
নির্বাচনের বিকল্প রোগ না ডাকার বার্তা
নির্বাচনের বিকল্প ভাবনার কথাটি আকস্মিক বা মনগড়া? কেন এলো ভাবনাটি? কেনই বা সতর্ক করলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস? তার এ সতর্কতাটি খুব জরুরি ছিল। দেশের প্রধান দল বিএনপি যতো দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের দাবি করে আসছে সেই শুরু থেকেই। জামায়াতসহ ডান-বামের আরো কয়েকটি দল থেকেও কখনো যৌক্তিক সময়, কখনো গ্রহণযোগ্য সময়ের কথা বলেছে। একটা পর্যায়ে কিছু গুজব-গুঞ্জন ব্যাপকতা পায়। সেইসঙ্গে সংস্কার ছাড়া কীসের নির্বাচন, বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন নয়- ধরনের কথা ছুঁড়তে দেখা যায়। নির্বাচনের দরকার নেই, এ সরকারই ক্ষমতায় থাক-এ ধাঁচের কথাসহ কিছু ন্যারেটিভ ছড়ানো হতে থাকে।
উপদেষ্টাদের কয়েকজন এসব কথায় প্রতিক্রিয়া দিলেও প্রধান উপদেষ্টার কোনো মন্তব্য বা ক্রিয়া-বিক্রিয়া ছিল না। বেশ প্রাসঙ্গিক এবং মোক্ষম সময়ে এসে কিছুটা বিস্ফোরণের মতো প্রতিক্রিয়া দিলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন নির্বাচনের বিকল্প নিয়ে ভাবলে তা হবে জাতির জন্য গভীর বিপজ্জনক। তাও বলেছেন, সময় ও জায়গা মতো। রবিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ব্রিফিংয়ের মাধ্যমেও জানানো হয় তার এ মন্তব্য ও উপলব্ধির কথা। প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যে সময় ঘোষণা করেছেন, নির্বাচন সেই সময়ের মধ্যে হবে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সব রাজনৈতিক দলকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে আবারও তার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছেন। নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
নির্বাচনের বিকল্প গেল আমলেও খোঁজা হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারই বার বার দরকার, গণতন্ত্র বা নির্বাচনের চেয়ে উন্নয়ন জরুরি-এমন বার্তার মাধ্যমে টোকা দেয়া হয়েছে। এতো টাকা খরচ করে নির্বাচনের কী দরকার? ক্ষমতায় তো শেখ হাসিনাই থাকবেন- এমন হাইপ তোলার চেষ্টাও চলে। নমুনা বুঝে কেউ কেউ কোরিয়া মডেল নির্বাচনী আয়োজনের মন্ত্রও দিতে থাকেন। কিন্তু, গেলানো যায়নি। তাই নির্বাচনের বিকল্প হিসেবে দিনের ভোট রাতে, বিনাভোটে ১৫৪ জনকে বিজয়ী করে দেওয়া, ডামি-আমি তামাশা করা হয়। যা প্রকারান্তরে দেশকে মহাসংকটে ফেলে। শেখ হাসিনার নির্মম পতনও নিশ্চিত হয়।