স্টার্টআপের বাস্তবতা, অভিজ্ঞতা ও সুবিধা

যুগান্তর বিল্লাল হোসেন প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৩

স্টার্টআপের মানে হলো, একটি নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ অর্থাৎ কোনো নতুন ধারণা, পণ্য বা সেবা নিয়ে কাজ শুরু করা। স্টার্টআপ সাধারণত নতুন ও সৃজনশীল ধারণার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। বড় পরিসরে গ্রাহক সম্পৃক্ততা অর্জন স্টার্টআপের অন্যতম লক্ষ্য। স্টার্টআপের লক্ষ্য-সমস্যার নতুন সমাধান খোঁজা, নতুন কোনো বিষয়ে বড় বাজার তৈরি করা এবং টেকসই ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করা। অন্য অর্থে স্টার্টআপ হলো-মানবকল্যাণ ও সামাজিক উন্নয়নে একটি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার নতুন এক চ্যালেঞ্জিং যাত্রা। বাংলাদেশে বর্তমানে ১ হাজার ২০০-এর বেশি স্টার্টআপ সক্রিয় রয়েছে এবং প্রতি বছর নতুন ২০০ করে স্টার্টআপের সৃষ্টি হচ্ছে। এ স্টার্টআপগুলো এরই মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। দেশীয় স্টার্টআপের মধ্যে ফিনটেক, ই-কমার্স ও লজিস্টিকস স্টার্টআপের সংখ্যায় বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে ৯ লাখ ৮১ হাজার স্টার্টআপ রয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস এশিয়ার সম্ভাবনাময় ১০০ নতুন স্টার্টআপ ও ছোট প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেছে। ‘ফোর্বস এশিয়া ১০০ টু ওয়াচ’ নামে এ তালিকায় কৃষি (এগ্রিকালচার) ও উৎপাদন ও শক্তি (ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড এনার্জি) বিভাগ থেকে বাংলাদেশের দুই স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান আইফার্মার ও টাইগার নিউ এনার্জি স্থান পেয়েছে। কোনো দেশের অর্থনীতি, জনসংখ্যা, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং সমস্যা বিবেচনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক বর্তমান আধুনিক যুগে অনেক সম্ভাবনাময় স্টার্টআপ গড়ে তোলা সম্ভব। কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা খাতে রয়েছে এর ব্যাপক সুযোগ ও সম্ভাবনা।


পণ্যের উৎপাদন, সংগ্রহ ও সরবরাহ সম্পর্কে ভোক্তাকে স্বচ্ছ ধারণা দেওয়া, বাজার চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে কৃষকের ন্যায্য মূল্য পাওয়া, কৃষক মোবাইলে তাৎক্ষণিক বাজারমূল্য জানতে পারা, আবহাওয়া পূর্বাভাস, রোগবালাই ব্যবস্থাপনা ও সার-সেচের তথ্য জানাসহ কৃষকের দক্ষতা উন্নয়ন, কৃষকের উৎপাদিত পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির সুযোগে স্টার্টআপ ব্যাপক ভূমিকা রাখে। উল্লিখিত সুবিধাগুলো প্রদানে বিভিন্ন দেশের অনেক স্টার্টআপ কাজ করে যাচ্ছে, তন্মধ্যে ভারতের DeHaat, WayCool Foods, Krishi Network, Ninjacart, ইন্দোনেশিয়ার TaniHub, বাংলাদেশের iFarmer, যুক্তরাজ্যের Revolut উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ভারতের Big Basket, চীনের Ant group, Byte Dance, অস্ট্রেলিয়ার Canva এবং যুক্তরাষ্ট্রের SpaceX-এসব প্রতিষ্ঠান একসময় স্টার্টআপ হয়ে শুরু করলেও এখন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি। সবার পরিচিত এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, গুগল, লিংকডইন, মাইক্রোসফট, উবার, এমনকি আমাদের দেশে বিকাশ স্টার্টআপ হিসাবেই কাজ শুরু করেছিল। আর দারাজ ছড়িয়ে আছে সারা বিশ্বের আনাচে-কানাচে, যা শুরু করেছিল স্টার্টআপ হিসাবেই।


শিক্ষাক্ষত্রে আন্তর্জাতিক লেভেলের কিছু উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান, যেমন-যুক্তরাষ্ট্রের ‘Coursera’ বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের অনলাইন কোর্স, ডিগ্রি ও সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম অফার করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘টফবসু’, এটি প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য অনলাইন কোর্স অফার করছে। স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারেক্টিভ ও অ্যানিমেটেড ভিডিওর মাধ্যমে পরিচালিত একটি লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ভারতের ‘Byju's’. বিনামূল্যে অনলাইন শিক্ষা সহজলভ্য করতে কোটি কোটি শিক্ষার্থীকে সাহায্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘Khan Academy’, যা বিশ্বের ১৯০টির বেশি দেশে ব্যবহৃত হয়। বিনামূল্যে ভাষা শেখার জন্য রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গ্যামিফিকেশনভিত্তিক মোবাইল অ্যাপ ‘Duolingo’। এরা স্টার্টআপ হিসাবে যাত্রা শুরু করলেও এখন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি। এরা এডুটেক ইন্ডাস্ট্রিতে বিপ্লব এনেছে, শিক্ষাকে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করতে কাজ করেছে। ‘উবার’ এবং ‘আলীবাবা’ উভয়ই তাদের প্রতিষ্ঠাকালীন স্টার্টআপ হিসাবে শুরু করেছিল। বর্তমানে, তারা উভয়েই বৃহৎ ও প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। ‘উবার’ একটি বহুজাতিক রাইড-শেয়ারিং কোম্পানি, যা বিশ্বব্যাপী পরিবহণ সেবা প্রদান করে। ‘আলীবাবা’ একটি চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট, যা অনলাইন রিটেইল, ক্লাউড কম্পিউটিং এবং অন্যান্য প্রযুক্তি সেবায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।


পরিবহণের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে শহুরে যাতায়াত ব্যবস্থাকে সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে ট্র্যাভিস কালানিক ও গ্যারেট ক্যাম্প কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয় উবার। উবারের সফলতার মূল কারণ হলো, এটি মোবাইল অ্যাপে রাইড বুকিং সুবিধা চালু করে পরিবহণব্যবস্থায় নতুন বিপ্লব আনে। শক্তিশালী প্রযুক্তি অ্যালগরিদম ও ডেটা অ্যানালিটিকস ব্যবহার করে দ্রুত গাড়ি বরাদ্দ এবং ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এর মাধ্যমে যাত্রীদের জন্য সাশ্রয়ী ও নিরাপদ ভ্রমণের সুযোগ ও চালকদের জন্য স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ তৈরি হয়। বর্তমানে উবার ৭০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চীনের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্ববাজারে আধিপত্য বিস্তার করা কোম্পানি আলীবাবা ১৯৯৯ সালে চীনের হাংজু শহরে জ্যাক মা প্রতিষ্ঠা করেন। এটি মূলত ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম হিসাবে শুরু হয়। আলীবাবা নিজে কোনো পণ্য বিক্রি না করে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সংযোগ ঘটায়। আলিপে চালু করে সহজ ও নিরাপদ লেনদেনের ব্যবস্থা করে। বর্তমানে আলীবাবা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, যা ‘অ্যামাজন’, ‘ইবে’ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও বাজার কৌশল অন্যান্য স্টার্টআপের জন্য অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করতে পারে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও