নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু

যুগান্তর প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:২২

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসাবে সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৈঠক হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে মাঠে থাকবে ৬০ হাজার সেনাবাহিনী। পাশাপাশি সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনবিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর গুজব ও ভুয়া তথ্য রোধে ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার’ গঠন করা হচ্ছে। সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদারে কাজ চলছে। এছাড়া প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল করা হবে।


রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম কামরুল হাসান এবং পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।


বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এসব তথ্য জানান। এর আগে সোমবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। এ সময় তারা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক, কাউন্টার টেরোরিজম (সন্ত্রাস), ইলেকশনের প্রস্তুতি এবং ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ নিয়ে কথা বলেন। এ সময় ড. ইউনূস তাকে জানান, সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্সে তার সরকার।


প্রসঙ্গত, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে হতে যাচ্ছে দেশের ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন। আগস্টের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন। আর এই নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের দ্বিতীয় সভা এটি। এর আগে গত ৯ জুলাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতিসংক্রান্ত প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন।



শফিকুল আলম বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সরকার ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি এবং সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদারে কাজ শুরু করেছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনবিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে অক্টোবর ও নভেম্বর পর্যন্ত। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী মূলত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে কাজ করবে। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে। সেনাসদস্যরা গত ৫ আগস্ট থেকে মাঠে সক্রিয় আছেন। তাদের বিচারিক ক্ষমতাও রয়েছে। সেভাবে কাজ করছেন তারা। শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন ঘিরে গুজব ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় সরকার ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার’ গঠনের চিন্তাভাবনা করছে। ‘এই সেন্টারটি খুব দ্রুত গুজব শনাক্ত ও প্রতিরোধ করবে। পাশাপাশি সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে।’ তিনি বলেন, ‘এই কেন্দ্রটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ইতিবাচক ও তাৎক্ষণিক কর্মকাণ্ড প্রচারে সাহায্য করবে। যেগুলো বর্তমানে প্রচার না পাওয়ায় অনেক সময় অজ্ঞাতই থেকে যায়।’ বৈঠকে নতুন করে গঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমান্ড কাঠামোর অধীনে মিডিয়া উইং প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও আলোচনায় এসেছে। এটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং এবং তাৎক্ষণিক তথ্য প্রকাশে সহায়ক হবে। এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন গোপালগঞ্জ ইস্যুতে সরকার ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। সুপ্রিমকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কমিটির রিপোর্ট এলে বিস্তারিত জানা যাবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এমন ব্যর্থতা এড়াতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আরও সমন্বিতভাবে এবং আগেভাগেই তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রেস সচিব আশা করেন, সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং সিভিল প্রশাসনের মধ্যে শক্তিশালী সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশ একটি নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও