You have reached your daily news limit

Please log in to continue


পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু অবহেলাজনিত খুন

কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এক শিশুকে খুঁজতেন-
……কিন্তু সেই শিশুটিকে আমি
ভিড়ের ভিতরে আজ কোথাও দেখছি না।
শিশুটি কোথায় গেল? কেউ কি কোথাও তাকে কোনো
পাহাড়ের গোপন গুহায়
লুকিয়ে রেখেছে?
নাকি সে পাথর-ঘাস-মাটি নিয়ে খেলতে খেলতে
ঘুমিয়ে পড়েছে
কোনো দূর
নির্জন নদীর ধারে, কিংবা কোনো প্রান্তরের গাছের ছায়ায়?
যাও, তাকে যেমন করেই হোক
খুঁজে আনো। …

কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী যতই গলা ফাটান না কেন, অনেক শিশুকেই আমরা আর খুঁজেই পাব না। বাংলা নববর্ষের দিন (১৪ এপ্রিল) দুপুরে ভোলার লালমোহন উপজেলার ফুলবাগিচা গ্রামের রাকিবের ছয় বছরের ছেলে জোনায়েত এবং আনিচল হক মিয়ার আট বছরের ছেলে শহিদুল তাদের নানাবাড়িতে ছিল। তারা দুপুরে পুকুরে গোসল করতে গেলে ডুবে যায়। লোকজন তাদের দেহ পুকুরে ভাসতে দেখেন। উদ্ধার করে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুদের নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জরুরি বিভাগের কথা, হাসপাতালে আনার আগেই শিশু দুটির মৃত্যু হয়েছিল।

থানার ওসি জানান মারা যাওয়া শিশু দুটির পরিবার এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। তাই মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি দর্শন আওড়াতে ভুল করেননি, বলেছেন, অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। লম্বা ছুটিতে নানাবাড়ি, দাদাবাড়ি, আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আকছার পানিতে ডুবে শিশু মারা যাচ্ছে। গবেষণা আর পরিসংখ্যান বলছে, সারা বছর যত শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়, তার ৩৫ শতাংশ ভাগ শিশু মারা যায় বিভিন্ন লম্বা ছুটিতে আত্মীয়স্বজনের বাসায় বেড়াতে গিয়ে।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পানিতে ডোবা শিশুদের একটা হিসাব প্রকাশ করেছে ফাউন্ডেশন ফর ডিজাস্টার ফোরাম। ফোরামের হিসাব অনুযায়ী, এবার ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন গড়ে চারজন শিশু ডুবে মারা গেছে।

গত ২৬ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে, অর্থাৎ ১২ দিনে মোট ৪৯ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। সেই হিসাবে, গড়ে প্রতিদিনই চারজন পানিতে ডুবে মারা গিয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের ৪৭ জনই ছিল শিশু (ছেলেশিশু ৩০ ও মেয়েশিশু ১৭ জন)। এককভাবে ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, মোট ৩৭ জন (১৫ জনের বয়স হবে মাত্র চার বছরের মধ্যে)। বেশির ভাগই মারা গেছে বাড়ির কাছের পুকুরে (২৫ জন) আর আশপাশের নদীতে (১৩ জন)।

ছোট শিশুরা দল বেঁধে ছুটির দিনে খেলাধুলা–চলাফেরা করে, তাই অনেক সময় একে অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে পানিতে ডুবে উভয়েই বা তিন–চারজন একসঙ্গে মারা যায়। এবারও এ রকম কমপক্ষে চারটি ঘটনার কথা জানা গেছে। সেই চারটি ঘটনায় মোট ৯ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে।

২০২৪ সালে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা পবিত্র ঈদুল ফিতরে ৫৮ জন ও ঈদুল আজহায় ৬৫ জন। সেই বছর এককভাবে ছেলেশিশুর মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি ছিল (দুই ঈদে মোট ৭৮ জন)।

বলা বাহুল্য, সংবাদমাধ্যমের একবেলার খবর ছাড়া এসব মৃত্যুর কোনো রেকর্ড কোথাও রাখা হয় না। হাসপাতাল বলে দেয়, আনার আগেই মারা গেছে। অতএব নামধাম, কারণ খাতায় তোলার কোনো ল্যাটা নাই। শিশুদের দল নেই ভোট নেই, তাই তাদের পক্ষে কেউ খাড়ায় না। জবাবদিহির কোনো বালাই নেই। ইউনিয়ন পরিষদ/পৌর করপোরেশন/সভা শিশুদের জন্মনিবন্ধন করলেও মৃত্যুনিবন্ধন হয়ে ওঠে না।

শ্মশান, গোরস্তানে একটা হিসাব থাকে, কিন্তু পারিবারিক গোরস্তান বা বাড়ির আঙ্গিনায় যেসব শিশুর দাফন বা শেষকৃত্য হয়, তার হিসাব কোথাও নেই। অভিভাবকেরা আবেগে আপ্লুত হয়ে নিহত শিশুর ময়নাতদন্ত করতে দেন না, তাই আমরা জানতে পারি না মৃত্যুর প্রকৃত কারণ। হতে পারে শিশুটি সাঁতার জানত, কিন্তু তার মৃগী বা হঠাৎ ফিট লাগার ধাত ছিল।
কেউ তাকে গোসল করানোর অছিলায় পানিতে নাকানিচুবানি খাইয়েও মারতে পারে। তদন্ত হয় না, কারণ, ওই যে লালমোহন থানার ওসি বলেছেন, ‘মারা যাওয়া শিশু দুটির পরিবার এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি।’ তাই মামলা হয়নি। পরিবারের অবহেলায় যে শিশু মারা গেছে, সেখানে পরিবার কোন মুখে কার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেবে? এক অর্থে তারাই তো আসামি।

তবে ডুবে যাওয়া মানুষটি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হন, তাহলে সহজে কেউ পার পান না। লালমোহনে যেদিন জোনায়েত আর শহিদুল ডুবে মরা যায়, সেই একই দিনে পুকুরে ডুবে মারা যান পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থী হোসাইন মোহাম্মদ আসিক। আসিক বন্ধুদের সঙ্গে দুমকি জনতা কলেজ পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে যান। এ সময় তাঁর বন্ধুরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

সন্ধ্যার কিছু আগে আসিককে মৃত ঘোষণা করা হয়। শিশু হলে এখানে গল্পের শেষ হতো। তা হয়নি। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে শুরু হয় বিক্ষোভ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন