নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতের সুর কি অভিন্ন হচ্ছে?

ডেইলি স্টার আমীন আল রশীদ প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:১৫

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছিলেন, সংস্কার ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে নয় তাদের দল। জামায়াত মনে করে, নির্বাচন সংক্রান্ত জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত।


এর দুমাস পর ১৬ এপ্রিল ঢাকায় সফররত মার্কিন কূটনীতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর জামায়াত আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন হওয়া দরকার। জামায়াত মনে করে, আগামী বছরের জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করলে বর্ষা-ঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে। তখন নির্বাচন অনিশ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। এজন্য জামায়াতের প্রস্তাব রমজানের আগেই যাতে নির্বাচন হয়ে যায়।


জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে জামায়াত যেদিন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলো, তার ঠিক আগের দিন গণমাধ্যমের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম 'লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ'। খবরে বলা হয়, গত রোববার লন্ডনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াত আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।


লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় তাদের এ সাক্ষাৎ হয়। এ সময় তারেক রহমানও উপস্থিত ছিলেন। সুতরাং, লন্ডনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতার সাক্ষাৎ এবং আগামী বছরের রোজার আগেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানানোর ঘটনাটি যে বিচ্ছিন্ন নয়—সেটি খুব পরিষ্কার।


একই দিন দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'আমরা স্পষ্ট করেই বলেছি, ডিসেম্বরের মধ্যে যদি নির্বাচন না হয়, তাহলে দেশে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। সেটা তখন নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হবে।'



প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় মির্জা ফখরুল যে দীর্ঘ লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন সেখানেও তিনি বলেছেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব আইন, বিধি-বিধান সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর যেসব পরিবর্তন জরুরি, তা সম্পন্ন করার মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভব।


স্মরণ করা যেতে পারে, গত বছর সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি বলব যে এই সময়সীমার মধ্যেই আমাদের একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত।'


অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে গত বছরের ৮ আগস্ট। সেই হিসাবে ১৮ মাস হয় আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে। জামায়াত বলছে, তারা আগামী বছরের রোজার আগে নির্বাচন চায়। আগামী বছরের রোজা হওয়ার কথা ফেব্রুয়ারি মাসে। তার মানে রোজার আগে নির্বাচন হতে হলে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে হতে হবে।


এই টাইমলাইন সেনাপ্রধানের প্রত্যাশিত সময়ের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। আবার বিএনপি বলছে, তারা ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায় এবং নির্বাচনের জন্য যেসব জরুরি সংস্কার প্রয়োজন সেগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্ভব।


দেশের রাজনীতিক অঙ্গনে আলোচনা আছে, জামায়াত ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে চায় না। ডিসেম্বর মাসের ব্যাপারে তাদের একধরনের 'অ্যালার্জি' আছে। সেটা ১৯৭১ প্রশ্নে।


যদি তাই হয়, তাহলে বিএনপির দাবি ডিসেম্বর এবং জামায়াতের দাবি রোজার আগে—মানে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। তার সঙ্গে সেনাপ্রধানের ১৮ মাস। সব মিলেয়ে এই তিনটি বড় পক্ষের মধ্যে একটা মিল পাওয়া যাচ্ছে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও