শিক্ষার মানকে দুর্বল রেখে কোনো দেশে অগ্রগতি হয়নি

জাগো নিউজ ২৪ ইয়াহিয়া নয়ন প্রকাশিত: ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৭

দেশের তৃতীয় শ্রেণির প্রায় ৬১ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর গণিতের দক্ষতায় দুর্বল। তাদের গণিতের দক্ষতা তৃতীয় শ্রেণির উপযোগী নয়। তৃতীয় শ্রেণির ৫১ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলায়ও দুর্বল। তাদের মানও তৃতীয় শ্রেণির উপযোগী নয়। অনেক ক্ষেত্রে একটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এত বেশি থাকে যে একজন শিক্ষক আলাদাভাবে সব শিক্ষার্থীর প্রতি মনোযোগ দিতে পারেন না। তাই, দুর্বল শিক্ষার্থীরা কোনো বাড়তি যত্ন পায় না।


এমন তথ্য উঠে এসেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে চালানো এক জরিপে। ‘জাতীয় শিক্ষার্থী মূল্যায়ন-২০২২ এর জাতীয় প্রচারণা কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালায় জরিপের ভয়াবহ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অটোপাস এবং সংক্ষিপ্ত সিলেবাস চালু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭০ লাখ শিক্ষার্থী অটোপাস বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে অটোপাস কোনো সমাধান নয়। বরং এতে দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার্থী ও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উচ্চশিক্ষা, চাকরির বাজারে অটোপাসের পরিপ্রেক্ষিতে নানান বেগ পোহানোসহ সামাজিকভাবে তাদের মধ্যে হীনম্মন্যতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুঃখজনকভাবে সে আশঙ্কার কিছুটা বর্তমানে পরিলক্ষিতও হচ্ছে।


এমন ঘটনা কোভিডের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না দিয়ে পাস করা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে। সে সময় এসএসসি, জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের গড় মূল্যায়ন করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। বর্তমানে তাদের অটোপাস জেনারেশন নামে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়। তাছাড়া যারা পরিশ্রমী শিক্ষার্থী তাদের ওপর এটি এক ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণও বটে। অটোপাস পদ্ধতিতে প্রকৃত মেধার মূল্যায়ন সম্ভব নয়।



শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষকরা বলছেন, সীমিত সিলেবাসে পরীক্ষা বা অটোপাসের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মৌলিক জ্ঞানের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের অনেক বিষয় বুঝতে অসুবিধা হয়, যেগুলো তাদের মাধ্যমিকে শিখে আসার কথা, ফলে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পড়াতে গিয়ে তাদের পুরোনো শ্রেণির বিষয়ও নতুন করে বুঝিয়ে দিতে হচ্ছে। আবার অনেকেই স্নাতকে ফেল করছেন। আবার পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যক্রমে পরীক্ষা দিয়ে আসা ব্যাচগুলোর তুলনায় এসব শিক্ষার্থীর ফলাফলও তুলনামূলক খারাপ। অর্থাৎ এ ব্যবস্থার কারণে শিক্ষার মান আরও নিম্নমুখী হয়েছে।


অন্যদিকে এসব শিক্ষার্থীর পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি তৈরির পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় দেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ শিক্ষার ভিত মজবুত না হলে মানবসম্পদ গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে। একটি দেশের উন্নয়নে যে কর্মক্ষম, চিন্তাশীল ও আত্মবিশ্বাসী নাগরিক প্রয়োজন, তার ভিত্তি গড়ে ওঠে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা থেকে। কিন্তু এ স্তরেই যদি দায়সারা মূল্যায়নের প্রবণতা চলে আসে বা অটোপাস দেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে স্নাতক পাসদের কর্মদক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। দেশের অগ্রগতিও ব্যাহত হবে।


এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ আবশ্যক। আর উত্তরণের উপায় হলো শিক্ষাঙ্গনে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষার রীতি ফিরিয়ে আনা। কোনো পরিস্থিতিতেই অটোপাস বা সীমিত সিলেবাসের পথে হাঁটা যাবে না। তাছাড়া একবার বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এ ব্যবস্থা নেওয়া হলে তার জেরে গত বছরের এইচএসসির স্থগিত পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীদের একাংশ। এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী ছিল সাড়ে ১৪ লাখের মতো। তাদের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। সাতটি পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে দফায় দফায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও