You have reached your daily news limit

Please log in to continue


সরেজমিন বামনশিকড় ও অনাহারের ময়নাতদন্ত

মিনারুল ও তার স্ত্রী, পুত্র-কন্যার নিথর দেহের পাশেই ছিল ভুল বানানে আঁকাবাঁকা অক্ষরে লেখা একখানা জবানবন্দি। ভুল বানান, আঁকাবাঁকা হাতের লেখা ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর মর্মন্তুদ ঘটনাটিকে একটুও ম্লান করতে পারেনি। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, যদিও অনেক ঘটন-অঘটনের এই দেশে কোনো কিছু ভুলতে খুব বেশি সময় লাগে না আমাদের। এই সেদিন, গেল ১৫ অগাস্ট রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামনশিকড় গ্রামের এক গরিব কৃষক পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা কৃষিমজুর মিনারুল ইসলাম (৩৫), তার স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮) এবং তাদের ছেলে মাহিন (১৩) ও কন্যা মিথিলা (২)।

কৃষিমজুর মিনারুল নিজের হাতে জীবন শেষ করলেন। আত্মহত্যা করার আগে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও হত্যা করে গেলেন। এটি কি শুধু একটি পরিবারের নিঃশেষ হওয়া, নাকি কাঠামোগত হত্যা, যা আমাদের সমাজের ন্যায্যতা এবং নিরাপত্তার প্রশ্নকে সামনে এনে দাঁড় করাচ্ছে।

পুলিশ মিনারুলের নিজের হাতে লিখে রেখে যাওয়া জবানবন্দি চিরকুটটি সংগ্রহ করেছে এবং সংবাদমাধ্যমে সেই জবানবন্দি প্রকাশিত হয়েছে। মিনারুল লিখেছেন তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করেছেন। সংবাদমাধ্যম, স্থানীয় সরকার, পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ধারণা অভাব ও ঋণের কারণেই স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন মিনারুল। তিনি নিজেও লিখে গেছেন, সেই কথা–‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’।

ক্ষুধার কারণে আত্মহত্যার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এই এক বছরের মধ্যে এমন আরও কয়েকটি ঘটনার কথা জানতে পেরেছি আমরা। আমাদের অজানাও রয়ে যাচ্ছে কিছু। রাষ্ট্রসংষ্কার প্রশ্নে সরগরম কোনো রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন কিংবা অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো প্রতিনিধি এই সব পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর দায় বা দরদ অনুভব করেনি। চলতি লেখাটি এই বামনশিকড়ের মিনারুলদের নিদারুণ ঘটনার একটি সরেজমিন প্রতিবেদন। মিনারুলের পরিবার-স্বজন, গ্রামপ্রতিবেশী এবং মাহিনের স্কুলের শিক্ষক-সহপাঠীদের সঙ্গে আলাপচারিতার পাশাপাশি কৃষি ও খাদ্যউৎপাদনব্যবস্থা ঘিরে এলাকায় ঘটমান নানা প্রশ্নহীন ঘটনা কিংবা বৈশ্বিক নয়াউদারবাদী বাহাদুরি চলতি বিবরণের গতিপথ তৈরি করেছে।

কাদা মাখা স্যান্ডেল ও মিথিলার চুলের ব্যান্ড

রাজশাহী আমচত্বর থেকে খড়খড়ির দিকে যাচ্ছি। চত্বরে এক বিতিকিচ্ছিরি ভাস্কর্য যেন আকাশ গুলিয়ে দিচ্ছিল। ছিরিছাঁদহীন আম। অথচ খুব কাছেই দুনিয়া কাঁপানো শিল্পী সুশান্ত ও মৃত্যুঞ্জয় পালরা ছিলেন। কিন্তু ওই যে পাতানো বাইনারি চাপানো আছে। মৃত্যুঞ্জয় পালেরা শিল্প নন, ‘হস্তশিল্পী’। যাবতীয় আর্ট-কালচার করেন শহুরে শিক্ষিত এলিট মহাজনেরা। এই ঔপনিবেশিকতা আর বর্ণবাদ কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় আরও ভয়াবহভাবে আছে। কৃষক হলো নাদান চাষাভুষা, আর দশ পাতা বই পড়ে কেউ কৃষি ও খাদ্যবিজ্ঞানী হয়ে যান। খাদ্যব্যবস্থার কোনো সিদ্ধান্তগ্রহণে কৃষককে রাখা হয়নি। খড়খড়ি থেকে পুবের রাস্তায় হাতের বামে ঢুকছি। চারদিকে কিছু শুকনো পেয়ারা, পাকা তাল, কাঁচা পেঁপে আর প্লাস্টিক প্যাকেটবন্দি খাবারের দোকান পেছনে ফেলে ঢুকি বামনশিকড় গ্রামে।

একটা বড় দীঘি পাড় হয়েই মিনারুলদের বাড়ি। প্লাস্টারবিহীন ইটের গাঁথুনি আর ভাঙা টিনের ছাউনি দেওয়া তিনখান ঘর। একটি ঘরে মিনারুলের বড় ভাই রুহুল আমিন পরিবার নিয়ে থাকেন। আরেক ঘরে তাদের মা আঞ্জুরা বেগম ও রুস্তম আলী থাকেন। তালাবন্ধ ঘরটিতে মিনারুলেরা থাকতেন। বিয়ের পর মিনারুলদের বোন নাজমা শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। একটুখানি উঠানে মাটির চুলা, শিলপাটায় হলুদের বাসি দাগ।

সবকিছু ছাপিয়ে নজরে এল ছোট একটা মুরগির ঘরের চালে পুরনো এক প্লাস্টিকের গামলায় কাদামাখা কয়েকটি স্যান্ডেল ও একটি প্লাস্টিকের ব্যান্ড। স্বজনেরা বললেন, প্লাস্টিকের ব্যান্ডটা মিনারুলের মেয়ে মিথিলার। ওর জুতা কেনা হয়নি, জুতা পায়ে হাঁটার বয়স হওয়ার আগেই চলে গেল বাচ্চাটা। ঘটনার পর থেকে পুলিশ মিনারুলদের ঘরটি তালাবন্ধ করে রাখায় তাদের ব্যবহৃত আর কিছুই দেখা সম্ভব হলো না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন