বিএনপিতে মধ্যরাতের ঝড় কী ইঙ্গিত দেয়?

প্রথম আলো সোহরাব হাসান প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২৪, ১৫:০২

বিএনপির কোনো কোনো নেতা যখন আওয়ামী লীগ সরকার তিন মাসও টিকবে না বলে ভবিষ্যদ্বাণী করছেন, তখনই দলের ভেতরে মধ্যরাতের ঝড় কী ইঙ্গিত দেয়? এটা কি বিএনপির পুনর্গঠনপ্রক্রিয়ার নামে ঘুরে দাঁড়ানো, না অন্য কিছু? বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি নিয়ে বিএনপিতে কোন্দল–হানাহানি শুরু থেকেই ছিল। খালেদা জিয়া যত দিন সক্রিয় ও জেলের বাইরে ছিলেন, তখন প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতেন না। সবাই তাঁর সিদ্ধান্ত মানতেন। কিন্তু যেদিন থেকে দলে ‘দ্বৈতশাসন’ শুরু হলো, সেদিন থেকে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অস্বস্তি বাড়তে থাকল।


বিএনপির নেতাদের কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণেই বিএনপি নেতৃত্বের বিভিন্ন পর্যায়ে এই রদবদল আনা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠবে, আন্দোলন ব্যর্থ হলে সেই দায় সর্বোচ্চ নেতৃত্বের ওপরই পড়ে। যেমন আন্দোলন সফল হলে তাঁর কৃতিত্বও তাঁরা নিতেন।


সমস্যা হলো, নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্ব আন্দোলন পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো বিকল্প রাখেননি। তাঁরা এক দফাকে সামনে রেখে আন্দোলন করেছেন—নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই এক দফার আন্দোলন করে শেখ হাসিনা দুবার জয়ী হয়েছেন। বিএনপি নেতারা ভেবেছেন, শেখ হাসিনা পারলে আমরা পারব না কেন? কিন্তু আওয়ামী লীগ যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক দলকে একত্র করতে পেরেছিল, বিএনপি সেটা পারেনি। সেই সময়ে প্রশাসন অনেকটা নিরপেক্ষ ছিল। এবারে তাদের পক্ষপাত স্পষ্ট।


একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবি নিয়ে বিএনপি যে আন্দোলন করেছে, তার প্রতি জনগণের সমর্থন ছিল, এখনো আছে। কিন্তু তারা সেই দাবি পূরণ করতে রাস্তায় নামেনি। দ্বিতীয়ত, সরকার দাবি না মানলে বিএনপি কী করবে, সেটা তারা জনগণের কাছে পরিষ্কার করতে পারেনি। বিএনপি নেতাদের একাংশ ভেবেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র এসে নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন করে দিয়ে যাবে। মার্কিন কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদের কথাবার্তা তাঁদের অতিমাত্রায় আশাবাদী করে থাকতে পারে।


নির্বাচনের আগে বিএনপির যেসব নেতার সঙ্গে আলাপ হয়েছে, তাঁরা বলেছেন, সরকার বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে পারবে না। তার আগেই সরকারের পতন হয়ে যাবে। কিন্তু গত বছর ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে এ রকম একটি অঘটন ঘটতে পারে, তা হয় বিএনপির নেতারা অনুধাবন করতে পারেননি অথবা অনুধাবন করলেও পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিএনপির প্ল্যান ‘এ’ যখন ব্যর্থ হলো, দলটির নেতৃত্ব দেশবাসী দূরে থাক, নিজ দলের কর্মী-সমর্থকদেরও কোনো নির্দেশনা দিতে পারলেন না। বিএনপির বিরোধিতা সত্ত্বেও সরকার একতরফা নির্বাচন করে ফেলল। আর বিএনপি নেতৃত্ব নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়ে দায়িত্ব শেষ করল।


নেতৃত্বের কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা কেবল নেতা-কর্মীদের বিচলিত করেনি, আন্দোলনের সহযাত্রী গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২–দলীয় জোট ইত্যাদিকেও হতাশ করেছে। গণতন্ত্র মঞ্চের একাধিক নেতা বলেছেন, নির্বাচনের পর বিএনপির নেতাদের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জেল থেকে বেরিয়ে যখন সমমনাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন, তত দিনে মেঘনা-পদ্মা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। বিএনপির নেতারা যে বিদেশি শক্তির সহায়তায় রাজনীতির গতিপথ বদলের চিন্তা করেছিলেন, তারা এসে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে নতুন হিসাব–নিকাশে বসল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও