লিপস্টিক ও অন্তর্বাসের চাহিদা এবং অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি

জাগো নিউজ ২৪ অধ্যাপক আব্দুল বায়েস প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৯

এই কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গল্প যেমন উচ্চ কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছিল, তেমনি এই উন্নয়ন ঘিরে নানান সমস্যার কথাও জোরালো চাউর পেয়েছিল। সরকার সমর্থকগণ যখন বলতেন বাংলাদেশ নামক দেশটি উন্নয়নের মহাসড়কে, সমালোচকরা তখন দাবি করতেন অন্যরকম- মহাসড়ক আছে বটে তবে মানুষ মহা দুর্ঘটনার শিকার। স্বাধীনতা সংকুচিত, বৈষম্য বৃদ্ধি, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ইত্যাদি কণ্টকে আকণ্ঠ নিমজ্জিত দেশ।


আসলে ব্যাপার হল যে বিশ্লেষণকারীর দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভর করে একই ঘটনার বিভিন্ন ব্যাখ্যা হতে পারে। কথায় বলে, তিনজন অর্থনীতিবিদের পাঁচটা মত অর্থাৎ কিছু নির্বাচিত বিষয় ব্যতীত অর্থনীতিবিদগণ সাধারণত একমত পোষণ করেন না। এমন একটা বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা আবর্তিত।


দুই .
মনে পড়ছে তৎকালীন সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রীর এক মজাদার মন্তব্যে নেটিজেনরা একবার বেশ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। সুদূর ব্রাসেলস থেকে আমার প্রিয় ছাত্র রাজু নুরুল মন্তব্যটি এভাবে উপস্থাপন করেছেন- “বাণিজ্যমন্ত্রী (টিপু মুন্সী) বলেছেন, আমার এলাকায় কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি, আলুভিত্তিক অর্থনীতি। লোকজনের কোনো কষ্ট নেই। মহিলারা দিনে তিনবার করে লিপস্টিক লাগাচ্ছে, চারবার করে স্যান্ডেল পাল্টাচ্ছে।”



বলাবাহুল্য, সম্ভবত তিনি বোঝাতে চেয়েছেন সমালোচকরা যত সংকটের কথাই বলুক অন্তত তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ মানুষের অন্তরে কষ্ট নামক অনুভূতি একেবারেই অনুপস্থিত। অনুমান করি, সারাদেশে একই অবস্থা বিদ্যমান । তবে উচ্ছ্বসিত মন্ত্রী বাহাদুর আবেগের বশে হয়তো কিছুটা বাড়িয়ে বলেছিলেন কারণ এমনকি গুলশান, বনানীর বাসিন্দা- নারীরাও দিনে তিনবার লিপস্টিক আর চারবার স্যান্ডেল বদলান কি না সন্দেহ আছে , এমনকি সুদিনেও। আমরা এটাকে তাই ‘কথার কথা’ হিসেবে ধরে নিয়ে বলবো, মন্ত্রীর এলাকার নারী যখন প্রতিদিন ঠোঁটে লিপস্টিক লাগায়, পায়ে স্যান্ডেল তখন ধরে নিতে হয় ওখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ ভালো ।


বস্তুত অর্থনীতিক তত্ত্ব তাই বলে- মানুষের আয় বৃদ্ধি সাপেক্ষে কিছু কিছু পণ্যের চাহিদা বাড়ে, আবার কোনো কোনো পণ্যের চাহিদা হ্রাস পায়। প্রথমটিকে বলে নরম্যাল গুড, দ্বিতীয়টি ইনফেরিওর গুড। আয় বাড়লে মূলত খাদ্যপণ্য যেগুলো প্রক্রিয়াজাত নয়, সেগুলো ইনফেরিওর হয়ে উঠে; অন্যদিকে খাদ্য-বহির্ভূত এবং কিছুটা বিলাসজাত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পায় (নর্মাল গুড )। ধরে নিতে হয়েছিল একটা এলাকায় নারীরা যে তিনবার লিপস্টিক লাগায় আর চারবার স্যান্ডেল বদলায় তার অন্যতম প্রধান কারণ আয় বৃদ্ধির প্রভাব, সুখের হাতছানি এবং অতঃপর তিনবার লিপস্টিক এবং চারবার স্যান্ডেল।


অর্থনীতিক বিশ্লেষণের দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁর পর্যবেক্ষণে ভুল ছিল বলে মনে হয় না। লিপস্টিক বা স্যান্ডেলের চাহিদা বৃদ্ধি অর্থনৈতিক অগ্রগতির পূর্বাভাস। এবং এটা তো অস্বীকার করবার উপায় নেই যে, অন্যান্য আনুষঙ্গিক উপাদান ঠিক রেখে, বিগত দশকে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির জন্য মানুষের জীবন-মান আগের চেয়ে অনেক বেহতর হয়েছে। হতে পারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কিংবা সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ভুল নীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবন জেরবার হয়েছে কিন্তু মোবাইল ফোন আর লিপস্টিকের ব্যবহার কমেছে বলে তো মনে হয় না।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও