বিশ্ব জগতের রহমত হজরত মুহাম্মাদ (সা.)

যুগান্তর মাহমুদ আহমদ প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩

পবিত্র রবিউল আউয়াল আরবি বছরের তৃতীয় মাস। পবিত্র এ মাসে বিশ্বনবি ও শ্রেষ্ঠ নবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর জন্ম, নবুয়ত, হিজরত ও ওফাতের মাস। বিশ্বময় শান্তির বার্তা দিয়ে আল্লাহতায়ালা এ মহান নবি (সা.)কে আশীর্বাদস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাকে বিশ্বজগতের জন্য কেবল এক রহমত রূপেই পাঠিয়েছি।’ (সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭)। ‘আমি তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যই সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।’ (সূরা সাবা, আয়াত: ২৮)।


যুগ যুগ ধরে যারা বিকৃত ও ভ্রষ্ট, তাদের উন্নত আচার-ব্যবহার শেখানোর জন্য, সৃষ্টি ও স্রষ্টার মাঝে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে-তা ঘোচানোর জন্যই আল্লাহতায়ালা বিশ্বনবিকে প্রেরণ করেছেন। কীভাবে নিজের প্রভুর ভালোবাসা অর্জন করা যায় আর তার সৃষ্টির প্রাপ্য অধিকার কীভাবে প্রদান করতে হবে, মহানবি (সা.) তা শিখিয়েছেন। বিশ্বনবীর প্রতি আল্লাহতায়ালার নির্দেশ ছিল, তুমি উপদেশ দিতে থাক, নিশ্চয় উপদেশ প্রদান মুমিনদের কল্যাণ সাধন করে থাকে। (সূরা আয যারিযাত, আয়াত: ৫৫)। তিনি (সা.) যে-রূপ সহানুভূতি, ভালোবাসা, আন্তরিকতা ও পরিশ্রম করে নিরন্তর এ উপদেশ প্রদানের দায়িত্ব পালন করেছেন, তা পবিত্র কুরআনে এভাবে উল্লেখ রয়েছে: হে মুহাম্মাদ (সা.) তারা মুমিন হচ্ছে না বলে তুমি কি নিজ প্রাণ বিনাশ করে ফেলবে? (সূরা আশ শোয়ারা : ৪)।


তিনি (সা.) আমাদের সামনে এ আদর্শ স্থাপন করেছেন, যদি সমাজের সংশোধনের জন্য উন্নত মান প্রতিষ্ঠা করতে হয়, তাহলে নিজের ঘর বা পরিবার থেকে সংশোধনের কাজ আরম্ভ করো। এর প্রভাবও পড়বে আর আল্লাহতায়ালার নিদের্শও এটিই; নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে আগুন থেকে রক্ষা কর। মহানবি (সা.) তুচ্ছ থেকে তুচ্ছতর বিষয়ের প্রতিও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মনোযোগ আকর্ষণ করতেন আর তাদের শেখাতেন; কিন্তু তা পরম ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে।



মহানবি (সা.) তাঁর বাড়িতে স্ত্রী-কন্যাদের ও সেখানে নিয়মিত যাতায়াতকারী বহু শিশু-কিশোর ও যুবকদের, যেমন হজরত আলী (রা.), হজরত যায়েদ (রা.), হজরত হাসান (রা.), হজরত হোসাইন (রা.), হজরত উসামা (রা.), হজরত আনাস (রা.), হজরত আব্দুল্লাহ্ বিন উমর (রা.) এবং হজরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) প্রমুখদের অত্যন্ত স্নেহ, ভালোবাসা ও দোয়ার সঙ্গে এমন উন্নত শিক্ষা দিয়েছেন যে, তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আলোকবর্তিকায় পরিণত হয়েছেন। কিন্তু এ পুরো শিক্ষা-দীক্ষার সময় তিনি (সা.) কখনো কারও গায়ে হাত তোলেননি, কখনো রাগ করে বাড়িতে কাউকে বকাঝকা করেননি। বিশেষভাবে নারীদের সম্মান ও ইসলামের উন্নত শিক্ষা দিয়ে তিনি এমন পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন যে, কয়েক বছরের মধ্যেই আরব সমাজে নারীদের এমন সম্মান অর্জিত হয় যে, মহানবি (সা.)-এর সাহাবিরাও জটিল সমস্যার সমাধান করার জন্য সহধর্মিণীদের কাছ থেকে মতামত নিতেন। মহানবি (সা.)-এর অনিন্দ্য সুন্দর নৈতিক গুণ ও নৈতিক চরিত্রের এমনই প্রভাব ছিল যে, তাঁর সহধর্মিণীরা তাঁর বাড়ির সাদামাটা ও দারিদ্র্যপূর্ণ জীবনের মোকাবিলায় পার্থিব শোভা-সৌন্দর্য ও ধন-সম্পদের সব প্রলোভন বা প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।


এছাড়া মহানবি (সা.) শত্রু সৈন্যের লাশ বিকৃত করার প্রাচীন রীতিকে নিষিদ্ধ করেছেন এবং সেসব মৃতদেহের প্রতি যত্নশীল ও সম্মানজনক আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি (সা.) আরও শিখিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছলচাতুরীর আশ্রয় নেওয়ার অনুমতি নেই এবং নারী-শিশু, বৃদ্ধ ও অন্যান্য নিরীহ নাগরিকদের ওপর আক্রমণ করা যাবে না। একইভাবে পাদরি, ধর্মযাজক অথবা অন্য ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গের কোনো ধরনের ক্ষতি সাধন করা যাবে না বা তাদের ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতে কোনোরূপ বাধা প্রদান করা যাবে না। এছাড়া মহানবি (সা.)-এর নির্দেশনা হলো-মুসলমান সেনাদের যুদ্ধের সময় বেসামরিক জনগণকে ভীত ও শঙ্কিত করা বা তাদের মাঝে কোনো ধরনের আতঙ্ক ছড়ানো যাবে না, বরং সব নিরস্ত্র ও বেসামরিক জনগণের সঙ্গে দয়ার আচরণ করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অন্যায়-অবিচার করা যাবে না। এমন কোনো শহরে বা এলাকায় সৈন্য ঘাঁটি স্থাপন করা উচিত নয়, যেখানে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ ও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। তিনি এ শিক্ষাও দিয়েছেন যে, যুদ্ধের সময় বিপক্ষ দলের সৈন্যদের মুখে যেন আঘাত করা না হয়। কেউ যুদ্ধবন্দি হলে তাদের বন্দি আত্মীয়স্বজনকে তাদের থেকে পৃথক করা যাবে না। যুদ্ধবন্দিদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে; এমনকি তাদের স্বাচ্ছন্দ্য ও প্রয়োজনকে বন্দিকারীর নিজের ওপর প্রাধান্য দিতে হবে। যদি কোনো মুসলমান কোনো যুদ্ধবন্দির প্রতি কোনো ধরনের নিষ্ঠুরতা বা কঠোরতা প্রদর্শন করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়, তবে প্রায়শ্চিত্ত বা ক্ষতিপূরণ হিসাবে যুদ্ধবন্দিকে তৎক্ষণাৎ মুক্ত করে দিতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও