পরিবেশবান্ধব উৎপাদন কার্যক্রম ও টেকসই শিল্প ব্যবস্থাপনার জন্য দেওয়া হয় ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’। গাজীপুরের শ্রীপুরের এক্স সিরামিকস লিমিটেডের কারখানা কর্তৃপক্ষ পেয়েছে এ সম্মাননা। তবে শ্রীপুরে লবলঙ্গ নদ দখল ও দূষণের প্রথম সারিতে রয়েছে এই কারখানা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।
২৪ জুন রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ দেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এবার যেসব প্রতিষ্ঠান এই সম্মাননা পেয়েছে, সেগুলোর মধ্যে এক্স সিরামিকস রয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াইদেরচালা গ্রামে ২০০৯ সালে ৭৫ বিঘা জমিতে গড়ে উঠেছে এক্স সিরামিকস কারখানা। কারখানাটি নির্মাণের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী লবলঙ্গ নদকে সামান্য ছাড় দিলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেটি গিলে খেতে শুরু করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে লবলঙ্গকে ভরাট করে নালায় পরিণত করা হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেমতো গতিপথ পরিবর্তন করেছে। এর কয়েকটি পয়েন্টে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী ব্রিজ। কারখানার ভেতর লবলঙ্গের ওপর কালভার্ট নির্মাণ করে দুই পাড়কে যুক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। গতিপথ যত্রতত্র পরিবর্তন করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। কারখানার সব তরল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে সেখানে। এক্স সিরামিক কারখানার আগ্রাসনের ফলে লবলঙ্গের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে।
এক্স সিরামিকস কারখানা কর্তৃপক্ষের এমন ভূমিকায় শঙ্কিত পরিবেশ সংগঠনের কর্মীরা। রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আসলে দোষ কাকে দেবেন? আশ্চর্য ও হতবাক হয়েছি। যে কারখানা আমাদের প্রাণের নদ লবলঙ্গকে গিলে ফেলেছে, তাকে দেওয়া হয়েছে সম্মাননা! সরকারের পরিবেশবান্ধব শিল্প উদ্যোগের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সিরামিক কারখানা ২০২৫ সালের গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পরিবেশসচেতন প্রযুক্তি, টেকসই উৎপাদন প্রক্রিয়া ও সবুজ শিল্প ব্যবস্থাপনার জন্য এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। শাবাশ শ্রম মন্ত্রণালয়! আমরা শ্রম মন্ত্রণালয়ের এই অ্যাওয়ার্ড কমিটির বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’