নির্বাচনবিমুখ ভোটার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রাথমিক পাঠ

সমকাল মাহবুব আজীজ প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২৪, ১১:৩৩

চার পর্বে অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হলো বুধবার। দেশের এক-তৃতীয়াংশ উপজেলা ছিল এই পর্বের অন্তর্ভুক্ত। সামগ্রিক পরিস্থিতি ও ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবারের নির্বাচনে ভোটারের অনীহা ও অনাগ্রহ সুস্পষ্ট।


আসলে সর্বশেষ তিনটি উপজেলা নির্বাচনেই ভোটের হার ধারাবাহিকভাবে কমেছে। ২০১৪ সালে ভোটের হার ছিল ৬১ শতাংশ; ২০২৪ সালে তা ৩৬.১০ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রথম ধাপের ১৩৯টি উপজেলা নির্বাচনে ৮১টিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের ২০ ভাগেরও কম ভোট পেয়ে। সমকাল প্রধান শিরোনামে যথার্থই জানিয়েছে– ‘উপজেলা নির্বাচনে কম ভোটের রেকর্ড’।


ক্ষমতা কাঠামোয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার অংশ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা। বিধি অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা পরিচয় ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তে তৃণমূলের নেতাকর্মী এবার সেই সুযোগ পাননি। প্রধান বিরোধী পক্ষ বিএনপির ধারাবাহিক নির্বাচন বয়কটের পরিণতিতেই আওয়ামী লীগকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়।


এবার নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলতে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশও দেওয়া হয় নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে। তবে নির্বাচনে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে যত কৃত্রিম উপায় অবলম্বন করা হোক না কেন, তা ভোটারকে আগ্রহী করে না। গেল তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় এবারের উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপও প্রমাণ করে দিল– ক্ষমতাসীন দল নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ নেই, থাকে না। দেশজুড়ে তৃণমূলে নির্বাচন– গ্রামের হাটেবাজারে, চায়ের দোকানে দোকানে প্রার্থীর পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে তর্কের তুফান ছোটার কথা ছিল।
না, এসবের কিছুই দেখা যায়নি উপজেলা নির্বাচন ঘিরে; ভোটের দিনও ভোটার খরায় ভুগেছে ভোটকেন্দ্রগুলো।


জানা কথা, যে খেলার ফল আগে থেকে জানা, তাতে দর্শকের উত্তেজনা-আগ্রহ থাকে না। এই তর্কও আছে যে, বিএনপি নির্বাচনে না এলে আওয়ামী লীগের কী করবার আছে? বিএনপি-ই তো ‘ওপেন নেট’ বা খালি মাঠ ছেড়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগকে। বাস্তবে মামলা-হামলায় বিপর্যস্ত বিএনপি; স্থানীয় পর্যায়ে তাদের নেতাকর্মীর ওপর হামলা-মামলা রাজধানী বা শহর অঞ্চলের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি। ঘরবাড়িছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীর কাছে অবাধ নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি তাই সোনার পাথর বাটি হয়েই আছে।


অনেকে ধারণা করেছিলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ‘যে কোনোভাবে’ হয়ে যাওয়ায় উপজেলাসহ অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মীর ঐক্য অটুট রাখা যাবে না। ১৫ বছর ধরে নির্বাচন, অর্থাৎ ক্ষমতার বাইরে থেকে হতাশ বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী নির্বাচনে যুক্ত হবেন। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। একশ বিশজনের মতো নেতা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হন। বিএনপি তাদের বহিষ্কার করে উপজেলা নির্বাচনকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে। অবশ্য একের পর এক নির্বাচন বয়কট করার পরবর্তী ধাপ বা করণীয় সম্পর্কে বিএনপি নেতৃবৃন্দ কোনো ধারণা দেশবাসীকে এখনও দিতে পারেননি।


২.
এবার এই ‘একতরফা’ উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগ স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা। প্রার্থীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, ২০১৮ সালের উপজেলা নির্বাচনে কোটিপতি প্রার্থী ছিলেন ৩৭ জন; এবার ৯৪ জন। অনেকেরই আয় ও সম্পদ অবিশ্বাস্য হারে ও গতিতে বেড়েছে। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের শতকরা ৭০ জনই ব্যবসায়ী। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের মধ্যে ১৭ জন কোটিপতি। মোট কোটিপতি প্রার্থী ১১৭ জন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়েও উপজেলা নির্বাচনে ব্যবসায়ী প্রার্থীর সংখ্যা এবার বেশি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও