
সমুদ্র বাণিজ্যে সংযুক্তি এবং বাংলাদেশের আসিয়ান সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা
বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়ের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) প্রেক্ষাপটে।
বিআরআই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে, বিশেষ করে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, শক্তির বিকল্প তথা সবুজ উৎস, পরিবেশ সুরক্ষা ও পরিবহন ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের মাধ্যমে। বাংলাদেশ বিআরআইয়ের অধীনে চীনা ঋণ প্রকল্পের বড় অংশীদার। চীনা ঋণ নিয়ে সম্ভাবনা রয়েছে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যেমন সুযোগ দেয়, তেমনি সম্ভাব্য ঋণের ফাঁদ নিয়েও রয়েছে বিস্তর আলোচনা। ২০১৬ সালে বিআরআইয়ে যোগদানের পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক দ্রুত বেড়েছে। যেখানে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে এবং বিআরআই কাঠামোর মধ্যে বিনিয়োগের পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বিআরআইয়ের অধীনে মূল প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, কর্ণফুলী নদীর তলদেশের টানেল এবং দাশেরকান্দি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। এসব প্রকল্পের সাফল্য নির্ভর করে টেকসই অর্থায়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতার ওপর। পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় বিআরআই-সংক্রান্ত ঋণের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাপক। চীনা ঋণের গড় সুদহার প্রায় ১ দশমিক ২৩ শতাংশ, যা পরিশোধের শর্তাবলি গড়ে ৩১ বছর এবং ৮ থেকে ১২ মাসের গ্রেস পিরিয়ড। পাকিস্তান ও শ্রীলংকার তুলনায় বাংলাদেশ তার ঋণ নেয়ার বিষয়ে সতর্ক হয়ে—টেকসই নয় এমন প্রকল্প প্রত্যাখ্যান করে—ঋণের ফাঁদে পড়া এড়াতে সক্ষম হয়েছে। বিআরআইয়ের কারণে বাংলাদেশের বর্ধিত বাণিজ্য ও অবকাঠামো উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিআরআইয়ের প্রকল্পগুলোর অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতার ওপর বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং একটি টেকসই সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে একটি পারস্পরিকভাবে নির্ভরশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নকে উৎসাহিত করবে।