হাসিনা সরকারের পতন ও গণমুক্তির আকাঙ্ক্ষা

প্রথম আলো সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:৫০

গত ৫ আগস্ট যা ঘটেছে, সেটা হয়তো অনেকেই, হতে পারে কেউই, আশঙ্কা কিংবা আশা করতে পারেননি। তবে যে ধরনের ফ্যাসিবাদী নিষ্পেষণ দেশে কায়েম হয়েছিল এবং ক্রমাগত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হচ্ছিল, তার শেষ যে একভাবে না একভাবে ঘটবে, সেটা সুবিধাভোগী অল্প কিছু মানুষ ছাড়া বাদবাকিরা আশা করছিলেন। অসন্তোষ ও ক্ষোভ—দুটোই বাড়ছিল এবং সরকার ক্রমাগত জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছিল, সরকারি মুখপাত্ররা যেভাবে গলা উঁচিয়ে হুংকার দিচ্ছিলেন, তাতে বোঝা যাচ্ছিল, তাঁদের ভেতরটা খালি হয়ে এসেছে। মুখে যতই চিৎকার করে জানাচ্ছিলেন যে তাঁরা ভয় পাওয়ার পাত্র নন, দেশ ছেড়ে পালাবেন এমন কাপুরুষ নন, ততই টের পাওয়া যাচ্ছিল যে তাঁরা ভয় পেয়েছেন।


ঘটনাটা ঘটাল ছাত্ররা। এই তরুণেরাই অতীতে বড় বড় ঘটনা ঘটিয়েছে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের তারাই ছিল সংগঠক; এমনকি তার আগে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও তাদেরই দেখা গেছে সামনের সারিতে। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ছাত্ররা সামনে না থাকলে সম্ভব হতো না। মুক্তিযুদ্ধেও তরুণেরাই ছিল প্রধান। এরশাদবিরোধী আন্দোলনও তারাই শুরু করেছিল। শেখ হাসিনার পতনও তরুণদের শুরু করা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ঘটল।


কিন্তু আসলে ঘটেছেটা কী? সেটার বিবেচনা খুবই জরুরি। কেউ বলছেন আমরা দ্বিতীয়বার স্বাধীন হলাম। কারও কারও ধারণা, একটা বিপ্লবই ঘটে গেছে। বাস্তবে কিন্তু দুটির কোনোটাই ঘটেনি। যেটা ঘটেছে, তা হলো নৃশংস একটি সরকারের পতন। এ দেশে মানুষ অনেক রকমের সরকার দেখেছে; ব্রিটিশ সরকার আলাদা, সেটা ছিল বিদেশি, পাকিস্তানি শাসকেরাও বিদেশিই ছিল; কিন্তু পতিত সরকারটির মতো স্বদেশি সরকার আগে কেউ কখনো দেখেনি।



আমাদের দুর্ভাগ্য, কোনো সরকারই জনগণের পক্ষে ছিল না, সব সরকারই ছিল জনবিরোধী। শাসকেরা নানাভাবে শোষণ করেছে, যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। কিন্তু যে সরকারকে জনগণ এবার বিতাড়িত করল, সেই সরকারের মতো নিষ্ঠুর ও বধির সরকার আর দেখা যায়নি। এই সরকার কোনো আইনকানুন মানেনি, নিষ্পেষণের জন্য নতুন নতুন আইন ও বিধি জারি করেছে, গুম করেছে, হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানির একশেষ ঘটিয়েছে এবং কতটা যে নির্মম হতে পারে, তার প্রমাণ দিয়েছে পতনের আগের কয়েকটি দিনে।


ধারণা করা হচ্ছে, নিহত মানুষের সংখ্যা হাজারের কাছাকাছি। আর আহত মানুষের সংখ্যা তো বেশুমার। তালিকা পাওয়া গেছে নিহত ৬৫ শিশু-কিশোরের; তালিকার বাইরে কত শিশু শেষ হয়ে গেছে, কে জানে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদেরও অধিকাংশই তরুণ। ইহুদিবাদী ইসরায়েলিরা গাজাকে শৈশবশূন্য করেছে, হাসিনা সরকারও মনে হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে তারুণ্য মুছে ফেলবে। যা আগে কখনো ঘটেনি, তা হলো হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ। এবার সেটাও ঘটল। মানুষ মারার কোনো কায়দাই বাদ রইল না এবং পরিণতি দাঁড়াল চূড়ান্ত রকমের ফ্যাসিবাদী ওই সরকারের পতন।


সরকার পরিবর্তনটা শান্তিপূর্ণভাবেই ঘটতে পারত, যদি স্বাভাবিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হতো। কিন্তু সরকার তাতে সম্মত ছিল না। নির্বাচনের নামে একের পর এক প্রহসন ঘটিয়ে টিকে থাকার আয়োজন করেছে। ফলে পতন শেষ পর্যন্ত ঘটলই, তবে সহিংস উপায়ে। তাতে বহু মানুষ হতাহত হলেন, সম্পদ ও স্থাপনা নষ্ট হলো। পুলিশ আগেই জনবিচ্ছিন্ন ছিল, এবার তাদের যে ভূমিকায় নামানো হলো, তাতে তাদের ভাবমূর্তি দাঁড়াল জনশত্রুর।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও