শিশুদের এখনো ‘হেলিকপ্টার ট্রমা’, ঘুমাতে দেয় না ‘মিছিল-গুলি’
ঢাকার প্রগতি সরণি সংলগ্ন নদ্দায় থাকে শিশু রাফসান। বয়স ছয়। সাড়ে পাঁচ তলা বাসা। তাদের ইউনিটের সামনে খোলা ছাদ। বিমানবন্দর খুব কাছে। একটু শব্দ পেলেই ছাদ বা জানালায় ছুটে যায় প্লেন-হেলিকপ্টারের ওড়াউড়ি দেখতে।
গত ৫ আগস্টের পরের চিত্র উল্টো। হেলিকপ্টারের আওয়াজ হলেই আঁতকে ওঠে সে। মায়ের আঁচলে মুখ লুকায়। বাবাকে বাইরে যেতে দেয় না। রীতিমতো পা ধরে কান্না করে। বলে, বাইরে গেলে ওরা তোমাকে গুলি করে দেবে।
রাফসানের বাবা আরিফ আহমেদ বেসরকারি চাকরিজীবী। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় অধিকাংশ দিন অফিস করতে হয়েছে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘নদ্দা, বসুন্ধরা এলাকা প্রতিদিন আন্দোলনে উত্তাল ছিল। বাড্ডায় আমার অফিস। আমার ছেলে গুলির মতো শব্দ পেলেই দরজা বন্ধ করে দিতো, এখনো শব্দ হলেই মনে করে গুলি হচ্ছে। আমাকেও বাইরে বের হতে দিতো না। মনে করতো আমাকে পুলিশ গুলি করে মেরে ফেলবে। আমরা টিভি-পত্রিকায় নিউজ দেখতাম। সেও দেখতো। এটা তার মনস্তত্ত্বে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।’
দেড় বছর বয়সী আবরার আওসাফ জাহিনের মানসিক অবস্থা আরও করুণ। কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলির ঘটনা ভোলে না সে। ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে সে এখনো হেলিকপ্টার দেখলেই বলে, গুয়ি…গুয়ি..।