You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ধর্মনিরপেক্ষতা ও তরুণ প্রজন্ম

ভারতবর্ষে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষ সহাবস্থান করলেও ঔপনিবেশিক শাসন এবং ব্রিটিশদের বিভেদমূলক রাজনৈতিক কৌশলের কারণে সাম্প্রদায়িক বিভাজন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গভীর হয়ে ওঠে। তারই চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে ১৯৪৭ সালে, যখন উপমহাদেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে জন্ম নেয় ভারত ও পাকিস্তান। এই বিভাজনের পেছনে মূল চালিকাশক্তি ছিল ধর্ম। আর ধর্মীয় কারণে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে স্থায়ী সমাধান হয়নি। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই শুরু হয় ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য। একই সঙ্গে পাকিস্তানের শাসকেরা তৎকালীন পূর্ব বাংলার ওপর চালিয়েছে অর্থনৈতিক শোষণ। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় পূর্ব বাংলার মানুষ। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হয় এক দীর্ঘ সংগ্রাম, যার পরিণতিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এর রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ছিল গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ। ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৩৮ নং অনুচ্ছেদে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়, যাতে একটি ধর্মকে পুঁজি করে কেউ রাজনীতি করতে না পারে। এই পদক্ষেপটি ছিল সময়োপযোগী এবং প্রয়োজনীয়। কারণ সদ্য স্বাধীন দেশে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার কোনো জায়গা ছিল না। বাংলাদেশ ছিল সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য সমান সুযোগ ও অধিকারসম্পন্ন একটি রাষ্ট্র।

কিন্তু ১৯৭৫ সালের ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পরে রাষ্ট্রের আদর্শগত ভিত্তিতে নেমে আসে অন্ধকার। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান ‘প্রোক্লেমেশন অর্ডার’ জারি করে সংবিধানের ৩৮ নং অনুচ্ছেদের ধর্মবিরোধী অংশ বাতিল করেন। পরবর্তী সময়ে এরশাদ ক্ষমতাসীন হয়ে সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ঘোষণা দেন। এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো তাদের রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে যায়। আশির দশকে একাধিক ধর্মভিত্তিক দল রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই পরিবর্তন শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়, সমাজ ও সংস্কৃতিতেও ছাপ ফেলে।

বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও এই ভূখণ্ডের মুসলমানরা ঐতিহাসিকভাবে ছিল প্রগতিশীল ও সংস্কৃতিপ্রিয়। ধর্মীয় মূল্যবোধ তাদের জীবনের অংশ হলেও তারা ধর্মকে রাজনীতির অস্ত্র বানায়নি। কিন্তু বর্তমান সময়ে লক্ষ করা যাচ্ছে, তরুণ প্রজন্মের একটি অংশ ধর্মভিত্তিক রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। এটি নিছক কৌতূহল বা আবেগের বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং এটি একটি সুপরিকল্পিত সামাজিক প্রকৌশলের ফসল। ধর্মের প্রতি মানুষের আবেগ ও বিশ্বাসকে কৌশলে ব্যবহার করে তরুণদের একটি অংশকে এমন এক চেতনার দিকে ধাবিত করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল আদর্শের পরিপন্থী।

এই অবস্থার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। আমরা যদি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাষ্ট্র পরিচালনার ইতিহাস পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখতে পাই, তিনি মদিনায় একটি বহুধর্মীয় সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য ‘মদিনা সনদ’ নামে একটি লিখিত সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সামাজিক চুক্তি। এই সনদে মুসলমান, ইহুদি, খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মাবলম্বীর সমান অধিকার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। মদিনা রাষ্ট্রে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি, বরং ধর্মীয় সহাবস্থানের এক অনন্য উদাহরণ গড়ে তোলা হয়। সেই মদিনার রাষ্ট্রচিন্তাই প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি, যেখানে ধর্মকে ব্যক্তিগত বিশ্বাস হিসেবে মান্য করা হয়, কিন্তু রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে ধর্মীয় আধিপত্য থাকে না।

বাংলাদেশের সংবিধানে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়কে রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকার দেবে না।’ এই অনুচ্ছেদ একসময় সংবিধানে ছিল, এখন তা নেই। কিন্তু আমাদের সংবিধানের মূল রূপরেখা অনুযায়ী, রাষ্ট্র সব ধর্মের মানুষের জন্য সমান এবং ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ধর্মীয় নিরপেক্ষতা বজায় রাখা একান্ত প্রয়োজন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন