‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’: কল্পগল্প ও কেচ্ছা-কাহিনি

বিডি নিউজ ২৪ সৌমিত জয়দ্বীপ প্রকাশিত: ২২ আগস্ট ২০২৫, ১৩:৪১

পৃথিবীর সাতটা আশ্চর্য তো আমাদের জানা। কিন্তু, অষ্টম আশ্চর্যের ব্যাপারে যেহেতু বিহিত হয়নি, আমরা ‘দাবি’ করতেই পারি যে, এই ‘ব-দ্বীপ’কে সেই স্বীকৃতি দেওয়া হোক।


দাবি… দাবি… দাবি…


এই দাবি মানে ডিমান্ড না, ক্লেইম। এই দেশের মানুষ যখন খুশি যা খুশি তা-ই ক্লেইম মানে দাবি করতে পারে। সেটার ভিত্তি থাক বা না থাক। আর সেই দাবি যদি কোনো কারণে কারও চিন্তা প্রকৌশল ও মতাদর্শের খাপে ও খোপে পড়ে যায়, তাহলে ভিত্তিহীন হলেও, সেটাকে সত্য প্রমাণে কৌশলী হয়ে উঠি আমরা। যেনবা সেটাই সত্য, এর বাইরে আর কোনো সত্য নেই। কিংবা সত্যটা জানা থাকলেও, শুধু বিতর্ক উস্কে দেওয়ার জন্যই সেটা মানতে আমরা নারাজ।


উদাহরণ চান? আপাতত একটা দেই—“মুক্তিযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ২০০০ জন।” একজন মুখের জোরে কথাটা তুলে দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাতে। যেহেতু আমাদের কান সব সময় চিলেই নিয়ে যায়, ফলে আমরা চিলের পিছে ছোটা শুরু করে দিয়েছি বরাবরের মতোই। এই বয়ানকে সত্য দাবি করে এখন একটা পক্ষ রীতিমতো ফায়দা নেওয়া শুরু করে দিয়েছে। কেননা, মতাদর্শিক কারণেই এই ভুয়া তথ্যটি তাদের পক্ষে সাফাই গাইবে। কে জানে, বাজারে কবে না আবার চালু হয়ে যায় যে, মুক্তিযুদ্ধ বলে কিছুই ছিল না!


বাংলাদেশে এখন একটা পক্ষ মুক্তিযুদ্ধ ও আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কর্তাসত্তাকে সমালোচনার নামে নাকচ করে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিহাসের ক্রিটিক্যাল পাঠের স্বার্থে ও একপাক্ষিক বয়ানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে সমালোচনা একটি অনিবার্য কাজ। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, প্রতি-বয়ানটিও মনগড়া হয়ে উঠবে। সেটি করলে বরং প্রতিষ্ঠিত সত্য আরও বেশি ‘বিশেষভাবে সত্য’ হয়ে ওঠে।


এই আলোচনা মনগড়া প্রতি-বয়ানকে কেন্দ্র করেই লিখিত।


বাংলায় একটা শব্দ আছে, কুম্ভিলক। মানে, যিনি অন্যের লেখা নিজের নামে চালান। এই কাজটিকে বলে কুম্ভিলকবৃত্তি। ইংরেজি শব্দটি বরং অধিকতর জনপ্রিয়—প্লেজিয়ারিজম। বিদ্যায়তনিক কর্মকাণ্ডে কুম্ভিলকবৃত্তিকে চরমতম অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।


আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সংস্কৃতি-রাজনীতির অন্যতম দুই দিকপাল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শেখ মুজিবুর রহমানকে এই প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা ক্রমাগত করে চলেছে তাদের উত্তরপ্রজন্ম। রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে অবশ্য কাজী নজরুলের কথা আসে। আসে গগন হরকরার কথাও। রবীন্দ্রনাথ নাকি নজরুলের কবিতা নিজের নামে চালিয়েছেন, গগনের গান নিজের নামে চালিয়েছেন ইত্যাদি!


রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল ক্ষণজন্মা লেখক। তাঁদের মধ্যে একটা সাহিত্যিক দ্বন্দ্ব লাগিয়ে দেওয়ার জন্য একটা পক্ষ একজনকে হিন্দুর কবি, আরেকজনকে মুসলমানের কবি পরিচয়ে পরিচিত করতে রীতিমতো সিদ্ধহস্ত। যদিও, রবীন্দ্র-নজরুল কেউই এই প্যাঁচকে প্রশ্রয় দেবেন না বা বেঁচে থাকলে দিতেনও না। কিন্তু, তাতেও কুচক্রী মানুষের মনগড়া গুজবের ফল্গুধারা থামত কি না, সে ব্যাপারটা অনিশ্চিত। যা দিনকাল পড়েছে!


এ প্রসঙ্গে একটা মুখে মুখে ফেরা গুজব-গল্প (গল্পগুজব নয়) মনে পড়ে গেল। গুজব নাকি গল্প, নাকি কল্পগল্প, কী বলব জানি না। তবে, (কল্প)-কাহিনিটা এমন—


‘গীতাঞ্জলি’ লিখেছিলেন মূলত কাজী নজরুল ইসলাম। কিন্তু, ১৯১৩ সালে এই ‘গীতাঞ্জলি’র জন্য নজরুল নয়, নোবেল দেওয়া হয় রবীন্দ্রনাথকে। কেননা, তিনি নজরুলকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে তার কাছ থেকে লেখাগুলো নেন। পরে, সেটা আর ফেরত না দিয়ে, নিজের নামে ‘গীতাঞ্জলি’ নামক কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ করেন। এর চেয়ে বড় কুম্ভিলক আর কেউ হয়!


রবীন্দ্রনাথ যেহেতু নজরুলের ভাষাকে সহজে ইংরেজিতে ভাষান্তর করার ক্ষমতা রাখেন না, সেহেতু তিনি আইরিশ কবি উইলিয়াম বাটলার ইয়েটসকে খুব অনুনয়-বিননয় করলেন। অর্থের প্রলোভন দেখালেন। তিনি অনুবাদই শুধু করলেন না, ভূমিকাও লিখে দিলেন ভাষান্তরের। কিন্তু, রবীন্দ্রনাথ যেমন নজরুলকে বোকা বানাতে পেরেছেন, তেমনই ইয়েটসকেও বোকা বানালেন। যাওবা ভূমিকা লেখক হিসেবে ইয়েটসের নাম দিয়েছেন, কিন্তু, যেহেতু ইতোমধ্যেই ইয়েটসকে টাকাপয়সা দিয়ে কিনে ফেলেছেন, সেহেতু ভাষান্তরটা রবীন্দ্রনাথ নিজের নামেই চালিয়ে দিয়েছেন। কত বড় কুম্ভিলক!

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও