রুগ্ণ অর্থনীতিতে আরেক ধাক্কা
দেশব্যাপী কারফিউ, টানা তিন সাধারণ ছুটি, বন্ধ ইন্টারনেট—এই তিনে মিলিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বড় ক্ষত তৈরি করেছে। ক্ষতির পরিমাণ কোথায় গিয়ে ঠেকবে, তা এখনো নিরূপণ হয়নি। তবে প্রতিটি খাত থেকে যে তথ্য সংশ্লিষ্টরা দিচ্ছেন, তা আঁতকে ওঠার মতো। হাজারো খাতের মধ্যে শুধু রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক, বিমান পরিবহন, স্টিল, সিরামিক, সিমেন্ট ও ই-কমার্স খাতেই গত ছয় দিনে প্রায় ১৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ সময়ে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় সহিংসতা। এ অবস্থায় সেদিন রাতেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। এতে ইন্টারনেটনির্ভর সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডই বন্ধ হয়ে যায়। সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হলে গত শুক্রবার রাত থেকে দেশব্যাপী কারফিউ জারি করে সরকার।
মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে টানা তিন দিন সাধারণ ছুটির কবলে পড়ে দেশ। বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের কলকারখানা ও যানবাহন চলাচল। এসবের আর্থিক ক্ষত এখন স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অর্থনীতি এখন মারাত্মক ক্ষতির মুখে। আমি দুদিন আগেও বলেছি, অর্থনীতিকে টেকাতে হলে যেকোনো মূল্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। এখন আমরা অফলাইনে বা ম্যানুয়ালি হলেও চেষ্টা করছি, যাতে পণ্য খালাসসহ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমটা চালিয়ে নেওয়া যায়। এর মধ্যে যদি ব্রডব্যান্ডটা চালু হয়, তাহলে অন্তত কিছু কাজ ব্যাংক-টু-ব্যাংকে হবে। এতেও অর্থনীতিটা কিছু সচল হবে। এ ব্যাপারে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্প এখন প্রায় বন্ধ। কারখানাগুলো ছুটি দেওয়া হয়েছে। পণ্যবাহী কনটেইনার বন্দরে পড়ে রয়েছে। পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এরই মধ্যে জানিয়েছে, তাদের প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এতে গত ছয় দিনে এ খাতের ক্ষতির অঙ্ক প্রায় ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।