
ভাইয়ের ওপর শোধ নিতে নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়ান পরান, তিনিই মবের পরিকল্পনাকারী: র্যাব
র্যাব বলেছে, বড়ভাই ফজর আলীর ওপর প্রতিশোধ নিতে শাহ পরান কুমিল্লার মুরাদনগরে সেই নারীকে পাশবিক নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। শাহ পরান ওই দিনের মব সৃষ্টির অন্যতম পরিকল্পনাকারী। আর তাঁর বড় ভাই ফজর আলী ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এ কথাগুলো জানান। শাহ পরানকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব-১১–এর আভিযানিক দল কুমিল্লার বুড়িচং থানাধীন কাবিলা বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ফজর আলী ও শাহ পরান দীর্ঘদিন ধরে ওই নারীকে উত্ত্যক্ত করছিলেন। ঘটনার দুই মাস আগে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জেরে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম্য সালিসে বড় ভাই ফজর আলী তাঁর ছোট ভাই শাহ পরানকে চড়থাপ্পড় মারেন। শাহ পরান বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সুযোগের সন্ধানে থাকেন।
র্যাব জানায়, সালিসের কিছুদিন পর ওই নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে সুদের বিনিময় ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ঘটনার দিন (২৬ জুন) নারীর মা–বাবা বাড়িতে ছিলেন না। ফজর আলী সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কৌশলে ওই নারীর শোয়ার ঘরে ঢোকেন। তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে শাহ পরানসহ একই গ্রামের আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ ৮ থেকে ১০ জন দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। তাঁরা ওই নারীকে শ্লীলতাহানি ও শারীরিক নির্যাতন করেন। শাহ পরান অশ্লীল ভিডিওচিত্র ধারণ করেন এবং পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এঁদের মধ্যে আবুল কালামের আগে থেকে ফজর আলীর সঙ্গে শত্রুতা ছিল। র্যাবের ধারণা, সেই শত্রুতা থেকে ফজর আলীকে অনুসরণ করে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটনার আগে থেকে ওই বাড়ির আশপাশে অবস্থান নিয়েছিলেন আবুল কালামসহ অন্যরা।
নারীকে ধর্ষণ ও নিগ্রহের ঘটনা জানাহানি হওয়ার পর শাহ পরানসহ আবুল কালাম ও অন্য আসামিরা আত্মগোপন করেন। ২৭ জুন মুরাদনগর থানায় ধর্ষণের মামলা করেন ওই নারী।