
মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলা নয়
আজ ৭ এপ্রিল, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘের এক বিশেষ সংস্থা হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে ১৯৫০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে খুব গুরুত্ব সহকারে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’ পালিত হয়ে আসছে।
২০২৫ সালে দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে—‘Healthy beginnings, hopeful futures’, যার অর্থ ‘স্বাস্থ্যকর সূচনা, আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যৎ’। অর্থাৎ, এ বছরের ভাবনায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য প্রাধান্য পেয়েছে। এ বছরের থিমটির গুরুত্ব নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে—‘মা ও শিশুর স্বাস্থ্য হলো সুস্থ পরিবার ও সমাজের ভিত্তি, যা আমাদের সবার জন্য আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে’। ২০২৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘আমার স্বাস্থ্য, আমার অধিকার’।
আজ সারা বিশ্বে দিবসটি উদযাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের ওপর এক বছরব্যাপী বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা শুরু করবে। সংস্থাটি সরকার এবং স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রতিরোধযোগ্য মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যু বন্ধ করার প্রচেষ্টা জোরদার করা এবং মহিলাদের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানাবে। এ সময়ের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও তার অংশীদারি প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বাস্থ্যসম্মত গর্ভধারণ ও প্রসব এবং প্রসব পরবর্তী স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য দরকারি তথ্যও নিজেদের মধ্যে আদান-প্রদান করবে।
প্রতি বছরের মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ বছরের প্রতিপাদ্যটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিছু পরিসংখ্যান দেখলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে এখনো প্রতি বছর প্রায় তিন লাখ নারী গর্ভধারণ ও প্রসবজনিত জটিলতায় প্রাণ হারান। প্রায় ২৩ লাখ নবজাতক জন্মের প্রথম মাসেই মারা যায় এবং ২০ লাখ শিশু মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। সংস্থাটির মতে, এসব মৃত্যুর প্রায় সবগুলোই প্রতিরোধযোগ্য, অর্থাৎ, যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা, দক্ষ ধাত্রী, পরিপূর্ণ পুষ্টি এবং নিরাপদ প্রসবের ব্যবস্থা থাকলে প্রতি ৭ সেকেন্ডে প্রায় ১ জন মা অথবা শিশুর এ প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব।
প্রশ্ন হলো, কোথায় এত ঘটছে মাতৃমৃত্যু, নবজাতক মৃত্যু ও স্টিলবার্থ বা মৃত শিশুর জন্ম? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বব্যাপী যে প্রায় তিন লাখ নারী গর্ভধারণ ও প্রসবজনিত জটিলতায় প্রাণ হারান তার প্রায় ৮৭ শতাংশ ঘটেছে সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ায়। আর এর প্রায় ৭০ শতাংশ হয়েছে শুধুমাত্র সাব-সাহারান আফ্রিকায় (আফ্রিকা মহাদেশের এলাকা এবং অঞ্চল যা সাহারার দক্ষিণে অবস্থিত)। বাকি প্রায় ১৭ শতাংশ হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়।