আজ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ২৭ লাখ মানুষ কর্মহীন এবং এ অর্থনীতিতে বেকারত্বের হার ৫ শতাংশের কাছাকাছি। বর্তমান অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২০ লাখ কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। তবে এসব সংখ্যার ক্ষেত্রে বলে নেওয়া ভালো, যে নিয়মে বেকারত্ব সংজ্ঞায়িত এবং গণনা করা হয়, তাতে বেকারত্বের সরকারি উপাত্ত কর্মহীনতার বাস্তব অবস্থাকে অবপ্রাক্কলিত করে।
আদতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সত্যিকারের বেকারত্বের হার সরকারি ভাষ্যের চেয়ে বেশি। যেমন সরকারি তথ্য বলে, বাংলাদেশে নারী বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু বেসরকারি প্রাক্কলিত সংখ্যাটি হচ্ছে ৯ শতাংশ।
বর্তমান অর্থবছরে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। মহামারির বছরগুলো বাদ দিলে এই প্রবৃদ্ধির হার ছিল গত ৩৪ বছরে বাংলাদেশের শ্লথতম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হার। খাতওয়ারি প্রবৃদ্ধির নিরিখে, বর্তমান অর্থবছরে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ—গত বছরের প্রবৃদ্ধি হার ৩ দশমিক ৩০ শতাংশের প্রায় অর্ধেক। দেশের বহু অঞ্চলে বিস্তৃত বন্যার কারণে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সময়কালে সেবা খাতের প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ০৯ শতাংশ থেকে ৪ দশমিক ৫১ শতাংশে নেমে এসেছে। ভোগ-চাহিদার হ্রাস, শিল্পোৎপাদনের সংকোচন, রপ্তানি-শ্লথের কারণে বিভিন্ন সেবার চাহিদা কমে গেছে। যেহেতু কৃষি ও সেবা খাত মিলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ৮৩ শতাংশ কর্ম নিয়োজন নিশ্চিত করে, তাই এই দুই খাতের হ্রাসকৃত প্রবৃদ্ধির কারণে অর্থনীতিতে কর্মহীনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।