এফডিসিতে এত সমিতি কেন?
দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্র জগৎ চলছে সিনেমা খরায়। বর্তমানে সিংহভাগ সিনেমা হল বন্ধ থাকার পাশাপাশি নতুন কোনো সিনেমার কাজেরও খবর পাওয়া যাচ্ছে না। এতে সিনেমা হলের মালিকরা পড়েছে চরম বিপাকে। অনেক সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় থাকলেও মুক্তি দিতে চাচ্ছেন না প্রযোজকরা। সিনেমাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান সময় এমন এক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যে চলচ্চিত্র শিল্প নিয়ে এখন মানুষের মাথাব্যথা নেই, অনেকেই ব্যস্ত দল গঠন নিয়ে। চলচ্চিত্রকারদের কাছে এখন মুখ্য বিষয় সিনেমা নয়, বরং কীভাবে নেতা হওয়া যায়, নেতৃত্বে গিয়ে কতটা ফায়দা হাসিল করা যায়, এগুলোই তাদের প্রধান চিন্তা।
বিগত দিনে চলচ্চিত্র সমিতি নামে সিনেমার স্বার্থসংশ্লিষ্ট কাজ বাদ দিয়ে নতুন নতুন দল তৈরিতে ব্যস্ত সবাই। এভাবে এতদিন ধরে প্রায় ১৯টি সংগঠনের জন্ম দিয়েছে তারা। আবার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন দল গঠনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে অনেকে। এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটি নামে আরো একটি সংগঠন হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পুরনো এফডিসি ছিল ফাঁকা, কিন্তু গত সরকারের পতনের পর এর চিত্র পাল্টে গেছে। এফডিসিতে এখন সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ে মুখর চলচ্চিত্রের কিছু মানুষ। এফডিসিতে চলচ্চিত্রাঙ্গনের ১৯টি সংগঠন থাকার পরও কেন আরো সংগঠন দরকার, এ নিয়ে রয়েছে চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের প্রশ্ন। এ দেশের মতো ছোট একটি দেশে চলচ্চিত্র আর সিনেমার পরিমাণ কম হলেও চলচ্চিত্র সমিতি ও দলের কোনো অভাব নেই। এফডিসিতে প্রদর্শক সমিতির অফিস ছাড়া অন্য সব সমিতির অফিস রয়েছে। জানা যায়, চলচ্চিত্রকাররা এখন এফডিসিতে যান রাজনৈতিক কার্যকলাপ ও গালগল্প করতে। সিনিয়র চলচ্চিত্রকাররা জানিয়েছেন, কর্মশূন্য এফডিসিতে সবাই এখন কাজের চেয়ে সংগঠন আর একে অন্যের ওপর রেষারেষি করা নিয়েই ব্যস্ত বলা যায়। স্বাধীনতা লাভের পর এখানে কাজের পরিধি যত বেশি ছিল, সমিতি আর দল তত কম ছিল। কিন্তু এখন হয়েছে উল্টো। সিনেমা কম, সমিতি আর দল বেশি।