জ্ঞান ও প্রশান্তির জন্য পর্যটন

www.ajkerpatrika.com অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০২৪, ১১:৩৫

নির্মল আনন্দ ও মানসিক প্রশান্তির জন্য আমরা ভ্রমণ করি। তার সঙ্গে যোগ হয় জ্ঞান বিকাশের অফুরন্ত উপকরণ।


একটা সময় ছিল অল্পসংখ্যক বাঙালি চাকরিবাকরির সুবাদে বাড়ি ছেড়ে দেশান্তরি হতেন। সেই প্রবণতা এখনো যে নেই তা নয়, তবে বিশ্বায়ন ও আন্তর্জাতিকতা আমাদের এগিয়ে দিয়েছে অনেক।


সম্প্রতি আন্তর্জাতিক এক সমীক্ষায় দেখা যায়, যাঁরা প্রায়ই ভ্রমণ করেন, তাঁরা ভ্রমণ না করা মানুষদের চেয়ে বেশি সুখী হন। যাঁরা নিয়মিত বাড়ি থেকে অন্তত ৭৫ মাইল দূরে ভ্রমণ করেন, তাঁরা প্রায় ৭ শতাংশ বেশি সুখী। গতানুগতিক জীবন থেকে একটু পরিবর্তন মানুষের জীবনকে যথেষ্ট উদ্দীপনা দেয় বলে ধারণা করা হয়। ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির হসপিটালিটি বিজনেস ম্যানেজমেন্টের একজন গবেষক দেখিয়েছেন, যাঁরা ভ্রমণ নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন এবং ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করেন, তাঁরা অন্যদের চেয়ে সুখী। এই গবেষক ৫০০ জনের ওপর এক সমীক্ষায় দেখিয়েছেন, অর্ধেকের বেশি মানুষ চারটির বেশি ভ্রমণপরিকল্পনা করেছিলেন বলে জানা যায়।



সারা বিশ্বে পর্যটনের গতি-প্রকৃতি পাল্টে যাচ্ছে। গতানুগতিক পর্যটনব্যবস্থা পরিবর্তিত হয়ে স্থানীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য, খাবারদাবার এবং জনগণের চালচলনে নতুনত্ব যোগ হচ্ছে। পর্যটনের স্থানগুলোর স্থানীয় সংস্কৃতি যথেষ্ট আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে পর্যটকদের মধ্যে। স্থানীয় সংস্কৃতি জানা এবং উপলব্ধি করার কৌতূহল পর্যটকদের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে ভ্রমণ আয়োজনকারী সংস্থাগুলো নতুনভাবে পর্যটকদের চাহিদা পূরণে সচেষ্ট হচ্ছে। 


বিশ্বে পর্যটনের বিকাশ বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ভিয়েতনামে এ বছর এক গবেষণায় দেখা যায় যে পর্যটন খাতে তাদের আয় ২০১৯ সালের তুলনায় ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যা নাকি দেশটির সামগ্রিক অর্থনীতির ৭ শতাংশের বেশি। তারা আরও বলছে, দেশটিতে ভ্রমণ ও পর্যটনসংক্রান্ত চাকরি বৃদ্ধি পাবে ৬ শতাংশ।


যথেষ্ট আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্রিক দেশ থাইল্যান্ড এবার পর্যটকের চাপে বিপাকে পড়েছে। সংখ্যাতিরিক্ত পর্যটকের চাপে থাইল্যান্ড নানা  পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে। বিশ্বের উল্লেখযোগ্য আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র ব্যাংকক, পাতায়া, ফুকেতে দেখেছি পর্যটকের ভিড়! কিছু কিছু জায়গায় চলচ্চিত্রের শুটিং হওয়ায় সেই সব পর্যটনকেন্দ্রে অনেক বেশি মানুষের আনাগোনা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 



এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পর্যটক আকর্ষণের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে চীন, থাইল্যান্ড, জাপান, মালয়েশিয়া, হংকং, ম্যাকাও, ভিয়েতনাম, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া। প্রায় সাড়ে ছয় কোটি পর্যটক প্রতিবছর চীন ভ্রমণ করেন। থাইল্যান্ডে প্রায় চার কোটি এবং জাপানে তিন কোটির বেশি পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন। হংকং, ম্যাকাও এবং ভিয়েতনাম—এই তিন দেশের প্রতিটিতে প্রায় দুই কোটি পর্যটক বেড়াতে আসেন প্রতিবছর। ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায়ও প্রতিবছর বেড়াতে আসেন দেড় কোটির বেশি পর্যটক। 


ভারতের অনেক স্থান রয়েছে পর্যটকদের অন্যতম স্পট হিসেবে। ভারতের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কাশ্মীর, শিমলা, নৈনিতাল, আগ্রা, মথুরা এবং এসব স্থানসংলগ্ন বেশ কিছু পর্যটক  আকর্ষণ স্থান; যেমন কাশ্মীরের জম্মু, শ্রীনগর আমাদের দেশের পর্যটকদের কাছে যেমনি প্রিয়, তেমনি কাশ্মীরের মানসবল লেক, গুলমার্গ, শোনামার্গ, চশমাশাহি, মোগল গার্ডেন, শালিমার গার্ডেন, ডাল লেক রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের পছন্দের জায়গা। বলা হয়ে থাকে ভূস্বর্গ কাশ্মীর! কাশ্মীর আমার স্বপ্নের। কাশ্মীর প্রথম দেখেছিলাম ১৯৭৫ সালে। পরে আরও কয়েকবার গিয়েছি, দেখেও বারবার দেখার আগ্রহ জাগে। আগ্রা, জয়পুর, উদয়পুরের মতো বহুল আলোচিত স্থানগুলোর আকর্ষণ যেকোনো সাধারণ পর্যটকের কাছে রয়েছে। দিল্লি, আগ্রা, জয়পুর, উদয়পুর—এসব স্থানে মোগল এবং রাজপুতদের ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থাপনায় পর্যটকদের ভিড় লক্ষ করেছি কম-বেশি সব ঋতুতে। দক্ষিণ ভারতের মহীশূর, বেঙ্গালুরু; কেরালার কোচিন, কইএম্বাতুর এবং তামিলনাড়ুর চেন্নাই (পুরোনো নাম মাদ্রাজ), উটকামন্ডু (পুরোনো নাম উটি) উল্লেখ করার মতো আকর্ষণীয় স্পট। মহীশূরে শ্রীরঙ্গপাটনা, শ্রাবণভেলেগুলার সুউচ্চ চন্দ্রগিরি পাহাড়ের চূড়ায় প্রায় ৭০০ সিঁড়ি বেয়ে উঠে দেখেছি গোমেটেশ্বরা জৈন মূর্তি, ৫৭ ফুট দৈর্ঘ্য, যা নাকি একটি পাথরখণ্ড থেকে তৈরি করা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ যায় অর্ঘ্য দিতে কিংবা দেখতে।


পর্যটকদের কাছে ভারতের পূর্বাঞ্চলে দেখার মতো স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম দার্জিলিং। টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয় দেখার জন্য শীতের মধ্যে শেষ রাত থেকে পর্যটকেরা প্রস্তুতি নিয়ে জিপে করে হাজির হন সেখানে। তবে সবার ভাগ্যে সেই সূর্যোদয় দেখা হয়ে ওঠে না, প্রায়ই মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকে সূর্যি মামা। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও