You have reached your daily news limit

Please log in to continue


যে কথা বলে গেল শিশু আছিয়া

মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেল মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া। নারী হয়ে ওঠার আগেই সে হারালো নারীত্ব, সম্ভ্রম ও জীবন। জীবনের শুরুতেই তথাকথিত মানুষদের পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে সে বলে গেল : হে মানুষ, আবার তোমরা মানুষ হও!

মানুষকে প্রকৃত মানুষ হওয়ার আকুতি জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথও। ২৬ চৈত্র ১৩০২ রচিত ‘বঙ্গমাতা’ কবিতায় জানিয়েছেন, ‘সাত কোটি সন্তানেরে, হে মুগ্ধ জননী/রেখেছ বাঙালি করে, মানুষ করনি।’ কবিতার শুরুতে তিনি আশা করেছিলেন, ‘পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে/মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে।’

রবীন্দ্রনাথের আশা পূর্ণ হয়নি। বঙ্গমাতার সন্তান মানুষ হয়নি। যদি মানুষই হতো, তাহলে রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর সাত বছরের মধ্যে ১৯৪৭ সালে উগ্র ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতায় উন্মত্ত হয়ে বঙ্গমাতার ব্যবচ্ছেদ করত না। আনুমানিক ৫ লাখ থেকে ২০ লাখ মানুষের মৃত্যুর মূল্যে দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশ ভাগ করত না। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ তাদের বসতভিটা ছেড়ে শরণার্থী হতে বাধ্য হতো না।

ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্তির পরও মানুষের জন্য মানবিক মর্যাদা সমুন্নত হয়নি। ১৯৭১ সালে রক্ত সাগর পেরিয়ে অর্জন করতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। কিন্তু স্বাধীনতার পরও মানবিকতা উচ্চমূল্য পায়নি। গণপিটুনি, হাইজ্যাক, ব্যাংক লুট, হত্যা ধর্ষণ ঘিরে ধরে সমাজকে। আমজাদ হোসেনের চিত্রনাট্যের ভিত্তিতে সে সময় (১৯৭৩ সালে) খান আতাউর রহমানকে নির্মাণ করতে হয় কালজয়ী চলচ্চিত্র ‘আবার তোরা মানুষ হ’।

২০২৪ সালে জুলাই বিপ্লবের পর দ্বিতীয় স্বাধীনতার লগ্নে আবার যেন তীব্র হয়ে ফিরে এসেছে মানুষ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা। মব কিলিংয়ের নামে বলপূর্বক গণবিচার, আকছার আইন হাতে তুলে নেওয়া, মজুতদারি ও ভেজালের মচ্ছব তৈরি করা এবং নারকীয় ও বর্বর নারী, শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের সিরিজ ঘটনাগুলো যেন সমাজের তথাকথিত মানুষদের তীব্র কশাঘাতে বলছে, ‘আবার তোরা মানুষ হ’।

অবক্ষয় ও পতন এতটাই তলানিতে চলে গেছে যে, প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নারী-শিশুর ওপর নির্যাতন ও সহিংসতায় আপন বা পরিচিতজনরাই এগিয়ে। ৮৫ শতাংশ ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ধর্ষক বা যৌন নির্যাতনকারী ভিকটিমের পরিচিত। মাগুরায় আট বছরের শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় তারই বোনের স্বামীর সহায়তায়। মানিকগঞ্জ সদরে বিয়ের অনুষ্ঠানে তিন বছরের এক কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। রাজধানীর গুলশান এলাকায় ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেফতার হয়েছে। গত এক সপ্তাহে চারজন কন্যাশিশু ধর্ষণের খবর গণমাধ্যমে এসেছে, যারা নিগৃহীত হয়েছে আপন মানুষদের দ্বারা। যেসব মানুষকে অবশ্যই শাস্তি দিতে হবে। এবং একইসঙ্গে বলতে হবে ‘আবার তোরা মানুষ হ’।

মানুষ যদি প্রকৃত মানুষ না হয়, তাহলে শুধু আইন দিয়ে নারী-শিশু ধর্ষণ ও হত্যার মতো বর্বর ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে আইন রয়েছে-খুন করলে ফাঁসি। এটা প্রায় সবাই জানেন; কিন্তু খুন কি বন্ধ হচ্ছে? খুনিরা কি আইন বোঝে? প্রতিটি ধর্মগ্রন্থে খুন-ধর্ষণের কঠোর শাস্তির কথা লিপিবদ্ধ আছে। যদি আইন দিয়ে অপরাধ দূর করা যেত, তাহলে কোনো সমাজে খুন-ধর্ষণ হতো না। নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণ কিংবা নির্যাতনের ক্ষেত্রে আপনজন-পরিচিত ব্যক্তিরাই এগিয়ে। তবে আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বিচার সম্পন্ন করতেই হবে। ঘরে-বাইরে নারী ও কন্যাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি সমাজের সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। প্রকৃত মানুষকে মানুষ হিসাবে এগিয়ে আসতে হবে নারী, শিশু, অবহেলিত ও প্রান্তিকদের নির্যাতনের কবল থেকে মুক্ত রাখার প্রত্যয়ে।

হতাশার বিষয় হলো, দেশে নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণ এবং ধর্ষণ শেষে হত্যার মতো ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। এমন বর্বরতার বিরুদ্ধে মানুষ নামের প্রাণীগণ এবং সমাজ এক ধরনের নীরব। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, ধর্ষক বা নির্যাতনকারীদের মতো অমানুষদের পক্ষেও কিছু মানুষ নামধারী অবস্থান নিচ্ছে। ফলে নারী ও কন্যা নির্যাতনের মাত্রা বাড়ছে। আসলে, জুলাই বিপ্লবের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে এক ধরনের সমন্বয়নহীতা বিরাজ করার সুযোগ নিচ্ছে নির্যাতনকারীরা। হঠাৎ করেই যে নারী ধর্ষণ-নির্যাতন বাড়ছে এমনটা নয়। তবে হঠাৎ করেই বেশি খারাপ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ খুবই জরুরি। রাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ কঠোর হতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্র কঠোর হচ্ছে না বলেই নারীকে ঘরে বন্দি রাখতে যা যা প্রয়োজন, তা-ই করা হচ্ছে। নারীর পোশাক থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে নারীবিদ্বেষী হয়ে উঠছে পুরুষরা। নারীরা ঘরে-বাইরে নিরাপদ থাকবে, নিরাপদে হাঁটবে, উন্নয়নে শামিল হবে, জাতি গঠনে সঙ্গী হবে-এমন পরিবেশ রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে হবে এবং সমাজকেই পরিগঠন করতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন