You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ফরাসি বিপ্লব এবং এর প্রাসঙ্গিকতা

ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯-১৭৯৯) কোনো হঠাৎ আলোর ঝলকানি ছিল না, এটা ছিল একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ১০ বছর ঘটমান এ ঘটনাটি ছিল পশ্চিমা সভ্যতার বিবর্তনে একটি মাইলফলক। সেই মাইলফলকের তিনটি মাত্রিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এক. এই বিপ্লবের সময়ে ফ্রান্সে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটে এবং সেখানে স্থান করে নেয় প্রজাতান্ত্রিক আদর্শ। দুই. এর মাধ্যমে অভিজাততন্ত্র শেষ হয়ে নাগরিকতন্ত্রের উদ্ভব হয় এবং তিন. ধর্মতন্ত্র তার সব গোঁড়ামি পরিহার করে নিজেকে পুনর্গঠন করতে বাধ্য হয়।

ফরাসি বিপ্লবের ক্ষেত্রে বিপ্লবপূর্ব সময়ের অনেক ঘটনা ও কারণ চিহ্নিত করা যায়। সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের বৃদ্ধি; শিক্ষিত সমাজ-উদ্ভূত নতুন রাজনৈতিক ধারণা, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রণহীন জাতীয় ঋণ, রাজা ষষ্ঠদশ লুইয়ের রাজনৈতিক অব্যবস্থাপনা সবকিছুকেই বিপ্লবের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট কিছু অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক কারণ বিপ্লবের নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে।

অর্থনৈতিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে: নিম্নমানের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং অনিয়ন্ত্রিত ঋণ। এর পেছনে ছিল অসম করারোপ—যার মূলে ছিল সম্রাট লুইয়ের অত্যধিক ব্যয় এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর বিভিন্ন যুদ্ধ। আসলে রাজপরিবারের অতিরিক্ত খরচে রাজকোষ শূন্য হয়ে যায়। সেই সঙ্গে বিপ্লবের ঠিক আগের মাসগুলোয় বিরাজমান খাদ্যসংকট, খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্য এবং বেকারত্বের উচ্চহারও বিপ্লবের অন্যতম অর্থনৈতিক কারণ ছিল।

অন্যদিকে বিপ্লবের পেছনে বেশ কিছু সামাজিক এবং রাজনৈতিক কারণও ছিল। নতুন চিন্তা-চেতনা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজ এই কারণগুলোকে কেন্দ্র করেই তাদের আন্দোলন শুরু করে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল কৃষকশ্রেণি এবং পেশাজীবী গোষ্ঠী। এ গতিময়তার কারণে বিপ্লবের পক্ষে গ্রাম এবং নগরের মধ্যে একটি আঁতাত গড়ে ওঠে।

ফরাসি বিপ্লবের সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে: ফ্রান্সে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা—যা দেশের জন্য ক্ষতিকর ছিল না, উচ্চশ্রেণি এবং বিশেষ বিশেষ পেশাদার শ্রেণিকে ব্যাপক সুবিধা দেওয়া, যা সমাজের মধ্যে বিস্তৃত অসাম্যের জন্ম দিয়েছিল। ফলে কৃষক, পেশাজীবী শ্রেণি এবং বুর্জোয়াদের কিয়দংশ জমিদারতন্ত্র উচ্ছেদের পক্ষে আন্দোলন শুরু করে। সেই সঙ্গে যাজকশ্রেণির চরম ভোগ-বিলাসের কারণে ধর্মের বিরুদ্ধে একটি শক্তির উদ্ভব হয় এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে একটি নব জোয়ারের সৃষ্টি হয়।

ব্যাপকভাবে নারী নির্যাতনের ফলে নারীরাও এই আন্দোলনের পক্ষে মোর্চা বাঁধে। স্বাধীনতা ও প্রজাতান্ত্রিক আদর্শ ফরাসি বিপ্লবকে অনুপ্রাণিত করেছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই সব সমস্যা অনুধাবন করা এবং এগুলোর সমাধানে সম্রাট ষোড়শ লুই চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দেন।

ফরাসি বিপ্লবকে পশ্চিমা গণতান্ত্রিক ইতিহাসের একটি জটিল সন্ধিক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সত্যিকার অর্থে এই বিপ্লবের মাধ্যমে পশ্চিমা সভ্যতা নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র ও অভিজাততন্ত্র থেকে প্রজাতন্ত্রে উত্তীর্ণ হয়। বৃহত্তর অর্থে ফরাসি বিপ্লব মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

ফরাসি বিপ্লবের মূলনীতি ছিল: ‘Liberté, égalité, fraternité, ou la mort!’ অর্থাৎ ‘স্বাধীনতা, সাম্য এবং মৈত্রী, অথবা মৃত্যু।’ এই স্লোগান ফরাসি বিপ্লবের চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিল। এ তিনটি কথার তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর। প্রথমত, এই বিপ্লব ফ্রান্স নামের রাষ্ট্র, তার সমাজ এবং সে দেশ ও তার জনগণের মূল্যবোধকে স্থায়ীভাবে পাল্টে দেয়। ফলে এক নতুন ফ্রান্সের উদ্ভব হয়। আমাদের আশার জায়গাটা হচ্ছে, ফ্রান্স সেই মূল্যবোধ থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে না। তাই সাম্প্রতিক ফরাসি নির্বাচনে ফরাসি জনগণ সব আশঙ্কাকে মিথ্যে প্রমাণিত করে চরমপন্থীদের পক্ষে রায় দেয়নি, তাদের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

দ্বিতীয়ত, এই বিপ্লবের মূলমন্ত্রের পথ ধরেই পশ্চিমা বিশ্বে একটি সুদৃঢ় গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে ওঠে এবং গণতন্ত্র একটি সুদৃঢ় ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। তৃতীয়ত, এ কথা তিনটি পরবর্তী সময়ের উন্নয়নশীল বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন, মানবাধিকার সংগ্রাম ও স্বাধীনতার সংগ্রামকে প্রভাবিত এবং উজ্জীবিত করেছে। মানুষের সব ধরনের মুক্তির প্রচেষ্টায় এ তিনটি কথা একটি চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে এই প্রক্রিয়ায় একটি গতিময়তার সৃষ্টি করেছে।

আজকের চলমান বিশ্বে মানুষ নানা মাত্রিকতায় স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত। দারিদ্র্য, ক্ষুধা, অপুষ্টি, কর্মহীনতার কারণে আজও বিশ্বের বিরাটসংখ্যক মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারে না। আজকের পৃথিবী একটি অসম বিশ্ব সর্ব অর্থেই। অসমতা রয়েছে সুযোগে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে ফলাফলেও।

অসাম্য রয়েছে আর্থসামাজিক স্তরে, গাত্রবর্ণের কারণে, জাতীয়তার মাত্রিকতায়, নারী-পুরুষের মাঝে, গোত্রে-গোত্রে, গোষ্ঠীতে-গোষ্ঠীতে। আমাদের বর্তমান সময়ে অসাম্য নয়, সাম্যই একটি বড় ব্যতিক্রম। মৈত্রীর বদলে আজকের বিশ্বে রয়েছে বিভাজন, হানাহানি, সংঘর্ষ, সন্ত্রাস এবং সহিংসতা। আজকের পৃথিবী তাই বড় অস্থিতিশীল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন