
৫ ঘণ্টার ভাঙনে কুড়িগ্রামে ১৫ বাড়ি নদীগর্ভে, আকাশের নিচে ভাঙন কবলিতরা
“নদীর তীরে আমাগো বাড়ি জমি-জিরাত নাই। কেউ আমাগো জায়গা দিতাছে না “
“বাড়িঘর খুইল্ল্যা অন্যের জমির আইলে মাল ছামান রাখছি।”-কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের মাঝেরচর গ্রামের তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা ফুলমতি বেগম।
ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে সোমবার মাত্র ৫ ঘণ্টায় ১৫টি বাড়ি বিলীন হয়েছে। হঠাৎ ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন মাঝেরচর ও পাশের গতিয়াসাম গ্রামের ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো।
আশ্রয়হীন মানুষজন এখন অন্যের জমির আইল ও খোলা আকাশের নিচে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছেন।
সোমবার মাঝেরচর ও গতিয়াসাম গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ জন মানুষ নদী তীরবর্তী বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের হাহাকার আর তিস্তার তীব্র স্রোতের শব্দে জায়গাটিতে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছিল।
হতদরিদ্র ফুলমতি সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে মাথায় ও কাঁধে করে বাড়ির জিনিসপত্র সরাচ্ছিলেন। সেই সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “কেউ আমাগো খোঁজখবর নিতাছে না।”
গতিয়াসামের ভাঙন কবলিত বক্তার মিয়া জানান, সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নদী ভাঙনের ফলে ৫ ঘণ্টায় ১৫টি বাড়ি বিলিন হয়ে গেছে। এর মধ্যে বক্তার আলী, রফিকুল খাঁ, আফতাব খাঁ, তোফাজ্জল, সিরাজ, মোন্নাফ, শাকারুল, মমিনুল, উমর আলী, সাইফুল, ছামিরুল, সাইদুল, ফারুক, শাহিন ও খলিলের বাড়ি রয়েছে।
প্রচণ্ড গরমের কারণে গাছের নিচে বসে জিরিয়ে নিচ্ছিলেন মাঝেরচর গ্রামের খলিল মিয়া। তিস্তার ভাঙনে সর্বস্ব হারানো এই মাঝবয়সী লোকটির কথা বলতে গিয়েই গলা ধরে আসছিল। জন্মভিটে, জমি আর ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন তিনি দাঁড়িয়ে আছেন এক অচেনা অনিশ্চয়তার সামনে।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- নদী ভাঙন
- বাড়িঘর
- নদী গর্ভে বিলীন