
বিদেশি ঋণ পরিশোধে রেকর্ড
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে দেশীয় অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে সরকার প্রতিবছর বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে শর্তযুক্ত ঋণ নিচ্ছে। প্রতি মাসে এসব ঋণের একটি অংশ সুদ-আসলসহ পরিশোধও করা হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক বৈশ্বিক অস্থিরতায় ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় এই পরিশোধ এখন সরকারের জন্য একধরনের বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই অবস্থায় একদিকে যেমন নতুন বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে, অন্যদিকে পুরোনো প্রতিশ্রুত ঋণছাড়ের গতি নিয়েও দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চুক্তি অনুযায়ী ঋণ পাওয়ার প্রবাহ যেমন দুর্বল, তেমনি আগের চুক্তিভিত্তিক ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ায় পরিশোধের দায়ও বাড়ছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) একটি হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশের অনুকূলে বিদেশি ঋণের যে পরিমাণ ছাড় হচ্ছে, তার একটি বড় অংশ পুরোনো ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। কার্যত প্রতিশ্রুত ঋণ যতটুকু আসছে, তার ‘ষোলো আনার বারো আনাই’ চলে যাচ্ছে আগের ঋণ শোধে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৈদেশিক ঋণ এবং এর সুদ বেড়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধের পরিমাণও বাড়ছে; আর এই চাপ ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। তিনি বলেন, একদিকে উন্নয়ন প্রকল্পে নেওয়া ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে, অন্যদিকে বাজেট ঘাটতি মেটাতে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে সরকার ঋণ নিচ্ছে। একই সঙ্গে বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সেগুলোর কিস্তি পরিশোধের সময় এসেছে। সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে সরকারের ওপর বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে এবং এই প্রবণতা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে।
- ট্যাগ:
- ব্যবসা ও অর্থনীতি
- বৈদেশিক ঋণ
- ঋণ পরিশোধ