
‘মা’ ডাকতে শিখলেন যেভাবে
ভাষা মানব সভ্যতার ইতিহাসের বাহক। আমাদের মনের কথা প্রকাশ করার অন্যতম মাধ্যম। অথচ ভাষার জ্ঞানের সঙ্গে একেকজন মানুষের কী দারুণ আবেগ জড়িয়ে আছে ভেবে দেখেছেন কখনো? একজন মা যখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন সন্তানের মুখে ‘মা’ ডাক শোনার, সেই অপেক্ষা কি শুধু সন্তানকে কথা বলতে শেখানোর জন্য? ভাষাকে আরও আপন করতে আমরা কেনইবা ‘মাতৃভাষা’ বলি? কারণ মায়ের ভাষা শুধুই যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি আমাদের পরিচয়ের অংশ। আজ মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির অর্জন। এইদিন বিশ্ববাসী, বিশেষ করে প্রতিটি বাঙালি অন্তত একবার হলেও নিজের মাতৃভাষা নিয়ে ভাবেন নিশ্চয়ই।
আজকে একবার ভেবে দেখুন তো, একটি ছোট্ট শিশু কীভাবে ‘মা’ বা ‘বাবা’ বলতে শেখে? কীভাবে সে ধীরে ধীরে জটিল বাক্য বুনতে শুরু করে? মাতৃভাষা শেখার প্রক্রিয়াটি আসলে এক ধরনের জাদুর মতো। শুধু শব্দ শেখা নয় বরং মস্তিষ্কের এক আজব খেলা এটি; সামাজিক মেলামেশা এবং প্রকৃতির দেওয়া এক বিশেষ উপহার।
ভাষার মাসে চলুন জেনে নিই শিশুর ভাষা শেখার প্রক্রিয়া সম্পর্কে-
শিশুরা ভাষা শেখে ধাপে ধাপে, ঠিক যেমন ধাপে ধাপে হাঁটতে শেখে। যাত্রাটা শুরু হয় জন্মের আগেই। শুনতে অবাক লাগছে তো? অবাক হওয়ার মতোই বিষয়। গবেষকরা বলছেন, গর্ভে থাকতেই শিশুরা মায়ের কণ্ঠস্বর এবং আশেপাশের শব্দ শুনতে পায়। জন্মের পর থেকে তারা ধীরে ধীরে শব্দের জগতে প্রবেশ করে।
জন্ম থেকে একবছর
এই সময়ে শিশুরা শব্দ শুনে আর তা অনুকরণ করার চেষ্টা করে। কান্না, হাসি কিংবা অন্যান্য শব্দ যাকে ‘বেবি নয়েজ’ বলা হয়। এসবই তাদের প্রথম যোগাযোগের মাধ্যম। মজার বিষয় হলো, ৬ মাস বয়স থেকেই তারা তাদের মাতৃভাষার ধ্বনিগুলো চিনতে শুরু করে। এই সময়ে তারা শব্দের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে। যেমন- বাংলা ভাষায় ‘প’ এবং ‘ফ’ এর মধ্যে পার্থক্য তারা শনাক্ত করতে পারে। এই ধাপে শিশুরা শব্দের অর্থ না বুঝলেও শব্দের ধ্বনিগত বৈশিষ্ট্য শিখে নেয়।