নির্বাচন যতটা সম্ভব এগিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে

প্রথম আলো জাহেদ উর রহমান প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২৫, ১২:২৮

অবশেষে এল নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা, ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথম ভাগে হবে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনের মোটামুটি স্পষ্ট একটা তারিখ পাওয়া গেলে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বেশ খানিকটা কমবে, অনেকের ধারণা সঠিক প্রমাণিত না হয়ে বরং নতুন করে বিতর্ক মাথাচাড়া দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের অবর্তমানে দেশের বর্তমান রাজনীতিতে প্রায় নিরঙ্কুশ প্রাধান্য সৃষ্টিকারী দল বিএনপি এই তারিখকে স্বাগত তো জানায়ইনি; বরং বেশ কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। তারা প্রকাশ্যভাবে অন্তত ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবিতে অটল। এপ্রিলে নির্বাচনের ঘোষণা তাই দেশের রাজনৈতিক সংকট দূর করতে পারেনি।


এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা, এটা আসলে মনে হচ্ছিল না; বরং এই চাওয়া প্রধান উপদেষ্টাকে বেশ খানিকটা বিরক্ত করছিল বলেও মনে হয়। যদিও এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। কারণ, ডিসেম্বরে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমার মধ্যেই পড়ে। প্রধান উপদেষ্টা নিজেই নির্বাচনের জন্য এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন। কথাটি তিনি দেশ-বিদেশে অনেকবার বলেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, ডিসেম্বরে নির্বাচনের ব্যাপারে আদৌ কি সম্মতি ছিল তাঁর? নাকি ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা কেবলই কথার কথা ছিল? এই প্রশ্ন বেশ জোরালোভাবে উঠেছিল প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরের সময়।


জাপান সফরে নির্বাচন কখন হবে, তা পুরোপুরি নির্ভর করছে সংস্কার কতটা সম্পন্ন করা হচ্ছে, তার ওপর উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘...আমরা যদি খুব তড়িঘড়ি করি, কিছু সংস্কার করি এবং অন্যান্য সংস্কারের জন্য অপেক্ষা করতে পারি, তাহলে আমরা এটা (নির্বাচন) ডিসেম্বরে করতে পারি। তবে আমাদের যদি ভালো সংস্কার দরকার হয়, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে।’ কিন্তু কিছু ব্যক্তি সংস্কার রেখে নির্বাচন শেষ করতে বলছেন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সব রাজনৈতিক দল নয়, শুধু একটি দল এটা বলছে। (প্রথম আলো, ২৯ মে)


তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টিকারী এই মন্তব্য দেখলে মনে হতে পারে প্রধান উপদেষ্টা বেশি সংস্কার করতে চান, তাই ‘সংস্কার রেখে’ নির্বাচন চাওয়া একটি দলের প্রতি তাঁর অসন্তুষ্টি আছে। কিন্তু ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছিল কি শুধু ‘একটি দল’? এবং সেই দলটি কি ‘সংস্কার রেখে’ নির্বাচন চায়? দুটি মন্তব্যের কোনোটিতেই সত্যতা নেই; কারণ, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত/অনিবন্ধিত প্রায় সব দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় কিংবা ডিসেম্বরে আপত্তি নেই। আর প্রধান উপদেষ্টার ইঙ্গিত করা দলটি কয়েকটি মৌলিক সাংবিধানিক সংস্কারের ক্ষেত্রে কিছু দ্বিমত ছাড়া আর প্রায় সব সংস্কার মেনে নিয়েছে। বরং একটি দল, এনসিপির নানা সময়ের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, তারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না।



বেশি সংস্কারের জন্য নির্বাচন দিতে ছয় মাস বেশি সময় লাগবে, এই যুক্তি যখন দেওয়া হচ্ছিল, তখন দীর্ঘকাল এই প্রশ্নও ছিল, অনেক বেশি সংস্কার করলেও বাড়তি ছয় মাস সময় কেন লাগবে? প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর এই সময়টা এখন ডিসেম্বরের শেষ সীমার চেয়ে ছয় মাস নয়, সাড়ে তিন মাস বেশি। এই বেশি সময়টা কেন প্রয়োজন, এই ব্যাখ্যা আমরা পাইনি প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের মধ্যে।


যেহেতু এই সরকারের সময় কোনো সংবিধানিক পরিবর্তন সম্ভব নয়, তাই সেই সংস্কারগুলো করা সম্ভব, যেগুলো আইন, বিধিবিধান এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব। এই সংস্কারগুলোর ক্ষেত্রে সব সংস্কারেও যদি সবাই একমত হয়, তাহলে সেগুলো এই ডিসেম্বরের বেশ আগেই করে ফেলা সম্ভব ছিল। পাশাপাশি চলতেই পারত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো। কিন্তু আমরা দেখেছি, যেসব সংস্কারের ক্ষেত্রে সব দলের ঐকমত্য হয়ে গেছে কয়েক মাস আগেই, সেগুলোও ঠিকঠাক বাস্তবায়ন করার জন্য কোনো আন্তরিক পদক্ষেপ নেয়নি সরকার।


ওদিকে ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে, নাকি হবে না—সেই ক্ষেত্রে নতুন এক বয়ান আমরা হঠাৎ পেলাম স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টার দিক থেকে। প্রকাশ্যে তাঁর মুখ থেকে না হলেও সূত্রের বরাতে। প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের ইচ্ছার কথা যখন ছড়িয়ে পড়েছিল চারদিকে, তখন এই খবর ছিল খুবই কৌতূহলোদ্দীপক।


‘উপদেষ্টা পরিষদের এক আলোচনায় উপস্থিত থাকা সূত্রগুলো আরও জানায়, একপর্যায়ে প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের বলেন, তাঁরা যেন আরেকটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন। কারণ, তিনি চলে যেতে চান। বর্তমানে যে পরিস্থিতি আছে, তাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে ব্যালট ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটলে পুলিশ-প্রশাসন তা ঠেকাতে পারবে কি না, সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। অন্যদিকে ভালো নির্বাচন করতে না পারলে মানুষ তাঁকে দায়ী করবে বলেও আলোচনায় উল্লেখ করেন তিনি।’ (প্রথম আলো, ২৩ মে, ২০২৫)

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও