
মাহে রমজানে মূল্যছাড় ও অতি মুনাফা প্রসঙ্গ
আমাদের দেশে পবিত্র রমজান এলে নিত্যপণ্যের কোনো মূল্যছাড় লক্ষ্য করা যায় না। বরং কে কত লাভ করবেন সেটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অস্থির প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। প্রতিবছর রমজান মাস সমাগত হবার আগেই এক শ্রেণির লোভী ব্যবসায়ী কোমর বেঁধে অধিক লাভের আশায়ায় অঙ্কের নতুন হিসাব মেলাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেন। পবিত্র রমজানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ব্যবসায়ীরা লাভের কথা ভুলে গিয়ে রোজাদারকে স্বল্পমূল্যে পণ্য সরবরাহ করার প্রতিযোগিতা শুরু করলেও আমাদের দেশে এর উল্টোচিত্র দেখা যায়। এবং অধিক মুনাফা লাভের কুৎসিত প্রবণতা আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের একটা মজ্জাগত বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
সৌদি আরবের ব্যবসায়ীগণ পবিত্র রমজান মাসে লাভ করতে চান না। তাদের খাদ্যপণ্যের দোকানগুলোতে ৫০% মূল্যছাড় দেয়া হয়ে থাকে। সেখানে ৬৫ রিয়ালের একটি ট্যাং জুসের মূল্য ৪০ রিয়ালে বিক্রি করার মানসিকতা দেখা যায়। এইভাবে কাতার, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশেও বিশাল মূল্যছাড়ের কথা জানা যায়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অনেক অমুসলিম দেশেও পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে খাদ্য ও পোশাকের উপর বিশেষ মূল্যছাড় দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে রমজান বা ঈদে দ্রব্যমূল্য ছাড়ের রীতি বা কৃষ্টিই গড়ে ওঠেনি। বরং এখানে আড়ৎদারী, মজুতদারি ও একাই আয়-লাভ করব, একাই খাব নীতিতে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। এভাবেই দেশে আশিভাগ সম্পদ মাত্র ২০ ভাগ মানুষের হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়েছে। তারা সুনির্দিষ্ট নিজ সম্পদের হিসেব করে জাকাত প্রদানেও কার্পণ্য করে থাকেন। তাহলে দারিদ্র্য বিমোচন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে কবে?