আধুনিক যুদ্ধের জন্য বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তুত?

প্রথম আলো তুষার কান্তি চাকমা প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২৫, ২১:৫৬

যুদ্ধের ইতিহাসে দেখা যায়, কিছু বিশেষ অস্ত্রের আবির্ভাব যুদ্ধ পরিচালনার পদ্ধতি পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে। আবার কখনো কখনো কোনো বিশেষ অস্ত্র ব্যবহারের পরিবর্তে কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেই যুদ্ধের রূপ বদলে গেছে। তবে আজ আমরা শুধু মারণাস্ত্রের বিবর্তন নিয়েই কথা বলব।


ইতিহাসের শুরু থেকেই অস্ত্রকে দুইভাবে ভাগ করা যায়—ডাইরেক্ট (প্রত্যক্ষ) ও ইনডাইরেক্ট (পরোক্ষ)। যেসব অস্ত্র কাছ থেকে শত্রুকে হত্যা করতে ব্যবহৃত হয় সেগুলো ডাইরেক্ট, যেমন তলোয়ার, বর্শা, হালকা তির-ধনুক। আর যেসব অস্ত্র দূর থেকে আক্রমণ চালাতে সক্ষম, যেমন ক্যাটাপুল্ট, তা ইনডাইরেক্ট অস্ত্র। এসব অস্ত্রের উন্নতি ঘটেছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে।


প্রাচীনকালে ঢাল-তলোয়ারই ছিল প্রধান অস্ত্র। ছোটবেলায় ইতিহাস বইয়ে আমরা ঈশা খাঁ ও মানসিংহের মল্লযুদ্ধের ছবি দেখতাম। ঈশা খাঁর তলোয়ার ছিল সোজা, আর মানসিংহের তলোয়ার ছিল বাঁকা।


আমরা বলতাম, ওটা বাঁকা ছিল তাই বুঝি ভেঙে গেছে! আসলে না। ঘোড়সওয়ার যোদ্ধাদের ব্যবহারের জন্য বাঁকা তলোয়ারই বেশি কার্যকর, যা কাটিং বা স্লাইসিংয়ের জন্য উপযোগী। আর পদাতিক সৈন্যরা ব্যবহার করতেন সোজা তলোয়ার, যেটা স্ট্যাবিংয়ের জন্য আদর্শ।


বারুদের আবিষ্কারের পর সেই ঢাল-তলোয়ারের জায়গা দখল করে নেয় পিস্তল, রাইফেল, সাবমেশিন গান। তবে তলোয়ারের ব্যবহার পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়নি; বরং বেয়নেট হিসেবে এখনো আধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেলের মাথায় স্থান পায়।



ব্যক্তিগত সুরক্ষায় ব্যবহৃত হতো ঢাল, যার বিবর্তিত রূপ আমরা দেখি ইউরোপীয় নাইটদের বর্মে। তাঁরা আপাদমস্তক ধাতব বর্মে আবৃত থাকতেন, এমনকি ঘোড়ার দেহেও থাকত বর্ম। মধ্যযুগে এ ধরনের নাইটরাই রাজাদের প্রধান বাহিনী ছিলেন। আজও ইংল্যান্ডে সম্মানজনক ‘নাইট’ উপাধি প্রদান করা হয়, যার ফলে ওই ব্যক্তি ‘স্যার’ উপাধি লাভ করেন।


ইতিহাসে ‘ইংলিশ লং বো’ অন্যতম বিখ্যাত অস্ত্র। ১৩৪৬ সালে ইংরেজরা এই শক্তিশালী ধনুক ব্যবহার করে সংখ্যায় বেশি ফরাসি নাইট বাহিনীকে পরাজিত করে। এই ধনুক থেকে ছোড়া তির ৩০০ থেকে ৪০০ মিটার দূরত্ব থেকেও নাইটদের বর্ম ভেদ করতে সক্ষম ছিল।


তারও অনেক আগে মোঙ্গল ঘোড়সওয়াররা চলন্ত ঘোড়া থেকে তির ছুড়ে অসাধারণ দক্ষতায় শত্রুকে ঘায়েল করতেন। এই শক্তির ওপর নির্ভর করে তাঁরা অল্প সময়ে বিশাল এক সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন।


তৎকালীন রাজারা গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত এলাকায় বিশাল দুর্গ নির্মাণ করতেন। ২০-৩০ ফুট উঁচু পাথরের প্রাচীরঘেরা এসব দুর্গে বসবাস করতেন সাধারণ মানুষ ও সৈন্যরা এবং মজুত থাকত প্রচুর খাদ্যসামগ্রী ও অন্যান্য সরবরাহ। দুর্গের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা অনেক অনেক সুদৃঢ়, তিরন্দাজরা আড়াল থেকে তির ছুড়তেন, দেয়াল টপকাতে গেলে ওপর থেকে তরল দাহ্য পদার্থে আগুন দিয়ে ঢেলে দিতেন। প্রায় সব দুর্গই গভীর পরিখা দিয়ে ঘেরা থাকত এবং পরিখা গভীর জলে পূর্ণ থাকত।


এসব দুর্গ ভাঙা অত্যন্ত কঠিন কাজ। প্রায়ই অবরোধকারীরা হাল ছেড়ে দিয়ে চলে যেত। আবার অনেকে হাল ছেড়ে না দিয়ে লেগে থাকত। দুর্গ ভাঙার জন্য কাঠের তৈরি ক্যাটাপুল্ট ব্যবহার করা হতো, যা দিয়ে ছোড়া হতো বড় পাথর ও আগুনের গোলা। এমনকি মোঙ্গলরা একবার প্লেগে মারা যাওয়া দেহ ছুড়ে দিয়েছিল ক্রিমিয়ার কাফফা দুর্গে, যাতে ভেতরে মহামারি ছড়িয়ে পড়ে।


এর মধ্যেই আবিষ্কৃত হয় বারুদ-গানপাউডার। এর ফলে কামান দিয়ে দুর্গ গুঁড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে। বাবর সেই কামান দিয়েই ইব্রাহিম লোদির বিশাল সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেন। তুর্কিরা বাইজাইন্টাইনদের কাছ থেকে বর্তমানে ইস্তাম্বুল দুর্গ দখল করে নেয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও