জনসংখ্যা আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?

জাগো নিউজ ২৪ ড. মো. হাসিনুর রহমান খান প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০২৪, ১২:৩০

ঠিক ১০০ বছর আগের সাথে তুলনা করলে, বিশ্বের জনসংখ্যা বর্তমানে এক অভূতপূর্ব স্তরে পৌঁছেছে, ২০০ কোটি থেকে বর্তমানে ৮০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে| এটি একটি বিস্তৃত বিতর্ককে উস্কে দিয়েছে যে এই বৃদ্ধিটি আশীর্বাদ না অভিশাপ। কেউ কেউ যুক্তি দেন যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনী বৃদ্ধি পায়|


অন্যরা আবার বলেন এটি সম্পদের উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে এবং পরিবেশগত অবক্ষয় বাড়িয়ে তোলে। এটি আসলে একটি জটিল সমস্যা যার বহুমুখী প্রভাব রয়েছে, যেটা বিভিন্ন দেশ এবং অঞ্চলের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। একটি ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা অর্থনৈতিক উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে যেমন পরিচালিত করতে পারে, ঠিক তেমনই এটি বৈচিত্র্যময়ী নানা চ্যালেঞ্জও সৃষ্টি করতে পারে।


জনসংখ্যা বৃদ্ধির পক্ষে সবচেয়ে অন্যতম যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো এর অর্থনৈতিক উন্নয়ন চালানোর সম্ভাবনা। বৃহত্তর জনসংখ্যা মানে বৃহত্তর কর্মশক্তি, যা অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতাকে গতিশীল করতে পারে। ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে, উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যা বৃদ্ধির দেশগুলো প্রায়শই দ্রুত অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ করতে সমর্থ হয়।


বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে, চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়া যেমন পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতি তাদের বৃহৎ জনসংখ্যা কাজে লাগিয়ে অসাধারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছে। বিশেষ করে চীন একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ১৪৪ কোটিরও বেশি জনসংখ্যা নিয়ে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠেছে এবং প্রথম অর্থনীতির দেশ হতে চলেছে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড—একটি সময়কাল যখন কর্মক্ষম জনসংখ্যা অ-কর্মক্ষম জনসংখ্যার তুলনায় বেশ বড় হয়| এবং এই রূপান্তরটি এসব উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি বিশাল শ্রমশক্তি, কৌশলগত অর্থনৈতিক সংস্কারের সাথে একত্রিত হয়ে চীনকে একটি বৈশ্বিক বৃহৎ উৎপাদন কেন্দ্র হতে সাহায্য করেছে| কোটি কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছে।


একইভাবে ভারতের জনসংখ্যা ১৪২ কোটিরও বেশি, যা কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হয়ে উঠবে। ভারতের যুব এবং ক্রমবর্ধমান কর্মশক্তি এর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি মূল চালিকাশক্তি, যা এটিকে বৈশ্বিক অর্থনীতির দৌড়ে একজন অন্যতম খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হতে সহায়তা করছে। বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতটি বিকাশ লাভ করেছে| ভারত আইটি পরিষেবাগুলোর একটি প্রধান রপ্তানিকারক হয়ে উঠেছে।


জনসংখ্যা বৃদ্ধি উদ্ভাবন এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যও উদ্দীপ্ত করে। বৃহত্তর জনসংখ্যা অনেকগুলো দৃষ্টিভঙ্গি, ধারণা এবং প্রতিভাকে একত্রিত করে, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবন চালায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ৩৩৩ মিলিয়নেরও বেশি জনসংখ্যাসহ, এটি বিশ্বজুড়ে প্রতিভাধারীদের টানছে| ফলে প্রযুক্তি, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতিতে একটি বৈশ্বিক নেতা হয়ে উঠেছে। সিলিকন ভ্যালি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের কেন্দ্রস্থল, একটি বৈচিত্র্যময় এবং গতিশীল জনসংখ্যার অবদানের ওপর নির্ভর করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।


সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সমাজকে সমৃদ্ধ করে, সহনশীলতা এবং বোঝাপড়ার পরিবেশ তৈরি করে। নিউ ইয়র্ক, লন্ডন এবং টরেন্টো শহরগুলোতে বহুজাতিক সংস্কৃতি চর্চা হয়| যেখানে পাশাপাশি খাবার এবং ঐতিহ্যের মিশ্রণ ঘটে। এই সাংস্কৃতিক মোজাইক শুধু জীবনযাত্রার মানকেই বাড়ায় না, তবে স্থানীয় অর্থনীতিতেও পর্যটকদের আকর্ষণ করে। তবে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির উল্টো দিকটি উপেক্ষা করা যাবে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও