জাতিসংঘের প্রস্তাবিত শিক্ষা বাজেট থেকে আমরা কত দূরে?

ঢাকা পোষ্ট সৈয়দ মো. সিয়াম প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২৫, ১০:৩৭

শিক্ষা বাজেট হচ্ছে জাতীয় বাজেটের শিক্ষাখাতে সরকারের বার্ষিক বরাদ্দ যা দেশের উন্নত মানবসম্পদ ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী তৈরির পাশাপাশি সামাজিক সাম্যতা এবং টেকসই উন্নয়নের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রতিবছরই জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার শিক্ষার মান উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নে কাজ করে যাচ্ছে।


২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার শিক্ষাখাতে ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ সাত দশমিক ৪২ শতাংশ বাড়িয়ে ৯৪ হাজার ৭১০ কোটি টাকা করে যা মোট বাজেটের প্রায় ১২ শতাংশ। এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির ভিত তৈরিতে ভূমিকা রাখছে।


শিক্ষাক্ষেত্রের এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে সরকারকে অবশ্যই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। অথচ বাস্তবে দেখা যায়, শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ মোট বাজেটের ১০-১২ শতাংশর মধ্যেই থাকে এবং যা মোট দেশজ উৎপাদনের ২ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।


বিভিন্ন গবেষণা ও উন্নয়নমূলক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু বার্ষিক বিনিয়োগের পরিমাণ বাংলাদেশে ৫ ডলার, শ্রীলঙ্কায় ১০ ডলার, ভারতে ১৪ ডলার, মালয়েশিয়াতে ১৫০ ডলার ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৬০ ডলার। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে শিক্ষা বাজেট জিডিপির ৬ শতাংশ এবং মোট জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ হওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের শিক্ষা ব্যয় ২.৩ কিংবা ২.৪ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১৫ শতাংশের নিচে অবস্থান করছে, যা আফ্রিকার অনেক দেশ থেকেও কম।



তবে প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু শিক্ষা বাজেট বাড়ালেই কি শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত মানে আমরা পৌঁছে যাব? শিক্ষা বাজেট বাড়ানোর সঙ্গে এর সঠিক ও উপযুক্ত ব্যবহার প্রয়োজন। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় বরাদ্দের একটি অংশ দুর্নীতি খেয়ে ফেলে, তাহলে সমস্যা কোথায়? সমস্যা হলো বাংলাদেশে শিক্ষা খাত নিয়ে কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ ও যোগ্য লোক গড়ে তোলা যায়নি।


শিক্ষার মাধ্যমে মানব সম্পদ উন্নয়ন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঠিক পরিকল্পনা আমাদের নেই, আমরা এখনো গতানুগতিক ধারায় এমএ-বিএ পাস করানোর পরিকল্পনায় আছি। দেশের জন্য প্রয়োজনীয় জনশক্তি তৈরির শিক্ষা পরিকল্পনা আমাদের নেই। সঠিক পরিকল্পনা, সঠিক বাস্তবায়ন এবং যোগ্য লোক দরকার শিক্ষার উন্নতির জন্য। তাহলেই বাজেট বাড়িয়ে কাজ হবে অন্যথায় বাজেট বাড়ালেও তা যথাযথ খরচ হবে না, আর যা খরচ হবে তার একটি অংশ দুর্নীতিবাজদের পকেটে যাবে।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমানের প্রবন্ধে উঠে আসে শিক্ষা সংক্রান্ত খাতে এমনিতেই বরাদ্দ কম, তার ওপর পরিকল্পনাহীন বরাদ্দ আমাদের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে বোঝায় পরিণত করছে। এক সময় হয়তো আমাদের কৃষি উৎপাদন, শিল্প উৎপাদনসহ আরও অনেক সেবা খাতে লোক পাওয়া যাবে না। যা আমাদের জন্য ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।


শিক্ষা খাতে রাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, যাতে দেশ উন্নতমানের ও কাঙ্ক্ষিত রিটার্ন যেন আমরা পায়। আগামীর বাংলাদেশের উন্নয়নে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিতে হবে শিক্ষাখাতকে কেননা কেবলমাত্র এই খাতের বরাদ্দ তথা বিনিয়োগ সঠিক ব্যবস্থাপনা আর মনিটরিং আওতায় এনে ব্যয় করলে দেশের জন্য সর্বোচ্চ পরিমাণ রেট অব রিটার্ন নিয়ে আসতে পারে।


শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় শিক্ষা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা, চিকিৎসা শিক্ষা, প্রকৌশল শিক্ষা কৃষি শিক্ষাসহ যাবতীয় পেশাগত শিক্ষা, শিক্ষকদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা নিয়ে গবেষণাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রের কথা আলাদাভাবে চিন্তা করে বাজেট প্রণয়ন করে বরাদ্দ দিতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও