এখনো নিরাপদ নয় প্রবাসীদের বিদেশ যাত্রা

জাগো নিউজ ২৪ ইয়াহিয়া নয়ন প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২৫, ১৪:১০

দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এলেও, ২৩ সালের তুলনায় বিদেশে বাংলাদেশি কর্মী ২৪ সালে কমেছে ২২ দশমিক পাঁচ শতাংশ। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে বিদেশে গেছেন মোট এক লাখ ১১ হাজার ৮৫৬ জন। ২০২৩ সালে গিয়েছিল ১৩ লাখ পাঁচ হাজার ৮৫৬। সেই হিসাবে দুই লাখ ৯৩ হাজার ৫৯৭ জন কম গেছেন।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ সালে প্রবাসীরা দেশে রেকর্ড ২৬ দশমিক নয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি।


দেশে পছন্দমতো কাজ না পাওয়ায় তরুণ জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তাঁরা কাজের সন্ধানে কিংবা উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে কাজের প্রত্যাশায় গড়ে প্রতি ঘণ্টায় দেড় শ বাংলাদেশি দেশ ছাড়ছেন। প্রতিবছর বাংলাদেশিদের জন্য দেশে-বিদেশে যত নতুন কর্মসংস্থান হয়, তার এক-তৃতীয়াংশই হচ্ছে প্রবাসে। স্বল্প শিক্ষিত তরুণদের প্রধান গন্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো।


আবার পছন্দমতো কাজ না পেয়ে ও উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় অনেক বাংলাদেশি তরুণ ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী হতে চেষ্টা করছেন। তাঁদের কেউ কেউ সফল হন, আবার অনেকে ব্যর্থ হয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন বা বিভিন্ন দেশের কারাগারে বন্দী জীবন যাপন করছেন। ঝুঁকি নিয়েও এই তরুণ গোষ্ঠী যেন দেশ ছাড়তে মরিয়া।


প্রবাসে জনসংখ্যা বেশি, এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশ এখন ষষ্ঠ। আর প্রবাসী আয় গ্রহণের দিক থেকে অবস্থান সপ্তম। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি কাজ খুঁজে পেয়েছেন কিংবা প্রতিবছর কাজ খুঁজতে যান।



দেশের অর্থনীতি যে দুটো ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রবাসীদের বিদেশ যাত্রা এখনো পুরোপুরি নিরাপদ হতে পারেনি। অতিরিক্ত ব্যয়, দালালের খপ্পর, সমুদ্রপথে বিদেশ গমন, পর্যটন ভিসায় গিয়ে থেকে যাওয়া, এক দেশে গিয়ে অন্য দেশে চলে যাওয়াসহ নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা চলছে। এতে দেশ হিসেবে আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আমাদের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতার দিকে তাকালে আমরা এ ভয়াবহ পরিস্থিতি আরো বুঝতে পারি। বৈদেশিক বিনিয়োগে দীর্ঘদিন ধরেই ভাটা চলছে। তার ওপর বিগত সরকার ও সংশ্লিষ্টরা বড় অঙ্কের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এতে দেশে নতুন কারখানা স্থাপন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। দেশের ২৬ বছর গড় বয়স এমন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা আট কোটির মতো। বিশাল এ তরুণ জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগই পছন্দমতো কর্মসংস্থান পাচ্ছেন না। ফলে তারা যেকোনো উপায়ে বিদেশ যাত্রাকে একমাত্র পাথেয় মনে করছেন। এতে নিজের জীবন বিপন্ন করার পাশাপাশি পরিবারকেও ঝুঁকিতে ফেলছেন তারা। একই সঙ্গে বাংলাদেশিদের নিয়ে বিশ্ব পরিমণ্ডলে একটা নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে।


আমরা দেখোছ, গত কয়েক বছর বাংলাদেশি পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠেছিল ভিয়েতনাম। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি ঘুরতে গিয়ে বাংলাদেশিদের কেউ কেউ প্রতিবেশী কম্বোডিয়া বা লাওসেও যেতেন। তবে ভিয়েতনামে পর্যটক হিসেবে ঘুরতে যাওয়া বাংলাদেশিদের অনেকে আর দেশে ফেরেননি। কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে তাদের অনেকেই অবৈধ পথে ভিন্ন গন্তব্যে পাড়ি জমিয়েছেন; আবার কেউ সেখানেই ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ছোটখাটো কাজে যুক্ত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ইস্যু বন্ধ করে দিয়েছে ভিয়েতনাম। অথচ কয়েক বছর আগেও ভিয়েতনাম কিংবা ইন্দোনেশিয়ায় যেতে বাংলাদেশিদের কোনো ভিসার প্রয়োজন হতো না।


এক্ষেত্রে অন অ্যারাইভাল ভিসা বা ইমিগ্রেশন অ্যাপ্রুভাল নিয়েই দেশ দুটি ভ্রমণ করা যেত। বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা অনুমোদনে নানা শর্ত ও জটিলতা বাড়িয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াও। এ তিন দেশের অনেক ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। যারা বেশ কয়েকবার এসব দেশ ভ্রমণ করেছেন তাদের ভিসা আবেদনও অনুমোদন হচ্ছে না। বাংলাদেশিদের ভিসা ইস্যুর জন্য নতুন অনেক শর্তও জুড়ে দেয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও