখভালের দায়িত্বে থাকায় শেষ পর্যন্ত সমন্বিত কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্নীতিও এখানে বড় বাধা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও