লোকসানে চাষি, পকেট কাটা পড়ছে ক্রেতার
লালমনিরহাটের বড় কমলাবাড়ির চাষি আসাদ মিয়া ঋণ করে এবার ২৭ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছে। আশা ছিল, ফুলকপি বিক্রি করে ঋণের টাকা শোধ করবেন। মুনাফার একটা অংশ দিয়ে সংসারের খরচ, আরেক অংশ দিয়ে পরবর্তী ফসল চাষের খরচ মেটাবেন। কিন্তু তাঁর সেই হিসাব ওলটপালট হয়ে গেছে। এবার ফুলকপির দাম ৫ থেকে ৬ টাকা করে। আসাদ মিয়াকে প্রতি ফুলকপিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ৫ টাকা করে।
অথচ উল্টো চিত্র রাজধানীর বাজারে। এখানে প্রতিটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৩০-৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, বেগুন ৪০-৬০ টাকা, শিম ৩০-৫০ টাকা ও পেঁপে ৩৫-৪০ টাকায়। এ ছাড়া টমেটো ৭০-৮০ টাকা ও আলু ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ কৃষক লোকসানে সবজি বিক্রি করলেও ক্রেতাকে সেই সবজিই কিনতে হচ্ছে ৬-৭ গুণ বেশি দামে।
কৃষক আসাদ মিয়া বলেন, নিজের শ্রম বাদ দিয়েও চারা, সার, অন্যান্য খরচসহ তাঁর প্রতিটি ফুলকপির উৎপাদন ব্যয় ৮ থেকে ১০ টাকা। এখন খেতে প্রতিটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৬ টাকায়। বাজারে নিয়ে গেলে একটু বেশি দাম পাওয়া যায়, তবে পরিবহন খরচ দিয়ে তা প্রায় একই হয়।
শুধু আসাদ নয়, লালমনিরহাটের প্রান্তিক সব চাষিই লোকসানে রয়েছেন। লোকসানের কথা জানিয়েছেন বগুড়ার মুলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজরসহ বিভিন্ন সবজি চাষিরাও।
বগুড়ার বড় পাইকারি বাজার মহাস্থান, রাজাবাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি (গড়ে একটি) ফুলকপি ৩-৫ টাকা, বাঁধাকপি ৮-১৩ টাকা, মুলা ২-৪ টাকা, গাজর ২৫-৩৫ টাকা, টমেটো ৩০-৫০ টাকা, শিম ৮-১২ টাকা, পেঁপে ২০-২৫ টাকা ও বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০-১৫ টাকায়।