শিশু শিক্ষা ও বাজেটের গুরুত্ব

ঢাকা পোষ্ট ফারহানা মান্নান প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২৫, ১২:৫৪

গণমাধ্যমের কল্যাণে জানা গেছে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য গত বছরের তুলনায় কম অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। আমি নিশ্চিত এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি আছে। সেটা বাজেটের প্রস্তাব পাস হওয়ার পর আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে।


বাজেটের বড় একটা অংশ আসে মানুষের কর থেকে। কাজেই সুচিন্তিত বাজেট যাবে সাধারণের পক্ষে। আর যদি ভেবে চিন্তে পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে এর বড় চাপ এসে পড়বে সাধারণের উপরেই।


আমার মনে পড়ে শৈশবে পরীক্ষায় রচনা, বাগধারা আসলে ক্ষেত্র বিশেষে প্রায়ই লিখতাম, ‘শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড’। সত্যি বলছি সে সময় এতটুকু বুঝিনি যে শিক্ষাকে বিশেষভাবে মেরুদণ্ড বলার কারণ কী বরং এটা খুব ভালো মাথায় ঢুকেছিল যে, ‘লেখাপড়া করে যে গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে’। শিক্ষার গুরুত্ব তখনো ছিল এবং এখনো আছে তবে ঠিক অন্যভাবে এবং অন্য অর্থে।


বিংশ শতাব্দীর শিক্ষা, জ্ঞান মূলত ছিল শিল্প কাজের জন্য প্রস্তুতির উপরে নির্ভরশীল। লক্ষ্য ছিল কারখানা, অফিস এবং আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য কর্মী তৈরি করা। একুশ শতকের কেন্দ্রে রয়েছে টেকনোলজি। চারপাশের সব কিছু দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। একটা স্কিল দিয়ে আর চাকরি ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক রকমের কাজ একসাথে করার দক্ষতা এখন ‘মার্কেট ডিমান্ড’!


এ অবস্থায় বাজেটে শিক্ষা, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ক্ষেত্রে বরাদ্দ রাখার সময় যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। বেশিরভাগ উন্নত দেশ শিক্ষায় জিডিপির ৪-৭ শতাংশ এবং গবেষণা ও প্রযুক্তিতে ২-৫ শতাংশ বরাদ্দ করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা গেছে শিক্ষায় জিডিপির ২.৫ শতাংশ এর কম এবং গবেষণা ও প্রযুক্তিতে ০.৫শতাংশ এর কম বরাদ্দ রাখা হয়েছে।


উদ্ভাবনে উৎকর্ষ অর্জনকারী দেশগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার জন্য শিক্ষা ও প্রযুক্তিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে। যদি সেটা না হয় তাহলে স্বল্প শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর দক্ষতার অভাব আধুনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। বেকারত্ব বাড়বে, উৎপাদনশীলতায় প্রভাব পড়বে। উদ্ভাবন দক্ষতা কমে যাবে। বিশ্বব্যাপী বৈষম্য বাড়বে এবং প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। ব্রেইন ড্রেইন বৃদ্ধি পাবে।


দেশ স্বাধীনের পর, বাংলাদেশের প্রথম বাজেট (৭৮৬ কোটি) পেশ করেন তাজউদ্দিন আহমদ ১৯৭২ সালে। ১৯৭৫-৭৬ সালে সেই বাজেট বৃদ্ধি হয়ে দাঁড়ায় ১৫,৪৯০,০০০,০০০ কোটিতে। ১৯৮৭-৮৮ সালে বাজেট পেশ হয় ৮৫,২৭০,০০০,০০০ কোটি টাকার। ২০২৪-২৫ সালের বাজেট পেশ হয় ৭,৯৭০,০০০,০০০ কোটি টাকার। এখন আমরা তাকিয়ে আছি ২০২৫-২৬ সালের বাজেট এর দিকে।


১৯৭২ সালে মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়, যার মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের হিস্যা ছিল ২২ শতাংশ। ২০২১-২০২৪ সালে শিক্ষায় জিডিপির ২.০৯ বরাদ্দ দেওয়া হয়, ২০২২-২৩ সালে জিডিপির ১.৭৬ শতাংশ এবং ২০২৩-২৪ সালে জিডিপির ১.৭৬ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়।


আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে দেখা যায় শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের বরাদ্দ অনেক কম! বরাদ্দ কম হলে কি হয় তা সামগ্রিকভাবে উপরে উল্লেখ করেছি। কিন্তু কেবলমাত্র যদি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখি তাহলে কী পাই?


১) শিক্ষার মান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে:


শিক্ষার মান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়। বড় শ্রেণিকক্ষের তুলনায় অপ্রতুল শিক্ষক, একই সাথে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের অভাব, সত্যিকার অর্থে কারিকুলামে সূক্ষ্ম চিন্তন দক্ষতা ও সৃজনশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে যেসব শিক্ষকদের একাধিক শ্রেণির ক্লাস নিতে হয় প্রত্যন্ত অঞ্চলে!


২) দুর্বল শিক্ষার ফলাফল:


বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে সাক্ষরতা, সংখ্যাজ্ঞান, পঠন ও বোঝার দক্ষতা, লেখার দক্ষতা ‘নিম্ন স্তরের’। দেখা যায় যে শিক্ষার্থীরা মৌলিক দক্ষতা অর্জন ছাড়াই প্রাথমিক পর্যায় শেষ করে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে পঞ্চম শ্রেণির শতকরা পঞ্চাশ ভাগেরও বেশি শিক্ষার্থী দ্বিতীয় শ্রেণির একটা সাধারণ বাংলা পাঠও পড়তে পারে না বা গণিতের খুব সাধারণ সমস্যার সমাধান করতে পারে না!

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও