যে ২ উপায়ে ট্রাম্পের কাছ থেকে ইউক্রেনকে মুক্ত করা যাবে

প্রথম আলো দিমিত্র কুলেবা প্রকাশিত: ০৪ মার্চ ২০২৫, ২১:৪১

গত শুক্রবার অবন্ধুসুলভ আচরণের মুখোমুখি হয়ে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইউক্রেনীয় নেতার উদ্দেশে লেখেন, ‘শান্তির জন্য প্রস্তুত হলে আবার ফিরে আসবেন।’


শান্তি একটি শক্তিশালী শব্দ। কিন্তু এর পুরো অর্থ বুঝতে হলে যে পটভূমিতে এটি উচ্চারিত হচ্ছে, সেদিকে আমাদের তাকাতে হবে। ট্রাম্প যেদিন শান্তির গুরুত্ব নিয়ে বললেন এবং জেলেনস্কিকে চিন্তা করার জন্য বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন, সেদিনই ইউক্রেনের শহরগুলোয় দেড় শতাধিক ড্রোন হামলা করে রাশিয়া। যদিও ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে শান্তির ব্যাপারে তিনি দুর্দান্ত অগ্রগতি ঘটিয়েছেন। বাস্তবতা হলো, তাঁর অভিষেকের পর ইউক্রেনে পুতিনের হামলা বেড়েছে।


গতকাল রোববার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের আমন্ত্রণে ইউরোপের নেতারা, ন্যাটোর মহাসচিব জেনারেল মার্ক রুট এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো লন্ডনে সমবেত হয়েছিলেন। ইউক্রেনের জন্য সমর্থন জোরদার করা এবং ট্রাম্পের সমর্থন জয় করে যুদ্ধ অবসানের একটি পরিকল্পনা তৈরির প্রতিশ্রুতি তাঁরা দিয়েছেন।


ইউরোপীয়রা বুঝতে পারছেন যে (যেটা ট্রাম্প প্রশাসন বুঝতে পারছে বলে মনে হয় না) ইউক্রেন এমন একটি শান্তি চুক্তি চায়, শর্তের কারণে যেন সেটা নষ্ট না হয়ে যায়। পুতিনের ভাবনায় রয়েছে পুরো ইউক্রেন; ন্যাটো কিংবা ইউক্রেনের ভূমির অংশবিশেষ নয়। চুক্তির পরও ইউক্রেন যদি স্বাধীন থাকে, ইউক্রেনের যদি নিজস্ব সেনাবাহিনী থাকে, তাহলে পুতিন সেখানেই থেমে যাবেন না। তিনি এখন ইউক্রেনের একখণ্ড ভূমি নিয়ে সাময়িক বন্দোবস্তে আসবেন, যাতে করে ভবিষ্যতে গোটা ইউক্রেনকে নিজের করায়ত্তে নেওয়া যায়। ন্যাটো যদি পুতিনের চিন্তার কারণ হতো, তাহলে তিনি ২০২৩ সালে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তিকে এত সহজে মেনে নিতেন না। বর্তমানে ইউক্রেনের সীমানা থেকে মস্কোর দূরত্বের চেয়ে সেন্ট পিটার্সবুর্গ থেকে ন্যাটোর সীমানা আরও কাছাকাছি।



পুতিন স্বাধীন ইউক্রেনকে সহ্য করতে পারেন না। তার কারণ হলো, গত ৩০০ বছরে তাঁর পূর্বসূরিদের কেউই এটা মেনে নিতে পারেননি। আরও একটি কারণ হলো, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেন যদি সফল হতে পারে, তাহলে সেটা পুতিনের স্বৈরতান্ত্রিক মডেলের শাসনের ওপর সরাসরি হুমকি তৈরি করবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিকে তাঁর পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছেন। তিনি চান যেকোনো মূল্যেই সেটা সফল করতে।


বাইডেনের আমলে আফগানিস্তানে যেটা ঘটেছে, ইউক্রেনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প সেটা হতে দিতে পারেন না। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষার ফাঁদে নিজেই আটকা পড়ে ট্রাম্প তড়িঘড়ি একটা সাফল্য অর্জন করতে চাইছেন। সেখান থেকেই গত সপ্তাহে তিনি জেলেনস্কিকে আক্রমণ করেছেন।


পুতিন বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। সে কারণে তিনি ট্রাম্পের দেওয়া সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণ করার জন্য হয়তো একটা যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিতে পারেন, কিন্তু ইউক্রেন ধ্বংস করে দেওয়ার কৌশলগত লক্ষ্য থেকে তিনি কখনোই সরে আসবেন না। নিরাপত্তা নিশ্চয়তা শর্ত ছাড়া চুক্তি হলে, সেই চুক্তি ভেঙে যাবে এবং যুদ্ধ আবারও শুরু হবে।


শুক্রবারের ঘটনা নতুন একটি বাস্তবতার প্রকাশ, যেটা কয়েক সপ্তাহ ধরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছিল। আমেরিকা এখনো বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে, কিন্তু এটা একটা আলাদা বিশ্ব। ওভাল অফিসে জেলেনস্কিকে ট্রাম্প ও জেডি ভ্যান্সের চেপে ধরার দৃশ্যটি ইউরোপজুড়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে মিউনিখ সম্মেলনে ইউরোপের নেতারা ভ্যান্সের উপদেশবাণী শুনেছিলেন। তাঁরা এরই মধ্যে বুঝতে পেরেছিলেন যে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের মতো তাঁরা আর অপেক্ষা করে থাকতে পারবেন না। এরপরও কারও মধ্যে বিন্দুমাত্র দ্বিধা থাকলেও শুক্রবারের ঘটনায় সেটা ভেঙে গেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও