
ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক মারা গেছেন গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে। তাঁর এই সাক্ষাৎকারটি প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয় ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে। তাঁর সাক্ষাৎকার নেন ইসমাইল সাদী। তাঁর স্মৃতিতে সাক্ষাৎকারটি আবার পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।
প্রথম আলো : আপনি ভাষা আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের একজন। ভাষা আন্দোলন নিয়ে বিস্তর গবেষণাও করেছেন। বাঙালির অন্যতম বৃহত্তর এই আন্দোলন নিয়ে গবেষণাকাজ শুরু করেছিলেন কোন সময় থেকে?
আহমদ রফিক: গবেষণাটা শুরু করেছি একটু দেরিতেই। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের ভূমিকা নিয়ে একটি ছোট বই লিখেছিলাম। বইটির নাম একুশের ইতিহাস আমাদের ইতিহাস। এরপর আমার মনে হলো ভাষা আন্দোলন নিয়ে অনেক তথ্য অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। প্রথমে গবেষণা শুরু করেছিলাম শহীদদের সংখ্যা নিয়ে; এরপর কারা কারা শহীদ হলেন, তাঁদের নিয়ে। একদিন তৎকালীন দৈনিক বাংলার স্নেহভাজন সাংবাদিক নূরে আলম আমাকে নিয়ে যায় আজিমপুর গোরস্থানের পশ্চিম দিককার নতুন পল্টন লাইন এলাকায়। সেখানে সুরুজ্জামান নামের একজন কবরখোদক এবং মৌলভি গফুর নামের একজনের সঙ্গে দেখা হয়, যিনি মরদেহ দাফন করতেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, একুশে ফেব্রুয়ারি রাতে একজন কিশোরসহ কমপক্ষে তিনজনের মরদেহ দাফন করা হয়েছিল। দুজন কর্মকর্তা হুকুম দিচ্ছিলেন, জলদি দাফন করো, জলদি দাফন করো। এটা জানার পর ভাবলাম, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের বিভিন্ন দিক অজানা রয়ে গেছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করা দরকার। এর বাইরে একুশের আন্দোলন কীভাবে গ্রামপর্যায়ে বিস্তার লাভ করলাম, সেগুলোর খোঁজখবরও করা দরকার। এভাবেই আমার গবেষণা কার্যক্রম শুরু।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ভাষা সৈনিক