মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিবেশী দেশগুলোর উদ্যোগ

যুগান্তর মিয়ানমার (বার্মা) ব্রি. জে. (অব.) হাসান মো. শামসুদ্দীন প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:৪৩

মিয়ানমারে চলমান সহিংসতা বন্ধে এবং মানবিক সহায়তা ও সমঝোতার পথ প্রশস্ত করতে পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে (ইএএস) আসিয়ানের সদস্যদেশ সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ সংস্থাটির প্রধান অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, জাপান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রসহ আটটি দেশ ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট সংঘাত বন্ধে আসিয়ান প্রণীত পাঁচ দফা শান্তি পরিকল্পনার কোনো অগ্রগতি হয়নি, বরং সংকট আরও তীব্র হয়েছে।


মিয়ানমারের সীমান্ত সংঘর্ষের কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। থাইল্যান্ডের সঙ্গে মিয়ানমারের বেশিরভাগ বাণিজ্য চলে কারেন রাজ্যের মায়াওয়াদ্দি সীমান্ত দিয়ে এবং সেখানে বেশকিছু বড় ও লাভজনক ক্যাসিনো রয়েছে। সম্প্রতি কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (কেএনএলএ) এবং পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) মায়াওয়াদ্দি টাউনশিপ থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরের লে কে কাও শহরের কাছে জান্তার ঘাঁটি দখল করেছে। থাই সরকার মিয়ানমার সরকার ও বর্ডার গার্ড ফোর্সেসের (বিজিএফ) সহায়তায় মায়াওয়াদ্দি শহর নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। মিয়ানমারে শান্তি ফিরিয়ে আনতে আসিয়ানের প্রচেষ্টার পরিপূরক হিসাবে থাইল্যান্ড মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোর ভূমিকা জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে। থাইল্যান্ড মনে করে, আসিয়ানের উচিত মিয়ানমারের সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ বার্তা দেওয়া যে, এ সংকটের কোনো সামরিক সমাধান নেই। জান্তা সরকার চলমান পরিস্থিতিতেও ২০২৫ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি হিসাবে দেশব্যাপী আদমশুমারি চালাচ্ছে এবং নির্বাচনের জন্য পাঁচ ধাপের ‘রোডম্যাপ’ প্রণয়ন করেছে। থাইল্যান্ড মিয়ানমারে নির্বাচনের আগে জান্তা ও বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে এবং ডিসেম্বরে আসিয়ানের ১০ সদস্যের একটি ‘অনানুষ্ঠানিক পরামর্শ’ আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে। থাইল্যান্ড এ নির্বাচন সমর্থন করবে। মিয়ানমারের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে দলগুলোর মধ্যে আরও রাজনৈতিক সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ এবং মিয়ানমারের অন্য প্রভাবশালী প্রতিবেশী চীন ও ভারত শান্তি প্রচেষ্টায় ভূমিকা রাখতে পারে বলে থাইল্যান্ড মনে করে।



মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের ১৬০০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এ সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান হয়। প্রায় দেড় বছর ধরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে অস্থিতিশীল অবস্থা চলছে। সম্প্রতি সেখানে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়েছে এবং এতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। সীমান্তের এ পরিস্থিতি মণিপুরে অশান্তির অন্যতম কারণ বলে মনে করে ভারত সরকার। সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য ভারত-মিয়ানমারের সীমান্তে ৩১ হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর কাঁটাতার বসানো ও সড়ক নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ভারত। ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে বাণিজ্যের পাশাপাশি মিয়ানমারে ভারতের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পেও বিনিয়োগ আছে। রাখাইন ও চিন স্টেট এবং সাগাইং অঞ্চলে ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলো এখন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আরাকান আর্মি (এএ) চীনের অর্থায়নে চকপিউ বন্দর ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ভারতের অর্থায়নে কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের মতো বিদ্যমান বিদেশি প্রকল্পগুলোকে সহযোগিতা করতে ও তাদের সঙ্গে মিলে কাজ করার বিষয়ে মনোভাব প্রকাশ করেছে।


পালেতোয়া দখল করার পর এএ চিন ন্যাশনাল আর্মির হাতে পালেতোয়া টাউনশিপ ছেড়ে না দেওয়ায় চিন ন্যাশনাল আর্মি এবং আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি হয়। মিজোরামভিত্তিক নাগরিক সমাজ সংস্থা সেন্ট্রাল ইয়াং লাই অ্যাসোসিয়েশন ২৫ মে থেকে ভারত থেকে লংটলাই-পালতোয়া পথে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য ও প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীকালে উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর আবারও তা চালু করা হয়। রাখাইন রাজ্যের মানুষ ভারত থেকে ওষুধ ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহের জন্য এ রুটের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। রাখাইন রাজ্য মিয়ানমারের বাকি অংশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এ অবরোধে এসব এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পালেতোয়া এএ’র নিয়ন্ত্রণে থাকায় ভারতের সঙ্গে তাদের দরকষাকষির ক্ষমতা বেড়ে গেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও