ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি, শ্রমবাজার ও অভিবাসী বাংলাদেশি

ঢাকা পোষ্ট ড. ফরিদুল আলম প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৯

শুধু বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে নয়, উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন সবচেয়ে আকর্ষণীয়। বছরের পর বছর বিভিন্ন দেশ থেকে বৈধ এবং অবৈধ পন্থায় মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির সরকার বিভিন্ন সময়ে এই অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে আসলেও এক্ষেত্রে সবচেয়ে কঠোর হচ্ছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।


প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালনের সময়েও (২০১৭-২১) তিনি কঠোর হয়েছিলেন। তবে যে কারণে বিষয়টি নিয়ে তারা শেষ পর্যন্ত খুব একটা সফল হতে পারেন না তা হচ্ছে নির্বাচনী রাজনীতি।


সদ্য সমাপ্ত মার্কিন নির্বাচনের দিকে তাকালে আমরা দেখব ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে অন্যতম ছিল অবৈধ অভিবাসীদের বিতারণ করা, যার জন্য তিনি যথেষ্ট জনসমর্থন পেয়েছেন। আর তাই নির্বাচিত হয়েই তিনি এক্ষেত্রে ধরপাকড় শুরু করেছেন।


ইতিমধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে বেশ আতঙ্ক কাজ করছে। অনেককে ধরে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের ক্ষেত্রে রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। মধ্যপ্রাচ্য এবং মালয়েশিয়ার বাইরে সবচেয়ে বেশি বৈধ এবং অবৈধ বাংলাদেশির বসবাস হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে।


যতদূর জানা যায়, প্রায় ১২ লাখ বৈধ বাংলাদেশি বসবাস করছে সেখানে যার মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি ভোটারের সংখ্যা ৬ লাখ ৩০ হাজারের ওপরে। এর বাইরে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ অবৈধ অভিবাসী সেখানে বসবাস করছে। এসব অভিবাসীরা অনেকে ডিভি লটারি, পারিবারিক কোটা, বিশেষ ক্যাটাগরি, বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী কোটায় বৈধ হলেও একটা বড় সংখ্যা অবৈধভাবে গিয়ে পরবর্তীতে নানা প্রক্রিয়ায় বৈধতা লাভ করেছেন।



এখন ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি আর কঠোর হতে যাচ্ছে এবং সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি একমাত্র বৈধ পন্থা ছাড়া অপরাপর দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো কঠিন হয়ে পড়বে। সেই সাথে এটাও স্বীকার করতে হবে যে আইনত কোনো দেশই অবৈধ পন্থায় নিজের দেশের নাগরিকদের অপরাপর দেশে বাস করাকে সমর্থন করতে পারে না।


বৈদেশিক মুদ্রার জোগান বাড়াতে সব দেশই, বিশেষত দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো চায় তাদের দেশ থেকে অধিক হারে মানুষ বিদেশে পাড়ি দিক এবং দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখুক। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি অনেক দেশের জন্যই একটি বার্তা এই অর্থে যে তাদের নিজ দেশের নাগরিকদের আরও প্রশিক্ষিত করার প্রয়োজন রয়েছে।


আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার সবচেয়ে বড় সংস্থান আসে তৈরি পোশাক রপ্তানির আয় থেকে, যেখানে প্রায় ৭০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আমরা রপ্তানি বাণিজ্যের দিক থেকে চোখ ফেরালে দেখতে পাবো যে এক্ষেত্রে বাস্তবে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে বিদেশে অবস্থানরত আমাদের মানুষ, যার সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি।


মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, আরব আমিরাত, ওমান এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া—এই চারটি দেশে অবস্থানরত কর্মীর সংখ্যা যোগ করলেই তা ১ কোটি অতিক্রম করে। সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় আগের তুলনায় আমাদের শ্রমিক রপ্তানির হার অনেক কমে গেছে। তাছাড়া যারা কাজ করছেন তাদের বেশিরভাগই প্রত্যাশিত আয় করতে পারছেন না।


এর মূল কারণ দক্ষ শ্রমিকের তুলনায় আধাদক্ষ এবং অদক্ষ শ্রমিক প্রেরণের হার অনেক বেশি। এর বাইরে রয়েছে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর দৌরাত্ম্য। সরকারিভাবে মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক নিয়োগে শ্রমিকপ্রতি ৭৮ হাজার ৯শ ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে ৪ থেকে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে শ্রমিকদের বিদেশে পাড়ি দিতে হচ্ছে।


একজন শ্রমিক প্রাথমিকভাবে ২ বছর বা ৩ বছর বিদেশে থেকে যে পরিমাণ অর্থ আয় করেন, এতে তার খরচের অর্থই উঠে আসে না, উপরন্তু ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন না করার ফলে নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে শ্রমিকদের দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে, যা তাদের জীবনকে আর দুর্বিষহ করে তুলছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও