You have reached your daily news limit

Please log in to continue


আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না কেন

আলুর দাম অনেক বেড়েছে। এখন কৃষকদের উৎপাদিত আগাম জাতের নতুন আলু সীমিত আকারে উঠছে বাজারে। আমদানির মাধ্যমেও আলু আসছে বিদেশ থেকে। তবু এর দাম চড়া। ঢাকার খুচরা বাজারে গ্রানুলা জাতের ভালো গোল আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা। ডায়মন্ড জাতের ডিম্বাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। কার্ডিনাল জাতের লালচে আলুর দাম প্রতি কেজি ৮০ টাকা। নতুন আলুর দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা। দেড় মাস আগেও আলুর দাম ছিল প্রতি কেজি কমবেশি ৫০-৬০ টাকা। এর উৎপাদন মৌসুম শেষ হয়েছে প্রায় ৯ মাস আগে। এখন শীতকাল। মূল্য কমেছে বিভিন্ন শাকসবজির। কিন্তু আলুর দাম সেভাবে কমছে না। প্রায়োজন অনুপাতে কোল্ড স্টোরেজ থেকে আলু খালাস করা হচ্ছে না। এখনো আলু উৎপাদনের ভরা মৌসুম আসতে আরও প্রায় মাসখানেক বাকি। তাই বাজারে সরবরাহ সংকট অনুভূত হচ্ছে। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে আলুর দাম বেশি। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদেরও কারসাজি আছে। সরকারের কাছে আলুর মজুত নেই। কোল্ড স্টোরেজও নেই। ফলে বাজারে হস্তক্ষেপ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় শুধু কথা বলে আর বাজার পরিদর্শন করে পণ্যমূল্য হ্রাস করা কঠিন।

আলু বাংলাদেশের তৃতীয় প্রধান খাদ্যশস্য। ২০ বছর আগে এর মোট উৎপাদন ছিল ১৪.৪ লাখ টন। তখন মাত্র ১.৩ লাখ হেক্টরে এর উৎপাদন হতো। বর্তমানে (২০২৩-২৪) এর উৎপাদন প্রায় ১০৬ লাখ টন। আবাদি এলাকা প্রায় ১১২৬ হাজার একর। গত ২০ বছরে আলুর উৎপাদন বছরে গড়ে প্রায় ৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আলু চাষের আওতাধীন জমির পরিমাণ বৃদ্ধি এবং হেক্টরপ্রতি উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে আলুর মোট উৎপাদন। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে আলুর অভ্যন্তরীণ চাহিদা। দেশের ভেতর আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ, হিমায়িত সংরক্ষণ, ব্যবহারের বৈচিত্র্যকরণ এবং বিদেশে রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণ ইত্যাদির অগ্রগতি আলুর বাজারমূল্য কিছুটা বাড়িয়েছে। তাছাড়া কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আলুর উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে আলু সংরক্ষণ ও পরিবহণ খরচ। অন্যান্য খাদ্যশস্য যেমন-চাল, গম ইত্যাদির জন্য ফসল উত্তোলনের মৌসুমে একটা সংগ্রহমূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সেই নির্ধারিত মূল্যে সরকারিভাবে সংগ্রহ করা হয় ৫ থেকে ৬ শতাংশ খাদ্যশস্য। তাতে উৎপাদন মৌসুমে বাজারে কিছুটা চাঙ্গাভাব বিরাজ করে ওই খাদ্যশস্যের। পরে দাম বেড়ে গেলে খোলাবাজারে অপেক্ষাকৃত কম দামে খাদ্যশস্য বিক্রি করা হয় সরকারি সংরক্ষণাগার থেকে। কিন্তু আলুর ক্ষেত্রে তেমন কোনো সরকারি হস্তক্ষেপ নেই। মৌসুম শুরুতে দাম থাকে কম। পরে বেড়ে যায়। তা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এবার আলুর দাম বেশি থাকায় এর আবাদ বাড়ছে। উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। এ অবস্থায় নিষ্ফল মৌসুমে বাজারে আলুর সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য বাজারে হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে সরকারিভাবে ৫-৭ লাখ টন আলু সংগ্রহ ও মজুত করা প্রয়োজন।

আলু পচনশীল শস্য বিধায় ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতে ভালো দাম পাওয়ার আশায় তা সংরক্ষণ করে রাখেন হিমাগারে। বাংলাদেশে বর্তমানে মোট হিমাগারের সংখ্যা প্রায় ৪০০। এগুলোর ধারণক্ষমতা প্রায় ৬০ লাখ টন। কৃষক পর্যায়ে চিরায়ত পদ্ধতিতেও কিছু আলু ও বীজ সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু তা যথাযথ নয়। তাই চিরায়ত মজুতের পরিমাণ কম। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এবার আলুর উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৬ লাখ টন। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এ হিসাব অতিরঞ্জিত, স্ফীত। এবার আলুর উৎপাদন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। সর্বসাকুল্যে উৎপাদন হয়েছে ৮৫ থেকে ৯০ লাখ টন। এ দুটি হিসাবের মাঝামাঝি স্থানে প্রকৃত উৎপাদন ধরে নিলে এবার আলুর মোট উৎপাদন দাঁড়ায় ন্যূনপক্ষে ৯৫ লাখ থেকে ১ কোটি টন। আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা, বীজ, অপচয় ও রপ্তানি মিলে মোট প্রয়োজন ৮০-৮৫ লাখ টন আলু। তাতে এবার উদ্বৃত্ত আছে প্রায় ১৫ লাখ টন। বর্তমানে হিমাগারে ও কৃষক পর্যায়ে চিরায়তভাবে সংরক্ষণ মিলে আলুর মজুত প্রায় ৫ লাখ টন। তা সত্ত্বেও ভোক্তা পর্যায়ে আলুর সরবরাহ হ্রাস এবং উল্লেখযোগ্য মূল্যবৃদ্ধি অত্যন্ত অযৌক্তিক। তাতে ব্যবসায়ী ও কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের কারসাজি আছে। এক্ষেত্রে তাদের সিন্ডিকেট ক্রিয়াশীল। এটাকে অকার্যকর করার জন্য প্রয়োজন ছিল আলুর বাজারে সরকারি হস্তক্ষেপ। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে আলু সংরক্ষণ ও মজুতের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

এক হিসাবে দেখা যায়, আলুর কেজিপ্রতি উৎপাদন খরচ বর্তমানে প্রায় ১১ টাকা। কৃষক পর্যায়ে আলুর প্রতি কেজি বিক্রয় মূল্য গড়পড়তা ১৫ টাকা। এর সঙ্গে কোল্ড স্টোরেজের ফি, অপচয়, পরিবহণ ও বাজারজাতকরণের খরচ যোগ করা হলে পাইকারি পর্যায়ে আলুর প্রতি কেজির মূল্য ২৫ টাকা হতে পারে। খুচরা পর্যায়ে তা ৩০-৩৫ টাকা হওয়া উচিত। আমদানি করা আলুর দামও ৩৫ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে ভোক্তা পর্যায়ে ৭০-৭৫ টাকা আলুর কেজিপ্রতি মূল্য খুবই অস্বাভাবিক। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এর দাম এবারই সর্বোচ্চ। চার বছর আগে ২০২০ সালেও আলুর মূল্য আচমকা বৃদ্ধি পেয়েছিল। তখন এর ওপর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের উদ্যোগে একটি সমীক্ষা হয়েছিল আমার তত্ত্বাবধানে। তাতে প্রতীয়মান হয়েছিল, আলু ব্যবসায়ীদের অসাধু তৎপরতা এবং কোল্ড স্টোরেজ থেকে বাজারে খালাসের ধীরগতির কারণে ওই মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছিল। এবারও তা-ই হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও আলুর উৎপাদন উদ্বৃত্ত। বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরে আলুর মজুতও ভালো আছে। আমদানিও হচ্ছে। তারপরও বাজারে পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধির কারণ ব্যবসায়ীদের কারসাজি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন