মিয়ানমারে যে কারণে মার্কিন নীতির পরিবর্তন দরকার
মিয়ানমার কঠিন সংকটে আছে। চার বছরের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর দেশটি সম্প্রতি ৭ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৯৪৬ সালের পর এটিই সেখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। এ দুর্যোগের কারণে মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে এবং তা ক্রমে অবনতির দিকে যাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের সামরিক শাসক সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখনো কার্যকর কোনো সাহায্য পাঠায়নি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘সহায়তা পাঠাবে’। কিন্তু চীন, ভারত ও রাশিয়া ইতিমধ্যে জরুরি ত্রাণ, উদ্ধারকারী দল ও মেডিকেল টিম পাঠালেও যুক্তরাষ্ট্র খুব কম সহায়তা করেছে। এর একটি বড় কারণ হলো ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচিগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে।
মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির অনেক কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে এবং বিভিন্ন চুক্তি বাতিল হয়েছে। তবে আরও বড় কারণ হলো, মিয়ানমারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞাগুলো এখনো বহাল রয়েছে।
সম্প্রতি ইউএসএআইডির বাজেট কমে যাওয়ার আগেও যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারে জরুরি সহায়তা পাঠানোর জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত ছিল না। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র শাস্তিমূলক নীতি গ্রহণ করেছে।
ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেন ক্রমেই কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন, পাশাপাশি বিদ্রোহীদের ‘অপ্রাণঘাতী’ সামরিক সহায়তা প্রদান করেন, যারা সামরিক শাসন উৎখাত করতে চায়। ট্রাম্প প্রশাসন এখনো সেই নীতিই অনুসরণ করছে।
বর্তমানে কয়েকজন ডেমোক্র্যাট সিনেটর মিয়ানমারের জন্য ভূমিকম্প-সহায়তা পাঠাতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার দাবি জানিয়েছেন। বিগত কয়েক বছরে ইউএসএআইডির সহায়তা মূলত বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে, যেখানে এটি স্থানীয় প্রশাসন গঠনে এবং বাস্তুচ্যুত জনগণের জরুরি সহায়তায় ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো সামরিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফলে সামরিক শাসকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ছিন্ন রাখার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ভূমিকম্প
- মার্কিন নীতি