সংস্কারের বাইরে থেকে যাবে কি এনজিও?
কভিডকালে দেশজুড়ে মাসের পর মাস ছিল লকডাউন। মারাত্মক প্রভাব পড়ে জীবনযাপনে। সে ধাক্কায় দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪২ শতাংশে দাঁড়ায় বলে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) এক জরিপে উঠে আসে। ওই সময় অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করায় প্রশ্ন উঠেছিল নন-গভর্নমেন্টাল অর্গানাইজেশন (এনজিও) বা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কার্যক্রম নিয়ে। কেননা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের মধ্য দিয়েই অলাভজনক এসব প্রতিষ্ঠানের যাত্রা। পরবর্তী সময়ে বেড়েছে এর ক্ষেত্র ও সংখ্যা। তবে কার্যপরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক উন্নয়নের মূল জায়গা থেকেও এনজিওগুলো ক্রমেই সরে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, প্রান্তিক মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মতো উদ্যোগ থেকে সরে এসে দেশের বৃহদাকারের এনজিওগুলো এখন করপোরেট কালচারের দিকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশকে বলা হয় ‘ল্যান্ড অব এনজিও’। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে দেশে এনজিও রয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার। আর এনজিও-বিষয়ক ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্যে ২ হাজার ৬৩৬টি রেজিস্টার্ড এনজিওর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। স্থানীয় বৃহৎ এনজিওর মধ্যে ব্র্যাক, গ্রামীণ, প্রশিকা, টিএমএসএস, আশা, কারিতাস, আরডিআরএস বাংলাদেশ, ব্যুরো বাংলাদেশ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বেসরকারি এসব উন্নয়ন সংস্থা এখন বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তবে সামাজিক উদ্যোগের বাইরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে এনজিওগুলো মাইক্রোক্রেডিট বা ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। কেননা এর মাধ্যমে দরিদ্রদের, বিশেষ করে নারীদের কাছে সহজেই পৌঁছা যায়। একই সঙ্গে অর্থ উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত হওয়ায় এনজিওগুলোকে টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী হতে সহযোগিতা করছে। অন্য খাতগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবাধিকার, পরিবার পরিকল্পনা, পরিবেশ এবং নারী ও শিশু কল্যাণসহ অন্যান্য। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এনজিওগুলোর ফোকাস পরিবর্তন হয়ে জাতীয় উন্নয়নের দিকে মোড় নিয়েছে। যার ফলে তাদের এখন উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে তুলে ধরা হয়।
- ট্যাগ:
- ব্যবসা ও অর্থনীতি
- এনজিও
- সংস্কার