বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবাকে যেভাবে ঢেলে সাজানো যায়

প্রথম আলো সৈয়দ আব্দুল হামিদ প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২০:১৮

বাংলাদেশে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো দেশের ক্রমবর্ধমান চিকিৎসা–চাহিদা পূরণে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। গ্রাম থেকে শহর—সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি একটি শক্তিশালী সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে।


তবে এই খাতের সম্ভাবনা ও প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও শাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং নৈতিক মান নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা এটিকে জর্জরিত করে রেখেছে। অনিয়ম, অতিরিক্ত মুনাফার লোভ, দালালনির্ভরতা এবং রোগীদের প্রতি অবহেলার মতো ঘটনা প্রায়ই শিরোনামে উঠে আসে।


এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনস্বার্থের সঙ্গে সমন্বয় করতে সরকারকে একটি বিস্তৃত, সুচিন্তিত এবং সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।


প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো কঠোর তদারকি এবং বাধ্যতামূলক নিবন্ধনব্যবস্থা চালু করা, যেখানে প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সতর্ক দৃষ্টির আওতায় কাজ করবে। এই দায়িত্ব পালনের জন্য একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালক নিয়োগ করা যেতে পারে, যিনি শুধু এই খাতের তদারকির জন্য নিবেদিত থাকবেন। এর পাশাপাশি হয়রানি বন্ধ করতে একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল রেজিস্ট্রি এবং লাইসেন্সিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এই সিস্টেমে সব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হবে এবং তাদের লাইসেন্স নিয়মিত নবায়ন করতে হবে। এ ছাড়া নিরীক্ষা এবং পরিদর্শনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হবে।


তদারকির পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শাসনকাঠামোতে আমূল সংস্কারের প্রয়োজন। যেসব হাসপাতালে ৫০টির বেশি শয্যা রয়েছে এবং বড় ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর জন্য একটি ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠন করা যেতে পারে। এই বোর্ডের নেতৃত্বে থাকবেন একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ। বোর্ডের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য হবেন নিবন্ধিত চিকিৎসক, যাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে পেশাগত দক্ষতা প্রাধান্য পায়। তবে মালিকদের এই বোর্ডে সদস্য হওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। এটি স্বার্থের সংঘাত রোধ করবে এবং নিশ্চিত করবে যে প্রতিষ্ঠানের লাভের আকাঙ্ক্ষা রোগীদের সেবার ওপর প্রভাব ফেলতে না পারে।


গুণগত মান নিশ্চিতকরণে ‘বাংলাদেশ হেলথ কমিশন’ (বিএইচসি) বা একটি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে গ্রেডিং পদ্ধতির আওতায় আনতে হবে। এই গ্রেড নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন মানদণ্ড বিবেচনা করা যেতে পারে। হাসপাতালের ক্ষেত্রে আইসিইউ ব্যবহারের হার, সংক্রমণের মাত্রা এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং রোগীর সন্তুষ্টির মাত্রা ইত্যাদি বিবেচনা করা যেতে পারে। অন্যদিকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর ক্ষেত্রে পরীক্ষার নির্ভুলতা, যন্ত্রপাতির সুরক্ষা এবং রিপোর্টিংয়ের মান বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।


এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎকর্ষের দিকে উৎসাহিত করবে। এটি রোগীদের জন্যও একটি বড় সুবিধা হবে, কারণ তাঁরা সচেতনভাবে বেছে নিতে পারবেন কোথায় তাঁরা সেবা নিতে চান। ফলে নিম্নমানের প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার ঝুঁকি কমে যাবে এবং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সামগ্রিক সেবার মান বাড়বে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও