স্টার্টআপে বাড়ুক পর্যাপ্ত বরাদ্দ
কেমন চলছে বাংলাদেশের এমএসএমই খাত? যদি আরও সুনির্দিষ্ট করে বলি, কেমন চলছে দেশের নারী ব্যবসায়ী দ্বারা পরিচালিত এমএসএমই খাত? এক্ষেত্রে একেকজন একেকভাবে উত্তর দিলেও শেষমেশ সারাংশ একই আসবে। আমরা সবাই জানি এমএসএমই খাত নানাভাবে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা পেয়ে থাকে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেসব সহযোগিতা অদৃশ্য।
কেবল শোনা যায়, দেখা যায় না। তবে পরোক্ষভাবে থাকে নীতিনির্ধারণী বিষয়াদিতে। এই হলো এমএসএমই খাতের সারমর্ম। এই যে বিপুল সংখ্যক নারী ব্যবসার সাথে যুক্ত হয়েছে তার কতদিনইবা হলো! একদম সাল গুনে বলা যাবে। ব্যবসা করেও যে নিজেকে উচ্চপদে নিয়ে যাওয়া সম্ভব সেই ভাবনাটাও তৈরি হয়েছে মাত্র কয়েক বছর হয়! সুতরাং এই নারী ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও পর্যাপ্ত পরিমাণে লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে হবে। সেটা সম্ভব না হলে নারীদের মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া দেশীয় অর্থনীতির বিশাল সম্ভাবনা অচিরেই আশঙ্কাতে পরিণত হবে।
কয়েক বছরে নারীদের ব্যবসা একটা পর্যায় পর্যন্ত আসলেও চড়াই উতরাই পেরিয়ে এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এখনো ঠিকঠাক দাঁড়াতে পারেনি। দাঁড়াতে গেলে তাদের হাঁটু কাঁপে। তারও অনেক কারণ আছে। সরকারের নীতিনির্ধারক কর্তৃপক্ষকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে যাতে করে এমএসএমই খাতের অন্তরায়গুলো শনাক্ত করে ক্রমান্বয়ে উত্তরণ ঘটানো যায়!
ব্যবসাতে প্রতিদিনের যে হাজার রকম চ্যালেঞ্জ আছে সেটা চাকরিতে নেই, কিন্তু চাকরিতে ব্যক্তির অর্থনৈতিক নিরাপত্তা আছে। সুতরাং টিকে থাকলে হলে ব্যবসাকে অবশ্যই সবসময় লাভজনক অবস্থায় থাকতে হবে। এটাই নিয়ম। তবে ব্যবসা খাত শুধু লাভজনকই না, টেকা কিংবা না টেকার বিষয়টা ব্যক্তির দূরদর্শিতার সাথে নির্ভর করে দেশের অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সিদ্ধান্তের ওপরে।
এই যেমন অর্থবছরের ঠিক মাঝামাঝিতে এসে সরকার ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কী মনে হয় বলুন তো! অর্থবছরের শুরুতে সরকারের বাজেট ঘোষণার পরে একদফা পণ্যের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এখন অর্থবছরের মাঝামাঝিতে এসে আরেকদফা পণ্যের দাম হুট করে বাড়ানো ব্যবসায়ীদের পক্ষে সত্যিই কঠিন।
আমাদের প্রত্যাশা থাকবে বৃহত্তর স্বার্থে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা করবেন। আসলে ভোক্তা হিসেবে ভুক্তভোগী তো সেই সাধারণ জনগণই হয়! যদিও অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভ্যাট বাড়লেও জিনিসপত্রের দামের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না। জানি না কীভাবে সম্ভব!
তবে আমরা সাধারণ জনগণ ও এমএসএমই খাতের ব্যবসায়ীরা নীতিনির্ধারক কমিটির কথামালার ওপরে ভরসা রাখতে চাই। যদিও হুটহাট ভ্যাট আরোপ এখন ব্যবসার জন্য প্রধান উদ্বেগে পরিণত হয়েছে।
জীবনের জন্য উদ্বেগ যেমন একটা ধারাবাহিকতা তেমনি স্বস্তিটাও ধারাবাহিকতা হওয়া উচিত। আমাদের চেষ্টা থাকে দুটো শব্দের মধ্যে ভারসাম্য করার। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই দায়িত্ব অনেকখানি বর্তায় সরকারের ওপরে। স্বস্তির প্রত্যাশা তাই কিছুটা তার ওপরে চাপিয়ে দিতে চাই।
আমরা সবাই জানি এবং ইতিমধ্যে অভ্যস্তও হয়ে পড়েছি। কী সে বলুন তো! ই-কমার্সে। পৃথিবীব্যাপীই বিশাল ই-কমার্স বাজার সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবং বাজারটা ক্রমবর্ধমান সুতরাং এই খাত থেকে সরকারের বড় রকমের রাজস্ব আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে এই ই-কমার্স খাতে ক্ষুদ্র ও তৃণমূল পর্যায়ের উদ্যোক্তারা সিংহভাগ অবদান রাখবে। শুধু যেটা করতে হবে ই-কমার্সের বিশাল সম্ভাবনাকে অবারিত করতে আমাদের যোগ্য প্রতিনিধি প্রস্তুত করতে হবে।