You have reached your daily news limit

Please log in to continue


অপচয় বন্ধ করুন মানুষ বাঁচান

হাসপাতাল যাওয়ার পথে ভাঙা একটি সেতুর ওপর এক প্রসূতি সন্তান প্রসব করেছেন গত ৬ জুলাই। কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় বোয়ালমারী বেড়িবাঁধের রৌমারী-খাটিয়ামারী সড়কে বাঁশ ও কাঠের তৈরি একটি ভাঙা সেতুর ওপর সন্তান জন্ম দেন ওই মা। বিলকিসের বাবার বাড়ি থেকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ব্যাটরিচালিত ভ্যানে করে। কিন্তু ভাঙা সেতুর কাছে পৌঁছালে সেখানে ভ্যান পারাপারের আর কোন উপায় ছিল না।

হেঁটে পার হওয়াই ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। বাধ্য হয়ে বিলকিসকে নিয়ে হেঁটে সেতু পার হওয়ার চেষ্টা করছিল সবাই। কিন্তু সেতুর মাঝামাঝি এসে পৌঁছালে প্রসববেদনায় আরও অসুস্থ হয়ে শুয়ে পড়ে সে। সেতুর ওপরেই মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। অথচ ঠিক এর একদিন আগে অর্থাৎ ৫ জুলাই বিকেলে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপলক্ষ্যে ছিল পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের সব কাজ শেষ হয়েছে।

এটা বাংলাদেশের খুব স্বাভাবিক চিত্র। কোনটা অপ্রয়োজনীয় খাত, কোনটা প্রয়োজনীয়, কোনটা অতি জরুরি খাত এটা এখানে বিচার্য বিষয় নয়। বিচার্য হচ্ছে কে ক্ষমতাশালী, কার হাতে টাকা খরচের চাবিকাঠি, কে কিভাবে বা কোন খাতে টাকা ব্যয় করতে চাইছেন?

আমরা দেখেছি অনেক এলাকায় মানুষের চলাচলের জন্য খুব প্রয়োজনীয় সেতু, রাস্তাঘাট নির্মিত না হলেও দলীয় কর্মীদের বসার জন্য পাকা ঘর, বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে অসংখ্য ব্যানার, পোষ্টার, ফেস্টুন, স্ট্যাচু, আলোকসজ্জা হয়েই যাচ্ছে। পদ্মা সেতুর অবদান আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনস্বীকার্য। শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজধানীসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে এমন যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করেছে, যা কল্পনাতীত ব্যাপার। আলো ঝলমলে একটা অবদান এই পদ্মাসেতু। কিন্তু সেই সেতুর সব কাজ শেষ হওয়া উপলক্ষে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে উৎসব আয়োজন করতে হবে কেন?

এই ৫ কোটি টাকা কার? জনগণের নাকি ঋণের? এই ঋণ শোধ করবে কে? কর্তৃপক্ষ কি একবারও ভেবে দেখেছেন যে এই ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটা উৎসব না করে, জনকল্যাণে আর কিছু করা যেতো কিনা? ভাবেননি, তারা ভাবেনও না। আর ভাবেন না বলে কখনো অগ্রাধিকার বা প্রায়োরিটি নির্ধারণ করা হয় না। শুধু হই হই, রই রই করে টাকার অপচয়। বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প যতো বেশি অনুমোদন দেয়া হয় ও কাজ করানো হয়, ছোট ছোট অবকাঠামোগত উন্নয়ন তেমনি কম পরিমাণে গ্রহণ করা হয়। কারণ যতো ব্যয়, ততো আয়।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা কিভাবে চলছে, এর খবর আমরা বিভিন্নমাধ্যমে নিয়মিত পাচ্ছি। বিলকিসের মতো প্রসূতি মায়ের ভাঙা ব্রিজের উপর বাচ্চা হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধু হেলেনা খাতুন এমন একটি পরিবেশে বাস করতেন, যেখানে ৯ মাসের গর্ভবতী হেলেনার রক্তক্ষরণ শুরু হলে, অন্য কোনো উপায় না পেয়ে তাকে জলচৌকিতে করে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিল। কিন্তু কপাল ছিল মন্দ। পথের কিছুটা গিয়ে আবার ফিরে এলেন লাশ হয়ে, ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি ঘটেছিল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি ঘাটে।

এ অবস্থায় অসুস্থ মানুষ ও শিশুদের জন্য চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি মেরামত ও স্থায়ীভাবে নির্মাণের দাবি জানালেও তা আমলে নেননি কেউ। এইসব ঘটনার কথা শুনলে মনে হয় স্থানীয় প্রশাসন দেখেশুনে কান বন্ধ করে থাকেন। গরীব জনগণের কথা আমলে নিতে চান না। উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ নগদ কিছু ছাড়া নিজ উদ্যোগে কিছু করতে চান না।

জেলা উপজেলা পর্যায়ে রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কোথাও নেয়ার কথা সাধারণ মানুষ ভাবতেই পারেন না। কারণ সেখানেও সিন্ডিকেট। হাসপাতাল বা উপজেলার সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সগুলো এত বেশি ভাড়া হাঁকে যে, রোগীরা বাধ্য হন ভ্যানগাড়িতে করে মূমূর্ষ রোগীকে পরিবহন করতে। খবরে দেখলাম, অতিরিক্ত ভাড়া দিতে পারবেন না বলে একজন বাবা তার অসুস্থ মেয়েকে ১১০ কিলোমিটার পথ ব্যাটারিচালিত রিকশা চালিয়ে ঠাকুরগাঁ থেকে রংপুরে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।

সাত মাসের ছোট মেয়েটি রক্ত আমাশয়ে ভুগছিলো। ঠাকুরগাঁও হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। প্রশ্ন জাগে কেন একজন রক্ত আমাশয়ের শিশু রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার মতো যন্ত্রপাতি বা চিকিৎসক ঠাকুরগাঁও এর মতো পুরোনো জেলা সদর হাসপাতালে নেই? কেন বাবাকে রিকশা চালিয়ে মেয়েকে রংপুর হাসপাতালে নিয়ে আসতে হলো?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন